‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।
৯৪ তম পর্বে যা যা থাকছে:
১. তরুণদের কর্মসংস্থানে চীন জুড়ে চাকরি মেলা
২. তরুণদের নিয়ে যা বললেন, উপদেষ্টা নাহিদ
৩. চায়না এডুকেশন এক্সপো ২০২৪
১. তরুণদের কর্মসংস্থানে চীন জুড়ে চাকরি মেলা
তরুণদের কর্মসংস্থান বাড়াতে বছরব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে চীনের মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে দেশটির বিভিন্ন স্থানে চলছে মাসব্যাপী চাকরি মেলা।
সদ্য স্নাতক পাস তরুণদের কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় চাকরি মেলা। দেশটির মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এই মেলার আয়োজন করেছে। তরুণদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে চীন সরকারের চলমান কার্যক্রমের একটি অংশ এটি। ২ নভেম্বর শুরু হওয়া এই মেলা আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। আর এই পুরো মাসেই চলবে নিয়োগকার্যক্রম।
চীনের নয়টি বিশেষ অঞ্চলের নিয়োগকর্তারা এই মেলায় বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে চাকরির আবেদন গ্রহণ করছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
এর মধ্যে পূর্ব চীনের অর্থনৈতিক শক্তিধর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চ্যচিয়াংয়ে চাকরির মেলাটি বসেছে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে।
দক্ষিণ চীনের কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে প্রাধান্য পাচ্ছে সংস্কৃতি ও পর্যটন শিল্প। তরুণ প্রতিভাবান মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়ে চাকরি মেলার আরেকটি আসর বসেছে উত্তর-পূর্ব চীনের লিয়াওনিং প্রদেশে। এবারের চাকরি মেলায় কয়লা খনি, লজিস্টিকস এবং ক্যাটারিংয়ের মতো সেক্টর থেকে ১০টিরও বেশি নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।
এদিকে, চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি এবং সহজে চাকরি খুঁজে পেতে স্নাতকদের জন্য ২৮টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অংশ নিয়েছে। এই অনলাইন সাইট গুলো মূলত তথ্য প্রযুক্তি এবং শিক্ষা খাতের চাকরি নিয়ে হাজির হয়েছে এই চাকরি মেলায়।
অন্যদিকে, পূর্ব চীনের উসি সিটির চাকরি মেলা চলছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য। যে সব চীনা কোম্পানির বিদেশে ব্যবসা রয়েছে তারা এখানে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অংশ গ্রহণ করেছে।
চিয়াংসু প্রদেশের ৬০টি কোম্পানী যাদের বিদেশে কারখানা বা শাখা রয়েছে তারা চাকরি মেলায় বেল্ট অ্যান্ড রোডের অংশীদার দেশগুলোর ৫ শতাধিক আন্তর্জাতিক ছাত্রকে চাকরির সুযোগ দিচ্ছেন। ইলেকট্রনিক্স, অর্থনৈতিক এবং অনুবাদ সেক্টরে ২,৬০০ টিরও বেশি পদে এসব শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেয়া হবে।
এই জব ক্যাম্পেইন চলাকালীন লাইভস্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমেও নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং চাকরি খোঁজার কার্যক্রম চলবে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী, চীনে এই বছর স্নাতক পাস করেছেন ১ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।
এর আগে বছরের শুরুতেই চীনের মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রানালয় দক্ষ কর্মসংস্থান এবং উদ্যোক্তা বাড়াতে একটি নতুন নীতি চালু করে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় , প্রথম তিন মাসে ১ লাখ উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী চাহিদা সফল ভাবে পূরণ করেছে ১ দশমিক ৮৬ মিলিয়নেরও বেশি চাকরির নিয়োগের মাধ্যমে।
চীনে বর্তমানে ৪ হাজার ৪ শত টিরও বেশি পাবলিক সংস্থা রয়েছে, যা উদ্যোক্তা এবং চাকরি প্রার্থীদের কর্মসংস্থান পরিষেবা প্রদান করছে।
প্রতিবেদক : নাসরুল্লাহ রাসু
সম্পাদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
২. তরুণদের নিয়ে যা বললেন, উপদেষ্টা নাহিদ
বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তারুণ্যের ভেতরে যে উদ্যম, স্পৃহা এবং সচেতন ইচ্ছা রয়েছে, এসব গুণাবলি যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ একটি ভালো জায়গায় যাবে। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশের একটা প্রজন্মান্তর ঘটে গেছে। তরুণরা বাংলাদেশকে নতুন করে পথ দেখিয়েছে। অর্থনীতিসহ সবকিছুতেই তরুণরা নেতৃত্বে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং যেই প্রজন্ম জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছে, সেই প্রজন্মই বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে।‘’
৩. চায়না এডুকেশন এক্সপো ২০২৪
সাধারণত শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের সঙ্গে তরুণদের সম্পর্ক জড়িয়ে থাকে। চায়না এডুকেশন এক্সপো মানেই তরুণদের একচ্ছত্র অংশগ্রহণ।
চায়না এডুকেশন এক্সপো ২০২৪ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে শেষ হয় দুই দিনের এই ইভেন্ট। চীনা ছাত্র ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য যা একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা সরবরাহকারী একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। এতে ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ৩৮টি দেশ ও অঞ্চলের ৩৮০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
একটি অতিথি দেশ হিসেবে, এক্সপোতে ৩৫টি উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ফ্রান্স। যার মধ্যে অনেকগুলো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল কলেজ, বিজনেস স্কুল এবং প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট ছিলো।
এর আগে শিক্ষা প্রদর্শনীটি কুয়াংচৌ, শাংহাই এবং ছেংতুতে অনুষ্ঠিত হয় এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। শুধুমাত্র বেইজিংয়েই গত বছরের তুলনায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
পর্তুগাল এবং সার্বিয়া এই বছর প্রথমবারের মতো প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। তারা তাদের নিজ নিজ দেশ ও চীনের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চীনে অবস্থানরত পর্তুগিজ রাষ্ট্রদূত পাওলো নাসিমেন্টো বলেন, "সংখ্যা অনুসারে, চীন থেকে পর্তুগালে যাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রবণতা বছরের পর বছর ধরে বাড়ছে। আমরা চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে কাজ করছি এবং একইভাবে, আমরা প্রচার করছি যে চীনা শিক্ষার্থীরা পর্তুগালে যেতে পারে। চীনে পর্তুগিজ শিক্ষার্থীদের পাঠানোর জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ যে অফারটি করছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই, এটাই হচ্ছে জনগণের মধ্যে আদান-প্রদানের লক্ষ্য।’
চায়না এডুকেশন এক্সপোটি ২০০০ সাল থেকে প্রতি অক্টোবরে বেইজিং, শাংহাই এবং অন্যান্য শহরে অনুষ্ঠিত হয়। চায়না এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন ফর ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ এই প্রদর্শনীটির আয়োজন করে থাকে।
তরুণদের বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত করায় কর্মসংস্থানে একটা বড় প্রভাব ফেলে এই আয়োজন। কারণ বলা হয়ে থাকে, এটি চীনে সবচেয়ে বড় ছাত্র নিয়োগ এবং বিটুবি নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট।
গত বছর, ৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের ৩৭৪টি বিদেশি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি সংস্থা, দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলো চায়না এডুকেশন এক্সপো সফরে অংশগ্রহণ করে।
প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
সম্পাদক : ফয়সল আবদুল্লাহ
আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।
পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল
সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী