

বিষয়টি নিয়ে বেশ হইচই হয়। এ প্রেক্ষাপটে ভারত সরকার জানিয়েছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে নতুন কোনো সিভিডি আরোপ করা হয়নি। বরং ২০১২-১৩ অর্থবছরেই তৈরি পোশাক আমদানিতে ১২ দশমিক ৩৬ শতাংশ হারে যে সিভিডি ছিল, সেটিই বহাল রাখা হয়েছে।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান এই সিভিডি আবগারি শুল্কের বদলে আরোপকৃত, যা সব ভারতীয় প্রস্তুতকারককে প্রদান করতে হয়। আর আমদানির ক্ষেত্রে এই সিভিডি বৈষম্যহীন, যা সুনির্দিষ্ট কোনো দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে ভারতীয় ব্র্যান্ডেড তৈরি পোশাকের ওপর থেকেও আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়নি; বরং ভারতীয় পোশাক প্রস্তুতকারকদের 'স্বেচ্ছায়' বা 'বাধ্যতামূলকভাবে' আবগারি শুল্ক নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে, যা ২০০৪ থেকে এবং ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটের আগ পর্যন্ত বহাল ছিল।
ভারতীয় হাইকমিশন আরও স্পস্ট করে যে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গত বছরের মতো এবারও ভারতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা বহাল আছে। এ ক্ষেত্রে গত বছরের বাড়তি কোনো সিভিডি নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারত বাংলাদেশের ৪৬ ধরনের বস্ত্র ও পোশাকপণ্যকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে। ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর থেকে তামাক ও মাদক বাদে সব পণ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব স্বল্পোন্নত দেশকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে। এর মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশি রপ্তানিকে 'জাতীয় মর্যাদা'র সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলো সংবাদপত্রকে বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য যে পরিমাণ আবগারি শুল্ক ছিল, তার বিপরীতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য ছিল সমান পরিমাণ সিভিডি। নতুন বাজেটে আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করা হলেও সিভিডি কিন্তু রয়েই গেল। তার মানে, নতুন করে কিছু আরোপ করা না হলেও বংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ভারত তার নিজের স্বার্থে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা তারা নিতেই পারে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের দিকটাও তো দেখতে হবে।
ওই কর্মকর্তার ভাষ্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা। তাদের মতে, সদ্যঘোষিত ভারতীয় বাজেটের আগ পর্যন্ত দেশটির স্থানীয় উত্পাদনকারীদের যে হারে আবগারি শুল্ক দিতে হতো, তার সমপরিমাণ সিভিডি দিতে হতো বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের। আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকেরা ভারতে পণ্য রপ্তানিতে অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবেন।(এসআর)




