বন্ধুরা, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শান নান এলাকা তিব্বত জাতির সাংস্কৃতিক উন্নয়নের উত্স বলে অভিহিত করা হয়। এখানে মহা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ও গভীর সাংস্কৃতিক সম্পদ রয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা, আজকের " তিব্বতের কথকতা" অনুষ্ঠানে আমরা তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী অপেরা নিয়ে আনাদেরকে পরিচয় দেবো।
তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শান নান এলাকায় একটি ' চা সি ছু তেং' নামক ছোট্ট গ্রাম আছে। এ গ্রামে ' চা সি সুয়ে পা' নামক তিব্বতী অপেরা বেশ প্রচারিত হয়। এ অপেরা হচ্ছে তিব্বতের শিল্পী উন্নয়নে বেশ পূর্ণাঙ্গ ও বিখ্যাত অপেরাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এটও ইতোমধ্যেই চীনের অবস্তু সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
এক কথা আছে , বৌদ্ধ ধর্মের বিখ্যাত ভিক্ষু 'থাং তু চিয়ে পু' এ 'চা সি ছু তেং' গ্রামে ভ্রমণের সময় এ গ্রামকে একটি সুখী স্থান বলে মনে করা হয়েছিলেন। সুতরাং, কাছাকাছি অঞ্চলের লোকেরা অপেরা পরিবেশনা দেখার জন্য তিনি এ গ্রামে একটি সেতু নির্মাণ করেছেন। এ অপেরা আস্তে আস্তে এ গ্রামের প্রায় একই নাম পাওয়া গেছে। যা হচ্ছে চা সি সুয়ে পা অপেরা। এ কারণে ভিক্ষু 'থাং তু চিয়ে পু' তিব্বতী অপেরার প্রথম প্রজন্মের শিক্ষক। তিনিও তিব্বতে সেতু নির্মাণের প্রথমজন।
তিব্বতের সকল অধিবাসীদের পরস্পরের সঙ্গে বিনিময় করার জন্য তিনি চা সি সুয়ে পা অপেরা অনেক পরিবেশনা করেছেন। এভাবেই অর্জিত সব আয় তিনি সেতু এবং সড়ক নির্মাণে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। চা সি সুয়ে পা অপেরাও দিন দিন জনপ্রিয় হয়েছে। অধিবাসী 'পাই মা তুন চু' হচ্ছেন এ অপেরার সকল উত্তরাধিকারীদের মধ্যে অন্যতম একজন। এখন তাঁর বয়স ৮৭ বছর হলেও তিনি আরও প্রতিদিন এ অপেরা পরিবেশনা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার কাজ করছেন। তিব্বতের অন্যান্য অপেরার চেয়ে চা সি সুয়ে পা অপেরার অপরিহার্য অবস্থান রয়েছে। এ সম্পর্কে পাই মা তুন চু বলেন:
" ৯ বছর বয়স্ক থেকে আমি চা সি সুয়ে পা অপেরা শিখতে শুরু করেছি। সেসময় আমার শিক্ষক আমাকে অনেক অপেরার তত্ত্ব শিখিয়েছেন। তবে তখন আমার মনে সব কিছুই রাখতো না। আমার মনে শুধু রয়েছে যে, আমাদের অপেরা দল খুবই মাঝে মাঝে তিব্বতের বিভিন্ন বড় বা ছোট্ট আকারের মন্দিরে পরিবেশনা করতো।"
১৯৫৯ সালে তিব্বতের গণতান্ত্রিক সংস্কার শুরু বিশেষ করে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর, চীন সরকার সংখ্যালঘু জাতির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকাররক্ষা ও উন্নয়নের ওপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছে। একই সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সংখ্যালঘু জাতি অঞ্চলে বিশেষ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। জাতীয় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের যথাযথ সংগ্রহ এ ক্ষেত্রের উত্তরাধিকার হওয়ার জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি সৃষ্টি করেছে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শান নান এলাকার জাতিয় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ত্রাণ সংক্রান্ত বিভাগের মহাপরিচালক চিয়া ছুও আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন, শান নান এলাকার জাতীয় সাংস্কৃতিক রক্ষার কাজ সবার আগে চালানো হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
" ২০০৫ সালে সারা দেশে অবস্তু সাংস্কৃতিক সম্পদের ত্রাণ ও রক্ষার কাজ ব্যাপকভাবে চালু হয়। তবে ১৯৮৫ সালে আমরা ইতোমধ্যেই এ সব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ত্রাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।"
1 2 |