শান নান এলাকা চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দক্ষিণাংশে অবস্থিত । এর আয়তন ৮০ বর্গকিলোমিটার । এখানে তিব্বতী , হান , হুই , মেন পা ও খাপা জাতির প্রায় ৩ লাখ লোক বসবাস করেন । এর মধ্যে তিব্বতী জাতির লোকসংখ্যা ৯৮ শতাংশ ।
শান নান হচ্ছে তিব্বতী জাতির প্রাচীন সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ উত্পত্তিস্থলের অন্যতম । এখানকার লোকেরা তিব্বতে সবচেয়ে আগেই জমি পরিমাপ , জলসেচ , ঘাস মজুদ , ধাতব ধালাই ও আগুণে মাটির পাত্র তৈরির কৌশল আয়ত্ত করেছে ।
শান নান এলাকার প্রখ্যাত পুরাকীর্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে তিব্বতী রাজাদের কবরস্থান , সামিয়ে বৌদ্ধবিহার , চাংজুব বৌদ্ধবিহার , ইয়ুমবু লাখাং প্রাসাদ ও সামদিং বৌদ্ধবিহার । এর মধ্যে তিব্বতী রাজাদের কবরস্থান ও সামিয়ে বৌদ্ধবিহার হচ্ছে চীনের গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ।
তিব্বতী রাজাদের কবরস্থান হচ্ছে এ পর্যন্ত উদ্ধারকৃত অপেক্ষাকৃত পরিপূর্ণভাবে সংরক্ষিত এবং ইতিহাসের পুথিপত্রে লিপিবদ্ধ তিব্বতের থুবো আমলের রাজাদের বৃহত আকারের কবরস্থান । খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দির ত্রিশের দশক থেকে এ কবরস্থান নির্মাণের কাজ শুরু হয় । নির্মাণের কাজে তিন শ'রও বেশি বছর লেগেছিল । এখানে থুবো আমলের ১৬জন রাজা এবং তাদের রাণী ও রাজপুত্রের কবর দেয়া হয় ।
এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত সোংসান গামবোর কবরস্থান । এটি হচ্ছে এ কবরস্থানের একটি প্রধান কবর । কবরের দরজা শিকামনির জন্মস্থান দক্ষিণ-পশ্চিমমুখী । এতে বৌদ্ধধর্মের প্রতি সোংসান গামবোর বিশ্বস্ততার পরিচয় পাওয়া যায় । ঐতিহাসিক পুথিপত্রে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে , সোংসান গামবোর কবরস্থানে রয়েছে ৫টি পবিত্র প্রাসাদ ।
বিভিন্ন প্রাসাদে স্থাপিত রয়েছে সোংসান গামবো ও শিকামনির ভাস্কর্য । তাছাড়া সোংসান গামবোর কবরস্থানে নানা ধরণের সোনা , রৌপ্য , মুক্তা ও অকীকের জিনিসপত্রও রয়েছে ।
এ কবরস্থান থেকে দুটি পাথরের সৌধ ও দুটি পাথরের সিংহও উদ্ধার করা হয় । এগুলোর রীতিনীতি মোটামুটি থাং রাজবংশের সৌধ ও পাথরের সিংহের মত । এতে তিব্বতী ও হান জাতির সংস্কৃতির ঘনিষ্ঠ আদান-প্রদান ও সংমিশ্রণের সত্যিকার ইতিহাস প্রতিফলিত হয়য়েছে ।
1 2 |