প্রবল তুষারের মধ্যে লি সু চি ও তার চিকিত্সা দলের সদস্যরা খারা খারা পাহাড় বেয়ে খুব সাবধানে সামনে এগুচ্ছেন । তাদের গন্তব্যস্থল ছিল ৪ হাজার ৭ শ' মিটার উঁচু পাহাড় ।
মেঘের শীর্ষদেশে ভাসানো মন্দির বলে পরিচিত সন্নাসিনীদের এ মন্দির লাসার উপকন্ঠে অবস্থিত । এ মন্দিরে যাওয়ার পথ খুব দুরূহ ।
১২ বছর আগে লি সু চি প্রথমবারের মত এ মন্দিরে আরোহন করেন । পরে তিনি যে কতবার তুষার ও ঝড় উপেক্ষা করে চিকিত্সা কাজ চালানোর জন্যে সেখানে গিয়েছেন , তার হিসাব নেই ।
সকলের জানা আছে , বৌদ্ধধর্মের বিধিবিধান খুব কড়াকড়ি । তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী সন্নাসীদের মত সন্নানিসীরাও বহু বছর ধরে শুধু দেবতার ওপর আস্থা রাখতেন এবং চিকিত্সকদের ওপর কোনো আস্থা রাখতেন না । তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সবসময় ধর্মীয় শাস্ত্র আবৃত্তি করে নিজেদের রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করতেন ।
লি সু চি ও তার চিকিত্সা দলের সদস্যরা সভ্যতার বসন্তের বাতাস ও বিজ্ঞানসম্মত ধারণা এ নিরিবিলি মন্দিরে বয়ে এনেছেন । কিছুদিন আগে এ মন্দিরের সন্নাসিনী ছুই চি হঠাত বিষম উপাংগ-প্রদাহে আক্রান্ত হন । তখন তার মনে প্রথমে তিব্বতী জনগণের ভালো চিকিত্সক লি সু চি ও তার চিকিত্সা দলের সদস্যদের কথা পড়ল ।
৩৩ বছর আগে লি সু চি চীনা গণ মুক্তি ফৌজের দু নম্বর সামরিক চিকিত্সা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাক হন এবং শাংহাইয়ের ছাং হাই হাসপাতালে ভর্তি হন । কিন্তু এখানে ৬ মাস কাজ করার পর ২২ বছর বয়সী লি সু চি আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তিনি স্বেচ্ছায় তিব্বতে গিয়ে কাজ করার আবেদন করেন ।
শাংহাই তো চীনের একটি সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক নগর । তবে পৃথিবীর তৃতীয় মেরু বলে পরিচিত তিব্বতের গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার মিটার । তিব্বতের অক্সিজনের পরিমাণ দেশের অন্তর্ভাগের ৬০ শতাংশরেরও কম । সবাই জানেন যে , এ দুটি স্থানের মধ্যে বিরাট ব্যবধান রয়েছে ।
অথচ লি সু চি বলেছেন , যে স্থানের অবস্থা খারাপ এবং বিপদজনক , সে স্থানে কৃতিত্ব স্থাপন করা যাবে ।
1 2 |