

ধনী লোক কিছুক্ষণ চিন্তাভাবনা করলেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন, লোকটির কথা ঠিক। সাধারণত শারীরিক পরিশ্রমের কাজে বেশি মজুরি পাওয়া যায় না। ধনী লোকটি পরিবারটিকে আর্থিক সাহায্য দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি গৃহকর্তাকে জানালেন, তিনি তার পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কিছু টাকাপয়সা দেবেন। ধনী লোকের এ-কথা শুনে গৃহকর্তা মহা খুশী হল।
বিদায় নেয়ার আগে ধনী লোক বললেন: 'এ-সব টাকাপয়সা দিয়ে তোমরা ছোট ব্যবসা করতে পার। তোমাদেরকে আর শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে হবে না। ছোট ব্যবসা করার জন্য এ-অর্থ যথেষ্ট।'
এক বছর পর, ধনী লোকটি আবার সেই পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে গেলেন। তিনি দেখতে চান সে সেই পরিবারের বতর্মান অবস্থা কী রকম হয়েছে।
সেই পরিবারের ঘরে ঢুকে ধনী লোকটি অবাক হয়ে গেলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, তাদের অবস্থা এক বছর আগের তুলনায় আরও খারাপ হয়েছে। গোটা পরিবার একটি মিষ্টি আলু ভাগাভাগি করে খাচ্ছে।
ধনী লোক গৃহকর্তাকে জিজ্ঞেস করলেন: 'গত বছর আমি তোমাকে টাকাপয়সা দিয়েছি ব্যবসা করার জন্য। এক বছর পর তোমাদের অবস্থা আরও খারাপ হলো কীভাবে?'
গৃহকর্তা জবাব দিলেন: 'আপনার টাকা পাওয়ার পর ব্যবসার কথা নিয়ে অনেকবার চিন্তাভাবনা করেছি। কিন্তু লোকসানের ভয় আমাকে পেয়ে বসলো। তাই আমি ব্যবসার চিন্তা বাদ দিয়ে, আপনার টাকায় মিষ্টি আলু কিনেছি। কেনা আলুতে আমাদের বেশ চলছিল। কিন্তু এখন টাকাও শেষ, মিষ্টি আলুও শেষ। আর, অনেকদিন ধরে পরিশ্রম করা বন্ধ ছিল বলে, এখন আমি আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না। তাই আমাদের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।'
গৃহকর্তার কথা শুনে ধনী লোকটি চক্ষুস্থির হয়ে গেল। তিনি হা হা করে বললেন: 'আমি বুঝতে পেরেছি, দারিদ্র্য বিমোচন করার চাইতে, মানুষের মনের বল বাড়ানো আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্যহীন ও দ্বিধাগ্রস্ত মানুষ টাকাপয়সার সদ্ব্যবহার করতে জানে না।"




