ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের ১৬তম শীর্ষ সম্মেলন গত ২২ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রিকসের ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের পর এটি ছিল সংস্থাটির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। বহু বিদেশী তথ্য মাধ্যম উল্লেখ করে, বিশ্ব মঞ্চে ব্রিকস সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার প্রভাবশক্তি দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ‘গ্লোবল সাউথে’র বড় জোট হিসেবে ব্রিকস বিশ্বের বহুমেরুকরণ ও অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন বেগবান করতে অবদান রাখবে।
২০২৪ সাল ‘বড় ব্রিকস’ সহযোগিতার উদ্বোধনী বছর।
জিম্বাবুয়ে’র ‘হেরাল্ড’ পত্রিকা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানায়, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের ১৬তম শীর্ষ সম্মেলন আফ্রিকা মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিশ্ব প্রশাসন সংস্কার এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা জোরদার করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সরবরাহ করবে।
কিউবার প্রধান তথ্য মাধ্যম ‘কিউবা ডিবেট’ ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিশ্ব মঞ্চে ব্রিকস সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার প্রভাব শক্তি দিন দিন শক্তিশালি হয়ে উঠছে। স্পেনের সাংবাদিক ইগনাসিও ল্যামোনেট পত্রিকায় বলেছেন, বেশ কিছু ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশ ব্রিকস দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করতে চায়। তাঁর প্রবন্ধে বলা হয়, আংশিক সহযোগিতা ইইউ-ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে গঠনমূলক সংলাপ চালানোর জন্য সুষ্ঠু সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে।
রাশিয়ার স্পুটনিকে এক সাক্ষাত্কারে বলা হয়, ব্রিকস সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা হলো ‘গ্লোবাল সাউথ’ গভীরভাবে বিশ্ব প্রশাসনে অংশ নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম এবং প্রধান পদক্ষেপ। ব্রিকস দেশগুলো এবং ‘গ্লোবাল সাউথে’র প্রাকৃতিক হৃদয়ানুভূতি সংযোগস্থল এবং ব্যাপক অভিন্ন স্বার্থ আছে। সদস্য সম্প্রসারণের পর ব্রিকস আরো বেশি করে ‘গ্লোবাল সাউথে’র অভিন্ন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।
মার্কিন তথ্য মাধ্যমের খবরে বলা হয়, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বেগবানে ব্রিকস দেশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। বিশেষ করে, ‘গ্লোবাল সাউথে’র জন্য।
তুরস্কের ‘ডেইলি সাবাহ’ বলছে, চীনের উত্থাপিত যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ’ নির্মাণ ইত্যাদি, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আরো বেশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করেছে। বর্তমানে বিশ্ব প্রশাসন ব্যবস্থা বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, কিন্তু ব্রিকস দেশগুলো আরো ইতিবাচকভাবে বহুমেরুকরণ বিশ্ব শৃঙ্খলার উদ্যোগ নিচ্ছে।
ইউরোপের ‘আধুনিক কূটনীতি’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রবন্ধে বলা হয়, চীন বিশ্ব অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন এবং স্থিতিশীল শক্তিতে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করার সময় চীন সবসময় সমান সহযোগিতা এবং শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন ধারণা পোষণ করে, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য ও সহযোগিতা বেগবান করতে থাকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘মেইল ও গার্ডিয়ানে’ বলা হয়, চীন ‘গ্লোবাল সাউথে’র চাহিদা পূরণ করা সহযোগিতা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালায়। চীনের মতো ব্রিকস দেশগুলো অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের ওপর মনোযোগ দেয়, রকমারি উদ্যোগ নেয় এবং অমিল পাশে রেখে মিল অন্বেষণ করে, সত্যিকারভাবে বিশ্ব সহযোগিতার সুপ্তশক্তি প্রদর্শন করেছে। (প্রেমা/হাশিম)