|
এই কথা বলে বণিক চলে যায় বন্দরে। সেখানে গিয়ে দেখল সবচেয়ে ছোট একটি জাহাজ উদ্ধার হয়েছে আর এতে তেমন কোনো মালপত্রও নাই যা দিয়ে আবার বাণিজ্য শুরুকরা যায়। তবুও অবশিষ্ঠ মালপত্র যা ছিল বিক্রি করে যা পাওয়া গেল তাতেই খুশী আর খুশী মনে ঘোড়া ছুটিয়ে বাড়ির পথে রওনা হলো। কেননা অনেক দিন সে ছেলে মেয়েদেরকে দেখে নি।
কিন্তু এবার দেখা গেলো আরেক বিপত্তি। ঘোড়া ছুটিয়ে বনের মধ্যে সে পথ হারিয়ে ফেলে। চারিদিকে ঘোর অন্ধকার, কোথাও কোনো দিশা নেই যা দেখে বন থেকে বের হতে পারে। হঠাত্ করেই আবার ঝুম ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। কি করবে ভেবে না পেয়ে অন্তত আশ্রয় নিতে পারা যায় এরকম একটি জায়গা খুঁজে বেরাতে লাগলো। অবশেষে দূরে কোথাও যেন একটি আলোর বিন্দুর মত কিছু একটা দেখল আর তখনই ঘোড়া ছুটিয়ে সেদিকে চলে গেল।
লি: ও মা! কি সুন্দর একটি বাড়ি। ঝলমলে আলো চারিদিকে। আর বাহারি নক্সা আঁকা সূরম্য দরজায় লেখা রয়েছে- পথিক, তোমায় স্বাগতম। বণিক কিন্তু তখনও ঘোড়ার পিঠে, কিন্তু দরজাটা ধীরে ধীরে খুলে গেল। বাহ! বাহ! কি সুন্দর বাড়ি। কিন্তু কোথাও লোকজন নাই, কাউকেও দেখা যাচ্ছে না। ঝরনার পানি, ঝিরিঝিরি বাতাস, সবকিছুই পরিপাটি করে সাজানো। বণিক ধীরে ধীরে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো। সেখানে একটি সুবিশাল ঘর রঙিন ঝলমলে কাপড়, ঝাড়বাতি, সিংহাসনের মত মনিমুক্তা খচিত চেয়ার টেবিল। কিন্তু লোকজন কোথায়? ভয়ে ভয়ে একবার একটুখানি গলা খাকারিও দিল, কিন্তু সারা শব্দ নেই। ওমা! ওদিকে কি? ও যে দেখি খাবার টেবিলে সাজানো কত সুস্বাদু খাবার। এবার বণিকের মনে পড়লো সে খুব ক্লান্ত আর ক্ষুধার্ত। হিম-শীতল পানিতে হাত-মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে এসে দেখে সেখানে মাত্র একটিই চেয়ার রয়েছে। ওমনি টপ করে বসে পড়ল আর হুমহুম করে খেয়ে নিল মজাদার যত খাবার আছে সব। ক্লান্ত শরীরে খাওয়া দাওয়ার পর শরীর যেন আর চলে না, চোখ জুড়ে রাজ্যের ঘুম নেমে আসলো। পাশের ঘরের সোনার পালঙ্কে যেই না শরীরটা এলিয়ে মাত্রই ঘুমের রাজ্যে চলে যায় বণিক।
পরদিন সকালে উঠে চাঙা দেহ মন ফুরফুরে মেজাজ- বণিক তখন ভাবল এবার তাহলে যাওয়া যাক। এই কথা ভেবে ঘোড়া পিঠে চড়ে বসবে এমন সময় বাড়ির সামনের সুন্দর ফুলের বাগান দেখে তার ছোট কন্যার আবদারের কথা মনে পড়ল আর চটকরে একটি লাল গোলাপ তুলে নিল।
বণিক: ও কি! ভয়ংকর শব্দ কোথা থেকে আসছে? সমস্ত মাটি কাঁপছে, বাড়িঘর ঠোঙ্গার মত দুলছে। কেনো এমন হচ্ছে। হায় হায় কি উপায় এখন?
এমন সময় বণিক টের পেল পিছন থেকে তার কাঁধে কয়েক মন ওজনের হাতের থাবা। পিছন ফিরে তাকাতেই দেখল বিশাল দেহের কুতসিত, কাদাকার চেহারা, দেখতে জানোয়ার মনে হলেও মানুষ মানুষ মনে হয় এমন আজব চেহারার একটি জানোয়ার, মুখ থেকে যেনো আগুনের হুলকী বের হচ্ছে- হুংকার দিয়ে বলছে-
| ||||
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |