স্মার্ট হারভেস্টিং চলছে
2024-10-31 17:00:29

অক্টোবর ৩১, সিএমজি বাংলা ডেস্ক:  পূর্ব চীনের শানতোং প্রদেশের কৃষকরা এখন শরৎ-হেমন্তকালীন ফসল ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। স্মার্ট পদ্ধতি, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শরৎ-হেমন্তকালীন ফসলের ৮০ শতাংশ এর মধ্যেই ঘরে তোলা হয়ে গেছে। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ফসল তোলার কাজ স্বচ্ছন্দ গতিতে এগিয়ে চলছে।

বিভিন্ন রকম প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নততর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসল সংগ্রহকে বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলছে।

শানতোং প্রাদেশিক বিভাগ, কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়ের কমকর্তা ছি ফাং বলেন, ‘শরৎকালীন ফসল ঘরে তোলার কঠিন সময়ে ১৮ হাজার কৃষি বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদ সরাসরি মাঠে নেমে কৃষকদের নির্দেশনা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এই সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ২৩২ মিলিয়ন ইউয়ান ফান্ড বরাদ্দ করা হয়েছে, ১৩০ মিলিয়ন মু বা ৮.৭ মিলিয়ন হেকটর জমিতে কীটনাশক দেয়া হচ্ছে যেন শরৎকালীন বাম্পার ফলন নিশ্চিত করা যায়। ’

মাঠে মাঠে ঘুরে কৃষিবিশেষজ্ঞরা যেমন প্রত্যক্ষভাবে কৃষকদের সহায়তা করছেন তেমনি ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে কীটনাশক ছিটিয়ে রক্ষা করা হচ্ছে ফসলকে। গত তিন বছর ধরে শানতোং প্রদেশের শস্যর পরিমাণ ৫৫ বিলিয়ন কিলোগ্রামের উপরে রয়েছে। হারভেস্টার মেশিনগুলো ক্ষেত থেকে ফসল তুলছে দ্রুত ও কার্যকরভাবে।

ছি ফাং জানান, ‘এই প্রদেশে ২৯৫ মিলিয়ন ইউয়ান কৃষি প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে। ভুট্টার জন্য  পাঁচ ধরনের প্রধান প্রযুক্তির নকশা করা হয়েছে। এর সুফল ফলেছে। প্রকল্প এলাকায় প্রতি ইউনিটে ১০ শতাংশের বেশি ফসল পাওয়া গেছে।’

ভুট্টার ফসল সংগ্রহে হারভেস্টারগুলো কাজ করে যাচ্ছে। শানতোং প্রদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য লবণাক্ত-ক্ষারযুক্ত জমিকে কৃষিউপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে প্রদেশের ১ লাখ ৪০ হাজার মু বা ৯ হাজার ৩শ হেকটর লবণাক্ত-ক্ষারযুক্ত জমিকে উন্নত করে কৃষি উপযোগী করা হয়েছে।

বৃষ্টি বা বন্যার পানিতে সার ধুয়ে গেলে সমস্যা হয়। আগে সার প্রয়োগের পুরনো পদ্ধতিতে কৃষকদের এই সমস্যা ভোগ করতে হতো

লি ইয়ানছিয়াং একজন কৃষক। তিনি বলেন, ‘"বন্যা প্লাবিত এবং বৃষ্টি ধোয়ার পরে, সারের একটি বড় অংশ ধুয়ে গেছে বা মাটির গভীরে তলিয়ে গেছে, যার ফলে আনুমানিক ব্যবহারের হার মাত্র ৩০ শতাংশ।"

এজন্য গাছের গোড়ায় বিশেষভাবে সার প্রয়োগের প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। এছাড়া লবণাক্ত-ক্ষারযুক্ত জমিতে বেড়ে উঠতে পারে এমন বিশেষ জাতের ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। ছয় বছর ধরে এমন বিশেষ জাতের ভুট্টার চাষ পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। স্থানীয় কৃষকরা আগের জাতের চেয়ে নতুন জাতের ভুট্টা চাষে  প্রতি হেকটর জমি থেকে গড়ে ১৫০০ কিলোগ্রাম বেশি ফসল পাচ্ছেন।

ঠিক বেড়ে ওঠার সময় ড্রিপ পদ্ধতিতে জলসেচ এবং সার প্রয়োগ করলে বেশি ফল দেয়।

লি কুয়োফাং একজন কৃষি প্রযুক্তিবিদ। তিনি বলেন, "এটি ভুট্টার জন্য নিষিক্তকরণ পদ্ধতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন চিহ্নিত করে, কার্যকরভাবে ভুট্টার পরবর্তী বৃদ্ধির পর্যায়ে পুষ্টির ক্ষতির সমস্যা সমাধান করে এবং সাশ্রয়ী ফলন বৃদ্ধি অর্জন করে।"

শানতোং প্রদেশের তরুণ কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ভালো ফসল পাচ্ছেন। স্থানীয় একজন তরুণ  কৃষক ইয়াং বিন। তার মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি রয়েছে। তিনি আধুনিক কৃষি যন্ত্রকে আরও উপযোগী করে গড়ে তোলার কাজে আনন্দ পান। পাশাপাশি নিজের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তির জ্ঞানকে কাছে লাগিয়ে অন্য কৃষকদের সহায়তা করেন।

ইয়াং বিন বলেন,  "আমি পার্ট-টাইম থেকে ফুল-টাইম কাজে গিয়েছিলাম এবং 'জাওচুয়াং এগ্রিকালচারাল সার্ভিস' দলের নেতা হয়েছি। খামারের সরঞ্জাম এবং উড়ন্ত ড্রোন পরিচালনা ও মেরামত করার পাশাপাশি, আমি কাজের অনুরোধগুলো গ্রহণ করি, কাজগুলো বরাদ্দ করি এবং দল পরিচালনা করি। এটা ক্লান্তিকর, কিন্তু আমার দলের সাথে কাজ করার ফলে আমি যখন একা কাজ করতাম সেই তুলনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার ক্ষমতা এবং ক্ষেত্র অনেক প্রসারিত হয়েছে।”

আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহারে শানতোং প্রদেশে ফসলের ফলন বেড়েছে। দ্রুতগতিতে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে ফসল তোলার কাজ।

শান্তা/ নাহার