৬২ বছর বয়সী তিব্বতী ব্যক্তিগত শিল্পপতি গেসাং অতীতের কথা স্মরণ করে বলেছেন , পুরনো তিব্বতে আমি আর আমার আপনজনরা পেট ভরে খেতে পারতাম না এবং ভালো পড়তে পারতাম না । তখন জুতো না থাকায় আমরা সবসময় খালি পায়ে হাটতাম ।
১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসের একদিন গেসাং তিব্বতের রিখাচে এলাকার পাইলাং জেলার একজন ভূমিদাসের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবামা ও তাদের চার ভাইবোন অভিজাত পরিবারের বাজার কৃতদাস ছিলেন । সুতরাং তাদের কোনো উত্পাদন উপকরণ ও লেশমাত্র ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ছিল না ।
সে সময় আমার পরিবার অভিজাত পরিবারের কাছ থেকে ১ হাজার ৪০০ কিলোগ্রম বার্লি ধার নিয়েছিলাম । তখন আমরা উচ্চ সুদে তা ধার নিয়েছিলাম । অনেক বছর পর এ উচ্চ সুদের ফলে আমরা আর পরিশোধ করতে পারলাম না ।
এ ঋণভার একটা উঁচু পাহাড়ের মত আমার পরিবারের ওপর ন্যস্ত ছিল । পাশাপাশি ভূমিমালিকরা পশুর সংগে যে রকম ব্যবহার করতেন , আমাদের সংগেও সে রকম ব্যবহার করতেন । অভিজাত পরিবারের বাজা একটি সাধারণ জিনিসের মত আমার মাসীকে লাসার তাচি জেলার একটি খামারের অভিজাতের কাছে দিয়ে দিয়েছিলেন । তখন আমার মাসীর বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর ।
১৯৫৯ সালে তিব্বতে গণতান্ত্রিক সংস্কার চালানো হয় । তখনকার দৃশ্য এখনো গেসাংয়ের মনে জাগরুক রয়েছে । ভূমিদাসেরা তাদের ধার করা জিনিস সংক্রান্ত চুক্তি আগুণে পুড়িয়ে দেন । তারপর সবাই মিলে আগুণের চারপাশে সমবেত হয়ে সারা রাত জেগে নাচ ও গান করেন । তখন গেসাংয়ের বয়স ছিল ১৩ বছর । তার বাবামা ও গ্রামবাসীরা যেভাবে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন . সেই দৃশ্য এখনো তার মনে রয়েছে ।
সরকার পাঠানো কর্মগ্রুপ আমাদের মধ্যে জমি বিতরণ করে এবং বিভিন্ন পরিবারের নামের প্ল্যাকার্ডকে যার যার জমিতে বসিয়ে দেয় । আমাদের পরিবার প্রথমবারের মত নিজেদের জমি পেয়েছে এবং তিনটি গরু ও একজোড়া তিব্বতী গালিচা পেয়েছে ।
1 2 |