

ওয়াং জি হুয়াংয়ের লেখা কবিতাগুলোর মধ্যে অধিকাংশই হারানো হয়েছে। বতর্মান সংক্ষরিত থাং রাজবংশ আমলের কবিতাগুলোতে ওয়াং জি হুয়াংয়ের লেখা কবিতা মাত্র দশ বারোটি রয়েছে। এ দশ-বারোটি কবিতা থাং রাজবংশের শেষ দিকের লেখা। আসলে ওয়াং জি হুয়াং তাঁর জীবনে অনেখ কবিতা লেখেছেন। তাঁর লেখা কবিতাগুলোর মধ্যে অধিকাংশ বনর্নন করা হত সিমান্ত এলাকায় বসবাস-করা জনসাধারণের জীবন ও রীতি-নীতি সম্পর্কে । ওয়াং জি হুয়াং এক সময় দেশের অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। সুতরাং তাঁর কবিতাগুলোতে দেশের সুন্দর দৃশ্য এবং বিভিন্ন জায়গার রীতিনীতি সম্পর্কে বেশ বর্ননা করা হত। তাঁর সবচেয়ে নাম-কবিতার নাম: ' ওয়াহো ভবন আরোহন করা'। এই কবিতা প্রথম স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে লিপিবদ্ধ হয়। যখন তিনি থাং রাজবংশ আমলের হোজন বতর্মান সেনসি প্রদেশের ইয়াংজি জেলার একটি তিন তলার ভবন আরোহন করেন তখন তিনি এই কবিতা রচনা করেন। এই ভবনের পিছনে হুওয়াংহো নদী। তার কবিতার মর্ম এমনি: ' সন্ধ্যাবেলার সুর্য পাহাড়ের ঢাল দিয়ে আস্তে আস্তে নামছে, হুওয়াহো নদীর ধারা পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে সবচেয়ে সাগরের সঙ্গে মিশে যাবে, সুদূরের সুন্দর দৃশ্য দেখতে চাইলে , উপরের আরেকটি তলায় আরোহন করতে হবে'। তাঁর কবিতার বাক্য পরর্বতীকালের প্রভাব হয়ে গেল। প্রাকৃতিক দৃশ্য নিয়ে তার লেখা কবিতা আরও অনেক ছিল। দু:খের ব্যাপার হল, সং রাজবংশ আমলে তাঁর লেখা অনেক কবিতা দেখা যেত না। তাঁর আরেকটি নাম-করা কবিতার নাম :' সিমান্ত এলাকার দু:খ'। এই কবিতায় তখনকার সিমান্ত এলাকায় বসবাস-করা জনসাধারণের কঠিন জীবন সম্পর্কে প্রানবন্তভাবে বর্ননা করা হয়। থাং রাজবংশ আমলে অনেক ভিন্নমতাবলম্বী বা অপরাধি দেশের সিমান্ত এলাকায় নির্বাসন জীবন যাপন করতো। তখনকার কতৃর্পক্ষ তাদের জীবনের উপর কোন মনোযোগ দিত না। সুতরাং তাদের জীবন অত্যন্ত কঠিন। ওয়াং জি হুয়াং ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু সিমান্ত এলাকায় ভ্রমণ করে সেখানকার জনসাধারণের জীবন সম্পর্কে কবিতা লিখতেন। সেই সময় ওয়াং জি হুয়াংয়ের সঙ্গে স্থানীয় জনসাধারণের খুব বন্ধুত্ব ছিল। স্থানীয় জনসাধারণ তাদের দু:খ সম্পর্কে ওয়াং জি হুয়াংকে বলতে চেত। ওয়াং জি হুয়াং তাঁর কলম দিয়ে তাদের মনে কথা প্রকাশ করতেন। তাদের মধ্যে অনেকেই অনেক বছর ধরে পরিবারের স্বজন ও আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে পারে না। সুতরাং ওয়াং জি হুয়াং তাঁর কবিতাগুলোতে এ সব লোকের গভীর আবেগ ব্যক্ত করতেন।
ওয়াং জি হুয়াং তাঁর জীবনে তখনকার বেশ কয়েক জন বিখ্যাত কবির সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন। তারা এক সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতেন। তারা এক সঙ্গে কবিতা নিয়ে মত বিনিময় করতেন। তাদের কবিতাগুলোতে পরস্পরকে উল্লেখ করা হত। ওয়াং জি হুয়াংয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ওয়াং ছাং লিং থাং রাজবংশ আমলের একজন খুব বিখ্যাত কবি। কিন্তু হুয়াং ছাং লিং ওয়াং জি হুয়াংয়ের চেয়ে অনেক ছোট। ওয়াং জি হুয়াং মারা যাওয়ার পর , ওয়াং ছাং লিং ওয়াং জি হুয়াংয়ের স্মৃতিতে একটি কবিতা লিখলেন। কবিতায় তিনি ওয়াং জি হুয়াংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব আগেবের সঙ্গে বর্ননা করা হত।
থাং রাজবংশ আমলের অন্যান্য নাম-করা কবির মতো হয়াং জি হুয়াং চীনের থাং রাজবংশ আমলের সাহিত্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা অধিকাংশ কবিতা সংরক্ষিত হয়নি । কিন্তু সত্ত্বেও যে কবিতাগুলো সংরক্ষিত হয়েছে সে সব কবিতা অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর লেখা কবিতাগুলো এখনো চীনা মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত হয়।




