বন্ধুরা, আজকে যে ছেং ইয়ু আমরা শিখাবো তা হল ‘凿壁偷光’। শব্দটি চীনের সিহান রাজবংশের একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক খুয়াং হ্যং’র সঙ্গে জড়িত।
খুয়াং হ্যং একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অন্যান্য শিশুর মত শিক্ষকের কাছে পড়ালেখা করতে পারেন। তবে, পরিবার খুব দরিদ্র হওয়ায় তাকে স্কুলে পাঠাতে পারে না। খুয়াং হ্যং প্রতিদিন স্কুলের বাইরে ক্লাসরুমে ছাত্রদের বই পড়ার শব্দ শোনেন। তার একজন চাচা দেখেছে খুয়াং হ্যং পড়তে এত পছন্দ করে, তাই তিনি তাকে অক্ষর শিখান। ধীরে ধীরে খুয়াং হ্যং নিজে বই পড়তে পারেন।
খুয়াং হ্যংয়ের বই কেনার কোনো টাকা নেই। তাই বই পড়ার জন্য তাকে অন্যদের কাছ থেকে বই ধার করতে হয়। তিনি শুনেছেন গ্রামের একটি ধনী পরিবারে অনেক বই আছে। তাই তিনি তার মালিককে বলেন, আমি আপনার জন্য কাজ করতে পারি, আমি কোনো মজুরি চাই না, শুধু আপনার বইগুলো ধার নিতে চাই। মালিক রাজি হন, খুয়াং হ্যং এভাবে অনেক বই পড়ার সুযোগ পান।
বড় হওয়ার পর খুয়াং হ্যং প্রতিদিন দিনে পরিশ্রমের কাজ করেন, শুধু বিশ্রামের সময় কিছুক্ষণ বই পড়ার সুযোগ পায়। তেলের বাতি কেনার টাকা নেই, তাই রাতে সময় পেলেও তিনি বই পড়তে পারেন না। তাই একটি বই পড়া শেষ করতে তার অর্ধেক মাসেরও বেশি সময় লাগত। এক দিন রাতে যখন খুয়াং হ্যং বাড়িতে ফিরছিলেন, তখন তিনি আবিষ্কার করেন দেয়ালে একটি ছোট গর্ত আছে, দেয়ালের ওই পাশে, প্রতিবেশীর ঘরে বাতি জ্বলছে। তিনি হঠাত ভাবেন, আমি প্রতিবেশীর ‘আলো’ ধার নিতে পারি! খুয়াং হ্যং দেয়ালের সেই গর্ত একটু বড় করেন, বাতির আলো সেই গর্ত দিয়ে আসে। তিনি সেই হালকা আলোয় বই পড়তে শুরু করেন। এভাবেই খুয়াং হ্যং প্রচুর বই পড়েছেন, পরে তিনি জাতীয় পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে সরকারে প্রবেশ করেছেন। গভীর জ্ঞান ও পরিশ্রমী চেতনার জন্য খুয়াং হ্যং পদোন্নতি পতে থাকেন, অবশেষে সিহানের প্রধানমন্ত্রীও হন। তার গল্প অনেক মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার বই পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে এসেছে ছেং ইয়ু ‘凿壁偷光’, এর আক্ষরিক অর্থ হল ‘দেয়ালে গর্ত তৈরি করে পাশের আলো ধার নেওয়া’। পরে চীনারা এই শব্দটি দিয়ে ‘পরিবার দরিদ্র হলেও খুব পরিশ্রমী করে বই পড়ার’ কথা বর্ণনা করে।