নভেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ থাইল্যান্ডে ফুল ফোটার মওসুম। প্রতি বছর এ সময় লপ বুরি জেলা আয়োজিত 'সূর্যমুখী ফুল উত্সব' থাইল্যান্ড ভ্রমণের নতুন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। এমনকি সূর্যমুখী ফুল লপ বুরি জেলার আদি নাম বদলে দিয়েছে; 'সূর্যমুখী ফুলের জেলা' হিসেবে এখন আরও বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছে।
পর্যটকরা এখানে ছোট ট্রেনে বসতে, সাইকেল চালাতে কিংবা সূর্যমুখী ফুলের বাগানে হাঁটতে পারেন। ঘুরতে ঘুরতে সূর্যমুখী ফুলের বিভিন্ন পণ্যের দোকানও পাওয়া যায়। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তৈরি হাল্কা খাবার, সূর্যমুখী ফুলের মধূ, এ ফুলের ছবিওয়ালা পোশাক এবং বিভিন্ন ধরনের কারুশিল্পজাত পণ্য। ভ্রমণকারীরা সূর্যমুখী ফুলের স্বাদ ও সৌন্দর্য্য বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু প্রথম দিকে এ জেলা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য নয়, করে ধান চাষের বিরতিকালে বিকল্প ফসল ফলানোর জন্য। সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে খাবার উত্পাদনকারী থাইল্যান্ডের প্রথম প্রতিষ্ঠান 'ফুল খাবার কোম্পানি'র দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা সিনহুয়া বার্তা সংস্থাকে বলেন, ৩০ বছর আগেও থাইল্যান্ডে কেউ তেমন সূর্যমুখী ফুলের চাল করতো না। তাঁর বাবা প্রথম আবিষ্কার করেন যে, সূর্যমুখী ফুল চাষে সময় কম লাগে, চাষ করার পদ্ধতি সহজ এবং চার ঋতুতেই গ্রীষ্মকালের মতো আবহাওয়া-সমৃদ্ধ থাইল্যান্ড এ ফুল চাষের উপযুক্ত স্থান। সেজন্য প্রতি বছর ধান চাষের বিরতির সময় ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করার এবং তার বীজ থেকে খাবার উত্পাদন করে তা বিক্রির করার চেষ্টা চলতে থাকে।
পয়ত্রিশ বছরের ব্যবধানে 'ফুল খাবার কোম্পানি'র সূর্যমুখী ফুল-সংশ্লিষ্ট পণ্যের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়ে গেছে। এ কোম্পানির পণ্য থাইল্যান্ডের অপরিহার্য দেশীয় খাবারগুলোর অন্যতম হয়ে উঠেছে এবং কোম্পানি এখন আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে তাদের সূর্যমুখী ফুলের খাবার চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোসহ ২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে রপ্তানি হচ্ছে।