ভিয়েতনামের শিল্প রূপান্তর ও আপগ্রেডে সহায়তা দেয় চীনা ব্র্যান্ড
2024-10-21 10:33:16

 “প্রথম ১৮ মাস কোন মুনাফা ছিল না।” টিসিএল এশিয়া প্যাসিফিক মার্কেটিং সদর দপ্তরের ভিয়েতনাম শাখা কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার তিং ওয়ে এমন কথায় প্রতিষ্ঠানটির ভিয়েতনামে উন্নয়নের প্রাথমিক দিকের পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। স্থানীয় পণ্যভোগীদের জন্য দর্জি পণ্য তৈরি করার মাধ্যমে চীনা প্রতিষ্ঠানটি যথাক্রমে ভিয়েতনাম বাজারের স্বীকৃতি পেয়ে স্থানীয় শিল্প রূপান্তর ও আপগ্রেডে সহায়তা দেবার পাশাপাশি ভিয়েতনাম অংশীদারের সঙ্গে হাতে হাত রেখে আন্তর্জাতিক বাজারে এগিয়ে যাচ্ছে।

১৯৯৯ সালে টিসিএল বিদেশে তাদের প্রথম হিসেবে ভিয়েতনামের ডং নাই প্রদেশে রঙিন টিভি উত্পাদন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে। সে সময় দেশটিতে টিসিএল ব্র্যান্ডের পরিচিতি প্রায় শূণ্য ছিল।


তিং ওয়ে ব্যাখ্যা করেন, ভিয়েতনাম বাজার পেতে কোম্পানি গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়েছে। কোম্পানির কর্মী মোটরসাইকেলের মাধ্যমে এক একটি টেলিভিশন বহন করে, গ্রাম ও পরিবারে গিয়ে ‘শহরকে ঘিরে গ্রামাঞ্চল’ কৌশলে অব্যাহতভাবে বাজার সম্প্রসারণ করে।


বর্তমানে ভিয়েতনামে টিসিএল ব্যাপকভাবে পরিচিত। ২০২৩ সালে ব্র্যান্ডটি ভিয়েতনাম বাজারের ১৪.৪ শতাংশ দখল করে, স্থানীয় টিভি বাজারের প্রথম শ্রেণীতে রয়েছে।

এ সাফল্যের পিছনে রয়েছে টিসিএল ‘ভিয়েতনাম উত্পাদন’ ক্ষমতার গুণমান আপগ্রেডিং। ২০১৯ সালে বার্ষিক উত্পাদন ক্ষমতা ২ লাখের ডং নাই কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের জন্য কয়েক মিলিয়ন  উত্পাদন ক্ষমতার বিন দুং কারখানা চালু করে। ২০২২ সালে নতুন কারখানাটি কোটিতম পণ্য উৎপাদনের মাইলফলক অর্জন করে।


টিসিএল ভিয়েতনামের অংশীদারের সঙ্গে বিশ্ব বাজারে যাওয়া হলো চীনা প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামের ইলেকট্রনিক শিল্পে গভীর সম্পৃক্ততার সূচক।  ভিয়েতনামের সাধারণ পরিসংখ্যান অফিসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে, ইলেকট্রনিক, কম্পিউটার ও খুচরা যন্ত্রাংশের রপ্তানিতে দেশটির ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি করা ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম স্থান পায়। পাঁচ বছর আগে, শাংহাই গ্রেটওয়ে’র ভিয়েতনাম তালওয়ে ভিয়েতনাম কোম্পানি লিমিটেড দেশটির উত্তরাঞ্চলে ‘ভিয়েতনাম উত্পাদন’ পথে এসে, গাড়ি স্টার্টিং ব্যাটারি তার এবং বহুমুখী গাড়ী জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাটারি ইত্যাদি পণ্য উত্পাদন শুরু করে।

উভয়ের জয় হলো চীনা ও ভিয়েতনাম প্রতিষ্ঠান হাতে হাত রেখে বিশ্ববাজারে যাবার প্রধান সুর। কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার ইয়াং ইয়ং বলেন, ২০২০ সালে কোম্পানির উত্পাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালে ভিয়েতনামের স্থানীয় ক্রয় হার ৩০ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালে ছিল ৩৫ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। অনুমান করা হচ্ছে, দ্বিতীয়ার্ধে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হবে।

ভিয়েতনামের পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ মন্ত্রণালয়ের বিদেশী বিনিয়োগ ব্যুরোর উপ-প্রধান এনগুয়েন আনহ তুয়ান বলেন, ২০০৮ সালে ভিয়েতনাম ও চীন সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা সবসময় দু’দেশের সম্পর্কের উজ্জ্বল বিষয়। তিনি আশা করেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা সহযোগিতার মাত্রা বাড়িয়ে ভিয়েতনামের বিশেষ করে, মাঝারি ও ছোট প্রতিষ্ঠানের আরো গভীরভাবে বিশ্ব মূল্যচেইন যোগাতে সহায়তা দেবে।


ভবিষ্যত সম্পর্কে টিসিএল-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট লি তোংশেং বলেন, চীনা প্রতিষ্ঠানের বিশ্বায়ন পণ্য রপ্তানি থেকে স্থানীয়দের সাথে যৌথভাবে শিল্প নির্মাণে স্থানান্তর করতে হবে। শুধু স্থানীয় এলাকায় দৃঢ়ভিত্তি গড়তে পারলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা-ক্ষমতা দৃঢ় হবে এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক সমাজের জন্য অবদান রাখা যাবে এবং আরো ভালোভাবে চীনা প্রতিষ্ঠানের নিজেদের বিশ্বায়ন উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে। (প্রেমা/হাশিম)