Web bengali.cri.cn   
ছুটির দিনে চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখেন
  2013-02-14 18:23:49  cri

আপনার ওপর কাজের চাপ কি খুব বেশি? সত্যি বলতে কি, প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হই। আমি কিন্তু সবসময় নিজের সঙ্গে মজা করে থাকি। নিজেকে বলি, মানুষের উচিত জীবনের কষ্টকর অনভূতিগুলোকে যথাসম্ভব দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করা। আর এর জন্য চাই সবধরণের চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এ-অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার বেশ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আপনাদের আমি পরামর্শ দেব।

প্রতিদিন অফিসে একই ধরণের খাবার খান? নিশ্চিত থাকেন, আপনার ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। হংকংয়ের মনস্তত্ত্ববিদরা বলেন, অফিসে টানা তিনদিন একই ধরনের খাবার খেলে, শরীরে চাপজনিত হরমোন বেশি সৃষ্টি হয়। কারণ স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খেতে আপনার ভালো লাগবে না এবং কাজ করতেও আপনি বিরক্তিবোধ করবেন। তাই, প্রতিদিন দুপুরের খাবারে ভিন্ন ভিন্ন আইটেম রাখুন। প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খাবেন না। আজ চীনা খাবার খেয়েছেন? তাহলে, কাল ফাস্টফুড খাওয়ার পরিকল্পনা করুন। পরেরদিন খেতে পারেন ইতালিয় পিজ্জা অথবা পাস্তা।

প্রথমে আপনার আঙ্গুল দিয়ে বাম নাসারন্ধ্র বন্ধ করুন এবং ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাস নিন। এবার ডান নাসারন্ধ্র বন্ধ করে বাম নাসারন্ধ্র দিয়ে নি:শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে দু'মিনিট চর্চা করুন। এতে আপনার মন ও শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে; আমি ভালো বোধ করবেন।

এখন থেকে কফি পান করার সময় অবশ্যই এক টুকরো দারুচিনি মিশিয়ে নেবেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, দারুচিনির মধ্যে বিশেষ উপাদান রয়েছে, যা মানুষকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে সাহায্য করে। গরম চকোলেট, আপেলে রস বা দুধচায়ের সাথেও দারুচিনি মিশিয়ে খেতে পারেন।

প্রতিমাসে ক্রেডিটকার্ডের বিল পুরোপুরি পরিশোধ করুন। বিল পরিশোধ না-করার অর্থ ব্যাংককে সুদ দেয়া। এতে আপনার ওপর আর্থিক চাপ পড়বে; আর আর্থিক চাপ থেকে আসবে মানসিক চাপ।

মহিলাদের জন্য কালো চা শরত্ ও শীতকালে গা গরম করার সবচে ভালো উপাদান। বৃটেনের মনস্তত্ত্বিবদরা বলেন, গরম কালো চা খেলে মহিলাদের শরীরে চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের নি:সরণ ৫৪ শতাংশ কমে যায়।

অফিস ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে আপনি নিয়ম করে টেলিভিশন দেখেন কি? এটা ভালো অভ্যাস নয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, টেলিভিশন দেখা, বিশেষ করে মানবিক জটিলতাসংশ্লিষ্ট সিরিয়াল দেখলে শরীরে চাপসৃষ্টিকারী হরমোন নি:সরণের হার বৃদ্ধি পায়। বই পড়া ও গান শোনা চাপ কমানোর ভালো পদ্ধতি। বৃটেনের সর্বশেষ এক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, বই পড়লে মহিলাদের শরীরে চাপ হরমোনের পরিমাণ ৬৮ শতাংশ কমবে; আর গান শুনলে আনন্দ হরমোনের পরিমাণ ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

আপনি কি খুব দ্রুত কথা বলেন? মনোবিদরা মনে করেন, যারা খুব দ্রুত কথা বলেন, তারা অন্যদের মনের ওপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি অজ্ঞাতে নিজের শরীর ও মনের ওপরও চাপ সৃষ্টি করে।

অস্ট্রেলিয়ার মনোবিদরা বলেন, যারা সাতটা পনেরো মিনিটের পরও কাজ করতে থাকেন, তাদের শরীরে চাপ হরমানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সন্ধ্যা আটটার পর নিজের শরীর ও মনকে আরাম দিন এবং বাকি কাজ পরের দিনের জন্য রেখে দিন। এভাবে আপনার ওপর চাপ কমে যাবে এবং রাতে

নিজের হাতে খাবার তৈরী করুন। পাউরুটি বা বিস্কিট তৈরী করুন। নিজের হাতে তৈরী খাবার স্বাস্থ্যকর। পাশাপাশি এ-কাজের প্রক্রিয়ায় আপনার মনের ওপর চাপও কমবে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল কলেজের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, রুটি বানানোর জন্য বারবার আটা মিশ্রণ করলে আপনার শরীরে চাপ হরমোনের পরিমাণ ব্যাপক হ্রাস পাবে।

আলিঙ্গন করা ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের স্বাভাবিক রীতি। কিন্তু চীনে এটা তেমন প্রচলিত নয়। চীনারা এমনকি নিয়মিত নিজেদের বাবা-মা বা ভাই-বোনদেরও আলিঙ্গন করে না। অথচ সর্বশেষ এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, পরিবারের সদস্য, বন্ধু বা প্রেমিক বা প্রেমিকাকে মাত্র ২০ সেকেন্ড জড়িয়ে ধরে রাখলে মহিলাদের শরীর ও মনের ৭৮ শতাংশ চাপ কমে যায়। অতএব, আলিঙ্গনের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করুন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক