তিব্বতীদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নাচগান তিব্বতের মদ বিষয়ক সংস্কৃতির সংগে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ।
মদের গান গাওয়া মদ পানের একটি বৈশিষ্ট্য । বিয়ের অনুষ্ঠান বা গ্রামবাসীদের আনন্দ-উত্সবে অতিথিদের মদ পান করাতে গিয়ে হাতের মদের কাপ উর্ধ্বে তুলে গান করতে হয় । স্তুতি বা আশীর্বাদের কথা যা মনে আসে সংগে সংগে তা গাওয়া হয় ।
গান গাওয়ার সময়ে তালে তালে অঙ্গপ্রতঙ্গ আন্দোলিত হয় । কিন্তু কাপের ভেতরের মত ছিটকে পড়লে চলবে না । স্বাগতিকদের অনুরোধে টেবিলকে ঘিরে বসে থাকা অতিথিরা গান ধরলে পরিবেশ বেশ জমে ওঠে ।
মদপান ও নৃত্যের ভেতর দিয়ে তিব্বতীদের স্বভাবের উদারতার পরিচয় প্রকাশ পায় ।গ্রামের তরুণতরুণীরা বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে যখন " কুও চুয়াং নামক নৃত্য পরিবেশন করেন তখন বৃত্তাকারের কেন্দ্রস্থলে রাখা একটি ছোটো টেবিলের ওপরে দু'তিন কলসী মদ রাখা হয় ।
তরুণতরুণীরা পালাক্রমে গান গায় । গানের তালে তালে সবাই নাচতে থাকে করে । মাঝেমধ্যে বৃত্তের ভেতরে গিয়ে একবাটি মদ পান করে । মদ পান করতে করতে তাদের নৃত্যভঙ্গিমা বেগবান হয়ে ওঠে এবং গানের সুর আরো জোরালো হয় । নাচগান চলে সারা রাত ধরে ।
সিচুয়ান প্রদেশের আবেইহুইসুই এলাকায় হেজাজিউ নামে মদ পানের চমকপ্রদ রেওয়াজ প্রচলিত ছিল । কোনো গ্রামবাসীর বাড়িতে কোনো স্মরণীয় ঘটনা ঘটলে অথবা উত্সব পালন করলে পাড়াপড়শী ও অতিথিদের মদ পান করাতে হয় । বাড়ির কর্তাকে প্রথমে এক কড়াই পানি সিদ্ধ করে অগ্নিকুণ্ডের পাশে রাখতে হয় । তারপর এক ঘড়া মদও অগ্নিকুণ্ডের পাশে রেখে তাতে দুটো সরু বাঁশের নল ঢুকাতে হয় ।
1 2 |