Web bengali.cri.cn   
বৃদ্ধা চাং চিন মেই'য়ের চমত্কার জীবন
  2012-10-06 19:26:39  cri

তার চোখে কোনো সমস্যা নেই; সমস্যা নেই কানেও। পিঠে কোনো কুঁজ নেই; কোমরও বেকে যায়নি। প্রতিদিন সকাল ছ'টায় ঘুম থেকে ওঠেন। হাইহিল জুতো পড়ে, দু'স্টেশন পার হয়ে পার্কে নাচ করতে যান। দুপুর ১২টায় বাড়িতে ফিরে লাঞ্চ করেন এবং দুপুর একটায় দাবা কক্ষে চার ঘন্টা ধরে মা চিয়াং খেলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়িতে ফেরেন। ফেরার পর ৪৫ মিনিট ধরে পা গরম পানিতে ধুয়ে নেন। তারপর ডিনার করেন। ডিনারের পর কিছুক্ষণ টেলিভিশন দেখেন।

এটি হলো ৯২ বছর বয়সী বৃদ্ধা চাং চিন মেইয়ের প্রতিদনের জীবনাচার। তার ছেলের কাছ থেকে এ-তথ্য আমরা পেয়েছি। চাং চিন মেইয়ের কথা শুনে শ্রোতারা হয়তো মনে করছেন যে, নানি চাং'র জীবনে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু আসল ঘটনা তা নয়। চাং'র ৯টি বাচ্চা ছিল। তাদের মধ্যে তিনজন ১০ বছরের কম বয়সে মারা গেছে। তার স্বামী ৪৬ বছরে মারা যান। সেসময় চাং'র বয়স ৩৭ বছর। এরপর থেকে চাং একাই ৬টি ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন। কিন্তু তাকে এসময় বড় ধরনের আঘাতও সইতে হয়েছে। তার দ্বিতীয় মেয়েটি ৫০ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যায়।

কিন্তু চাং বরাবরই নিজের মুড ভালো রাখার চেষ্টা করেন। তিনি জানান, তিনি মা চিয়াং খেলতে পছন্দ করেন। আগে তিনি প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে মা চিয়াং খেলতেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিদিন চার ঘন্টা করে খেলেন। তার সাথে যারা মা চিয়াং খেলেন, তাদের বয়স চাং'র চেয়ে অনেক কম। কিন্তু চাং প্রায়ই তাদের পরাজিত করেন। মা চিয়াং খেলা কি শরীরের জন্য ভালো? চাং এসম্পর্কে বলেন, মা চিয়াং খেলার সময় মন:সংযোগ করতে হয়। ফলে সব কষ্টের কথা ভুলে যাওয়া যায়। এ খেলায় হাত, চোখ ও মস্তিষ্ক একসঙ্গে ব্যবহার করতে হয়।

চাং-এর মন অনেক বড়। তার ছোট জামাতা তার ছবি তার জন্য নির্ধারিত সমাধিতে লাগিয়েছে। প্রতি বছর নিজের স্বামীকে শ্রদ্ধা জানানোর সময় চাং নিজের জন্য নির্ধারিত কবরও পরিস্কার করেন। অনেকের চোখে তার ছোট জামাতা খারাপ। কিন্তু চাং এ-নিয়ে মাথা ঘামান না। আসল ঘটনা হল, চাং'র স্বামীর মৃত্যুর পর কবরে দেওয়ার জন্য তার কোনো একক ছবি ছিল না। সেজন্য তার ছোট জামাতা তাদের যুগল ছবি সমাধিতে লাগিয়ে দেন। চাং বললেন, "আমি এখনও বেচে আছি। তুমি আমার ছবি কবরে লাগালে। এতে কি হবে।" তার ছোট জামাতা তাকে মন ভালো করার জন্য বললেন, 'আপনার ছবি থাকলে খারাপ হবে না। এতে জাহান্নামের রাজা জানবে না যে আপনি বেচে আছেন।' এরপর থেকে চাং আর এ-নিয়ে মাথা ঘামান না।

চাং বর্তমানে ছোট ছেলের সাথে থাকেন। ধনী না হলেও তিনি আরামদায়ক জীবন কাটাচছেন।

চীনের একটি প্রবাদ আছে, 'পরিবারে একজন বৃদ্ধ থাকা মানে একটি সম্পদ থাকা। আপনার বাড়িতে সে-রকমের সম্পদ আছে কি?

মন্তব্য
মন্তব্য
লিঙ্ক