Web bengali.cri.cn   
নারীদের 'আত্মরক্ষা স্প্রে'-এর ওপর থেকে ভ্যাট তুলে নিল নয়া দিল্লির প্রাদেশিক সরকার
  2013-04-05 15:17:31  cri

সাম্প্রতিক কালে ভারতে, বিশেষ করে রাজধানী নয়া দিল্লিতে, যৌন অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, নারীরা অধিক হারে 'আত্মরক্ষা স্প্রে' কেনা শুরু করেন। উল্লেখ্য, 'আত্মরক্ষা স্প্রে'-কে 'মরিচ স্প্রে'-ও বলা যেতে পারে। কোনো নারী যৌন-আক্রমণের শিকার হলে, আক্রমণকারীর চোখে-মুখে এই স্প্রে ছড়িয়ে দিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারেন তিনি। কিন্তু দামের কারণে এতোদিন অনেক নারী এই স্প্রে কিনতে পারতেন না। আর তাই, নয়া দিল্লির প্রাদেশিক সরকার এ-ধরণের স্প্রের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এর আগে, এ-ধরণের স্প্রের ওপর ১২.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হতো। সম্প্রতি নয়া দিল্লির প্রাদেশিক বাজেট ঘোষণার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের নারীদের রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।

প্রশ্ন হচ্ছে: ভ্যাট কমিয়ে দেয়ার পর 'আত্মরক্ষা স্প্রে'-এর ব্যবহার কি আশানুরূপ বাড়বে? সমস্যা হচ্ছে, দাম কমলেও, এই বিশেষ পণ্যটির ব্যবহার এখনো যথেষ্ট জনপ্রিয় করে তোলা যায়নি। অধিকাংশ নারীই এখনো এর ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। তথ্যমাধ্যমে এ-ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে নারীদের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হলেও, খোদ নয়া দিল্লিতেও সব দোকানে এ-বস্তু পাওয়া যায় না। আবার কিছু দোকানদার সরকারি লাইসেন্স নিয়ে এ-ধরণের স্প্রে বিক্রি করলেও, সবসময় সেসব দোকানেও তা পাওয়া যায় না। এদিকে, ভ্যাট প্রত্যাহারের উদ্যোগটি নিতান্তই নয়া দিল্লির প্রাদেশিক সরকারের সিদ্ধান্ত। এ-সিদ্ধান্ত গোটা ভারতের জন্য প্রযোজ্য নয়। আবার, আসন্ন প্রাদেশিক নির্বাচনে নয়া দিল্লিতে যদি ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পরাজিত হয়, তবে ভ্যাট প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে কি না তা বলা মুশকিল।

অবশ্য, নারী অধিকার সংরক্ষণ এবং যৌন অপরাধ দমনের লক্ষ্যে নেয়া নয়া দিল্লি প্রাদেশিক সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ভারতীয় জনতা একে স্বাগতও জানিয়েছে। নারীদের 'আত্মরক্ষা স্প্রে'-এর পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের করও সাম্প্রতিক বাজেটে কমানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের কাছে স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসিত হয়েছে।

'আত্মরক্ষা স্প্রে'-এর দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা মনে করেন, নারী অধিকার সংরক্ষণে এবং যৌন হয়রানি থেকে তাদের রক্ষা করতে, এ-ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়; নিতে হবে ধারাবাহিক আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যবস্থাও। প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে বা প্রচলিত আইনে সংস্কারসাধন করতে হবে এবং সামাজিক সচেতনা বাড়াতে হবে।

কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করেন, সার্বিকভাবে সমাজের জীবনমান উন্নত করা উচিত। তারা মনে করেন: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ। তারা বিশ্বাস করেন যে, সার্বিকভাবে সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে, নারীদের প্রতি সহিংসতাও ধীরে ধীরে কমে যাবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক