


ট্যাবলেট পিসি প্রকাশের আগের দিন প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, লেনোভা সারা বিশ্বের ১৫.৭ শতাংশ বাজার দখল করেছে। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, লেনোভার পিসি হিউলেট প্যাকার্ডের তুলনায় ০.২ শতাংশ বেশি বাজার দখলের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে: লেনোভো ভবিষ্যতে কিভাবে সামনে এগিয়ে যাবে?
ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাথে পাল্লা দিয়ে, একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের বিশ্ব বাজারে প্রথম স্থানে থাকা সহজ কথা নয়। বিশেষজ্ঞরা হিউলেট প্যাকার্ডের তুলনায় লেনোভার বাজার বাড়বে বলে আগেই অনুমান করেছিলেন। কিন্তু লেনোভোর বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়াং ইউয়ান ছিং'র লক্ষ্য অবশ্য আরও বড়। 'অ্যাপেল'-এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকেই এখন তিনি লেনোভোর লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করেছেন। 'অ্যাপল'-এর তুলনায় লেনোভো এখনো অনেক পিছিয়ে আছে।
লেনোভোর পিসি সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। এরসাথে উল্লেখ করতে হয়, ৮ বছরে আগে লেনোভা আইবিএম'র পিসির স্বত্ত্ব কিনে নিয়েছিল। ২০০৫ সালের মে মাসে লেনোভো সে-খাতে বিপুল পরিমাণ মার্কিন ডলার ব্যয় করে। সে-বছর লেনোভোর পিসির বিক্রির পরিমাণ ১ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়ায়; টাকার অংকে যা ছিল ১৩০০ কোটি ডলার। এর ফলে লেনোভো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পিসি উত্পাদনকারীতে পরিণত হয় এবং বিশ্বের শীর্ষ ৫০০টি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
অথচ আইবিএম কিনে নেয়ার ধারণাকে অনেকেই অপছন্দ করেছিলেন। ২০০৪ সালে লেনোভোর বোর্ড চেয়ারম্যান লিউ ছুয়ান চি পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেন। বক্তৃতার সময় তিনি এ ব্যাপারে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মতামত জানতে চান। মাত্র ৩ জন দর্শক-শ্রোতা এ-ধারণার পক্ষে মত দেয়। এই তিন জনের মধ্যে আবার দুই জনই লেনোভোর আসলে সে-সালে সারা বিশ্বে পিসি খাতে মন্দাবস্থা
তখন লিউ ছুয়ান ছি ভাবলেন, "আইবিএম ক্রয় করলে কী লাভ হবে? লেনোভো দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে। কিন্তু বিদেশে এর ব্যাবসা সম্প্রসারণের পথে একদিকে যথাযথ প্রযুক্তি, অন্যদিকে পদ্ধতির অভাব বড় বাধা। কিন্তু আইবিএম-এর কাছে সব উপাদান আছে: পদ্ধতি, জনশক্তি, গবষেণার দক্ষতা, বিশেষ করে ব্র্যান্ড।" জেংজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও প্রযুক্তি একাডেমীর অধ্যাপক ছেন তে বলেন, "বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের স্বত্ত্ব ক্রয়ের মাধ্যমেই লেনোভো প্রথমবারের মতো বিশ্ব মঞ্চে এসে দাঁড়াতে পেরেছে।"
বাস্তবিকই এ-ক্ষেত্রে লেনোভোর সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক। এরপর লেনোভো প্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব ও অর্থ সংকটসহ বিভিন্ন সংকট কাটিয়ে উঠেছে। ডেল ও হিউলেট প্যাকার্ডকে পেছনে ফেলে পিসির বাজারে শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করেছে।
আইবিএম'র ব্র্যান্ডের জন্য লেনোভো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লেনোভোর সামনে দেখা দিয়ে বেশকিছু সমস্যা যেগুলো সমাধান করা দরকার। লেনোভার মুনাফার হার মাত্র ১.৪ শতাংশ। একই সময় হিউলেট প্যাকার্ডের মুনাফার হার ছিল ৭.৪ এবং ডেলের হার ছিল ৬.২ শতাংশ। পিসি বিক্রি ছেড়ে দেয়ার পর আইবিএম'র মুনাফার হার ছিল ২৭ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে অ্যাপেল-এর হার ছিল ২৯.৬৬ শতাংশ।
আসলে আইবিএম ক্রয়ের পর লেনোভোর মুনাফার হার ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। লেনোভোর সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে: মুনাফার হার বাড়ানো।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের 'হাল-শৈলী' অনুষ্ঠান এ পর্যন্ত। এ অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগল। যদি ভালো লেগে থাকে এবং এ অনুষ্ঠান নিয়ে আপনাদের যদি কোনো মতামত থাকে, তাহলে আমাদেরকে চিঠি বা ইমেইল পাঠাতে ভুলে যাবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা হলো wangdanhong@cri.com.cn এবং ben@cri.com.cn। দয়া করে দু'টো ঠিকানায় ইমেইল পাঠান। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী বৃহস্পতিবার আবার কথা হবে। যাই চিয়ান। -রুবি/আলিম




