Web bengali.cri.cn   
মন্থর হয়ে পড়েছে বিশ্বায়নের গতি
  2013-01-08 19:38:56  cri
চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশ্বায়নের গতি ধীর হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপ্রবাহ, মূলধন, তথ্যপ্রবাহ এবং মানবসম্পদের ওপর ভিত্তি করে ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত যোগাযোগ সামর্থ্য বেশ দ্রুত বেড়েছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে পরবর্তী সময়ে এ সামর্থ্য আশঙ্কাজনকভাবে কমতে থাকে। ২০০৯ সালে যোগাযোগ সামর্থ্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার পরও তা আশানুরূপ অবস্থানে ধরে রাখা যায়নি।

এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে বিশ্বখ্যাত দলিলাদি ও পণ্যসামগ্রী পরিবহণকারী প্রতিষ্ঠান ডিইএইচএল। বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বৈশ্বিক যোগাযোগ সামর্থ্য সূচক, বা গ্লোবাল কানেকটেডনেস ইনডেক্স-জিসিআই-ও, প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার একটি সামগ্রিক বিশ্লেষণ হিসেবে এই দ্বিতীয়বারের মতো এ সূচক তৈরি করলো ডিএইচএল। বিশ্বের ১৪০টি দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপ্রবাহ, মূলধন, তথ্যপ্রবাহ এবং মানবসম্পদের ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি করা হয়েছে

এই সূচকে এবার শীর্ষে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর আর তৃতীয় স্থানে আয়ারল্যান্ড। তালিকার চতুর্থ ও পঞ্চম স্থান দখল করেছে যথাক্রমে সুইজারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গ। যুক্তরাজ্য, সুইডেন ও বেলজিয়াম আছে যথাক্রমে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম স্থানে। আর নবম ও দশম স্থানে আছে যথাক্রমে হংকং ও মালটা।

বিভিন্ন দেশের যোগাযোগ সামর্থ্যের গভীরতা এবং ব্যাপকতার নিরিখে এ সূচক তৈরি করে ডিএইচএল। যোগাযোগ সামর্থ্যের গভীরতা বলতে বোঝায় কোনো একটি কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তি কতটুকু আন্তর্জাতিকতাসম্পন্ন। আর কোনো একটি কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে কতগুলো দেশে পরিব্যাপ্তি লাভ করে তার ওপর নির্ভর করে ব্যাপকতা। ব্যাপকতা এখানে গভীরতার পরিপূরক।

প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি ডেটা পয়েন্ট সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ২০০৭ সালের তুলনায় বর্তমান পৃথিবী তুলনামূলকভাবে কম সংযুক্ত।

ডিএইচএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্র্যাঙ্ক অ্যাপেল বলেন, অর্থনৈতিক মন্দা যে বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীল ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, তা বৈশ্বিক যোগাযোগ সামর্থ্য সূচক ২০১২-এর মাধ্যমে বেশ ভালভাবে জানা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, এ ধীর উন্নয়নের সময় বিশ্বায়ন পৃথিবীর নাগরিকদের জন্য বিপুল সুবিধা সৃষ্টি করেছে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বৈশ্বিক যোগাযোগ সামর্থ্য সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৯১তম। আর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ১২টি দেশের মধ্যে অবস্থান ষষ্ঠ। এতে বলা হয়, আন্তঃআঞ্চলিক সমন্বয়ে ঘাটতির কারণে ১৪০টি দেশের মধ্যে ব্যাপকতায় বাংলাদেশের স্থান ৩৩তম; কিন্তু গভীরতায় স্থান ১৩৪তম। তবে বাণিজ্যিক মানদণ্ডে যোগাযোগ সামর্থ্যের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ৬৩তম এবং আঞ্চলিকভাবে তৃতীয়। আর সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয়। বাংলাদেশের আগে আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা।

গত কয়েক বছরে বাণিজ্যিক মানদণ্ডের গভীরতার উন্নয়নের ফলে ২০০৫ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের যোগাযোগ সামর্থ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বৈশ্বিক যোগাযোগ সামর্থ্য সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৭। অর্থাত্ এ বছর ছয় ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।(এসআর)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক