‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব- ৯১
2024-10-22 16:42:41

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে

১। চীন দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশী তরুণ

২। শীতকালীন পর্যটনে আকৃষ্ট করতে সিচাংয়ের বিশেষ উদ্যোগ

 

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।  

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ৯১ তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।

 

১। সাক্ষাৎকার পর্ব- চীন দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশী তরুণ

বাংলাদেশের তরুণ অন্তর সূত্রধর। বর্তমানে পড়ছেন চীনের ইয়ুননান প্রদেশে অবস্থিত ইয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ে চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচার বিভাগে পড়ছেন তিনি। ঘুরে বেড়াইয়ের এবারের পর্বে চীন ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

 

১. ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠানে আপনাকে স্বাগতম। কেমন আছেন আপনি?

অন্তর- আমি ভালো আছি।

 ২. আপনি তো চীনে পড়ালেখা করছেন সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে।পড়ালেখার পাশাপাশি , নিশ্চয়ই অনেক জায়গায় ঘুরার সুযোগ হয়েছে । আমরা জানতে চাই আপনি কোথায় কোথায় গিয়েছেন?

·      অন্তর- পড়ালেখার পাশাপাশি আমার কয়েকটা জায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং আমি কিছুদিন আগে বাংলাদেশের নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় একজন টিচার আমাকে বলেছিলেন তুমি যদি চায়না যাও আমি তাহলে তোমার সাথে সেখানে গিয়ে দেখা করবো। তো কিছুদিন আগে তিনি এসেছিলেন, আমার সাথে দেখা করেছেন। উনার সুবাদে আমার চীনের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরার সুযোগ হয়েছে।  এ ছাড়া আমাদের ইয়ুননান ইউনিভার্সিটির দুইটি ক্যাম্পাস রয়েছে। আমি দুইটি ক্যাম্পাসেই ঘুরেছি। তাছাড়া আমি ইউনিভার্সিটির পাশে সুইহুই পার্কেও ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমি চীনা শিক্ষকের সঙ্গে থিয়ানছি লেক এবং লইহুই পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলাম। 

 

 ৩. এই জায়গাগুলোতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

·      অন্তর-  চায়নার এই জায়গাগুলোতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিল। আমি যেরকমটা চিন্তা করে এসেছিলাম আমার চিন্তার বাইরেও আমি সুন্দর দেখেছি। অনেক সাজানো গোছানো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখেছি আমি। আমার নিজের চোখে এতো সুন্দর জায়গা দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে।

 

 

৪. চীন একটি ভিন্ন সংস্কৃতি, তাদের খাবার ভিন্ন, ভাষাও ভিন্ন কিভাবে এই দীর্ঘ সময় সেখানে কিভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন?

·      অন্তর- চীন আর বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে অনেক মিল আছে। বাংলাদেশের যেকোন উৎসবে সবাই পরিবারের সাথে আনন্দ উৎসব কাটায়। ঠিক চীনের যেকোন বড় উৎসবে পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পছন্দ করে। তাই এই সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নিতে একদম সমস্যা হচ্ছে না।  আর খাবারের ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা আছে। এখানে মশলা জাতীয় খাবার খুব কম। তাই বাংলাদেশের খাবারকেও মাজেমধ্যে মিস করি। আর ভাষার ক্ষেত্রে আমার কোন সমস্যা হচ্ছে না। কেননা বাংলাদেশ থেকে আমি চীনা ভাষা শিখে এসেছি। আর চীনারা অনেক স্মার্ট । তারা তাদের ভাষাকে অনেক সম্মান করে। পাশাপাশি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইংরেজি ভাষাও রপ্ত করেছেন চীনারা।

 

৫. বাংলাদেশের অনেকেই আছে যারা চীনে ঘুরতে যেতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যে আপনি কী বলবেন?

·      অন্তর- আমি বাঙ্গলাদেশিদের বলবো, চীন অনেক সুন্দর জায়গা ।আপনারা চীন ঘুরতে আসুন। পারলে চীনে পড়তে আসুন। চীনে আসলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি চীনাদের জীবনধারা দেখেও মুগ্ধ হবেন।

 

৬. আমাদের অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।

·      অন্তর- আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।

 

সাক্ষাৎকার গ্রহণ- আফরিন মিম

 

২। শীতকালীন পর্যটনে আকৃষ্ট করতে সিচাংয়ের বিশেষ উদ্যোগ

 

দক্ষিণ পশ্চিম চীনের সিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চীনের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ। আর এই বছরের শীতকালীন ভ্রমণকে আরও মানুষের কাছের জনপ্রিয় করে তুলতে সম্প্রতি শুরু হয়েছে  প্রমোশনাল ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইনে রয়েছে টিকেটের উপর বিশেষ ছাড়, হোটেল ভাউচার এবং পর্যটকদের জন্য ফ্রি এন্ট্রির সুবিধা। ফলে আরও বেশি পর্যটককে অফ পিক সিজনে ভ্রমনে আগ্রহী করে তুলছে।

      

  


“উইন্টার ট্যুর ইন সিচাং” এর ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে, সিচাং কর্তৃপক্ষ অফার করছে ১০ হাজার ডোমেস্টিক বিমান টিকেটের উপর “বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার”। যা লটারির মাধ্যমে পাবেন ভাগ্যবানরা। ইতিমধ্যেই সেখানে ভ্রমণের জন্য ১০ হাজার স্থানীয় ট্রেনের টিকেট ফ্রি দেয়া হয়েছে। সেই সাথে পর্যটনের হটস্পটগুলোর উন্নত মানের হোটেলগুলোতে থাকার জন্য রয়েছে ফ্রি টিকিট এবং ভাউচারের ব্যাবস্থা।   

পাশাপাশি, ফ্যামিলি ট্যুর ও প্রবীণ ভ্রমণকারীদের জন্য রয়েছে তাদের ব্যায়ের উপর বিশেষ ভাউচার। সেই সাথে, এ ক্যাটাগরির পর্যটনস্থানগুলোও নানান অফারের সুযোগ করে দিয়েছে।   থ্রি স্টার এবং উন্নতমানের হোটেল, বুটিক শপ, রেস্টুরেন্ট এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোও দিচ্ছে  অফ পিক রেইট। যা পিক সিজনের মূল্যের চেয়ে অনেক কম। পর্যটন পরিবহন সংস্থা নির্ধারিত যাত্রী পরিবহনের ভাড়াও পিক সিজনের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও কম।   

পুরো বছর জুড়ে একটি ধারাবাহিক পর্যটন বজায় রাখার লক্ষ্য নিয়ে গেল শুক্রবার “উইন্টার ট্যুর ইন সিচাং” ক্যাম্পেইনের ঘোষণা করে পর্যটন কর্তৃপক্ষ। সিচাংয়ের রাজধানী লাসায় স্থানীয় পর্যটন কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেয়।  তাদের এই প্রোমোশন চলবে আগামী বছরের মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে। সিচাংয়ের এই পর্যটন ক্যাম্পেইন ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়ে এবার ৭ম বছরে পা দিয়েছে। 

এছাড়া স্থানীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন বিভাগ অন্য অঞ্চল ও শহরের কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথভাবে নানান চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। স্থানীয় ট্রাভেল অপারেটররাও অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড এবং জার্মানির মতো দেশগুলোর আন্তর্জাতিক ট্যুর অপারেটরদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে।   


পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের বাড়ি সিচাং সমৃদ্ধ পর্যটনের জন্য। সেখানে রয়েছে  সুবিশাল পাহাড়, নদী, বিস্তীর্ণ তৃণভূমি,বন এবং একটি গভীর জাতিগত ঐতিহ্য।  

২০২৩ সালে, সিচাং ভ্রমণ করেছে ৫৫ দশমিক ১৭ মিলিয়ন পর্যটক। যা প্রতি বছর ৮৩ দশমিক ৭ শতাংশ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ট্যুরিজম খাতে কর্তৃপক্ষ আয় করছে ৬৫ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।    

 

প্রতিবেদন- হোসনে মোবারক সৌরভ

সম্পাদনা-  আফরিন মিম

 

 

ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও প্রযোজনা - আফরিন মিম

অডিও সম্পাদনা- রফিক বিপুল

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী