চীনে তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় হচ্ছে টেনিস
2024-10-20 17:04:17

অক্টোবর ২০, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনা টেনিস খেলোয়াড়রা এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ নাম করেছেন। তারকাদের দেখাদেখি টেনিস খেলায় এখন বেশ ভালোভাবেই উদ্দীপিত হয়েছে দেশটির তরুণরা। তাদের অনেকে এখন টেনিস খেলছে, খেলা শিখছে এবং এতে পেশাদার ক্যারিয়ার গড়তেও উৎসাহ পাচ্ছে। অন্যদিকে চীনের টেনিস খেলার সুযোগ-সুবিধা ও টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে প্রশংসা করেছেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ।

 

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জ্বলজ্বল করে চলেছেন চীনা টেনিস খেলোয়াড়রা। টেনিস জ্বর এখন গ্রাস করেছে চীনের তরুণ প্রজন্মকেও। দেশটিতে এখন অনেক তরুণ টেনিস শিখতে শুরু করেছেন, পেশাদার ক্যারিয়ার গড়তেও পাচ্ছেন উৎসাহ।

 

 

বেইজিংয়ের একটি টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একদিন ভিড় করতে দেখা যায় কিশোর-কিশোরীদের। সেদিন তাদের কোচ জানালেন, নির্ধারিত সমস্ত প্রশিক্ষণ আগে থেকেই বুক করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টের জনপ্রিয়তার কারণে তার প্রশিক্ষণও এখন জমজমাট।

 

 

বেইজিংয়ের টেনিস প্রশিক্ষক চাং হাও বললেন, ‘আগস্টে চীনের টেনি তারকা চেং ছিনওয়েনের সোনাজয়ের পর থেকে, গত বছরের তুলনায় টেনিস শিখতে আসা তরুণের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। চাহিদা মেটাতে, আমরা আরও দুটি ক্যাম্পাস খুলেছি এবং দশ জনেরও বেশি নতুন কোচ নিয়োগ দিয়েছি।’

 

 

এই গ্রীষ্মে প্যারিস অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণ জিতেছেন চেং। তার কারণে চীনের টেনিস বাজার পেয়েছে শক্তিশালী প্রেরণা। সম্প্রতি বেইজিং-এ চায়না ওপেন টেনিস টুর্নামেন্টও জাগিয়ে তুলেছে উদ্দীপনার নতুন তরঙ্গ।

 

১৬ বছর বয়সী তং পেইয়েন ইতোমধ্যেই চীনের পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হয়েছেন। টেনিসের দক্ষতার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ফলোয়ার এখন এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি। তং জানালেন, এখন অনেক তরুণ টেনিস খেলতে শিখছে এবং অনেকেই এ খেলায় পেশাদার ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখছে।

 

আরেক উদীয়মান তারকা ১৬ বছর বয়সী খং ওয়েই। চায়না ওপেনে চেংয়ের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন তিনি। চায়না ওপেন জুনিয়র প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পেয়েছিলেন।

 

জুনিয়র টেনিস খেলোয়াড় খং ওয়েই জানালেন, ‘আজ আমি দারুণ অনুভব করছি। ভালো অনুশীলন করেছি। ম্যাচের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হয় এবং কী করে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখতে হয় সেটা পেশাদার খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শিখবো।’

 

খং বিশ্বাস করেন, একজন বড় মাপের পেশাদার খেলোয়াড় হতে কেবল প্রতিভা নয়, আরও বেশি কিছু প্রয়োজন। বিশেষ করে পদ্ধতিগত প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন তিনি।

 

এদিকে চীনে টেনিসের যে ভেনু এবং উচ্চপর্যায়ের আয়োজন দেখা যায় তা চীনের তরুণ খেলোয়াড়দের সফলতার পথ দেখাবে বলে বিশ্বাস করেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ।

এবারের প্যারিস অলিম্পিকে সোনাজয়ী এ তারকা গ্র্যান্ড স্ল্যামসহ, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনসহ ৯৯টি সিঙ্গেল টাইটেল জিতেছেন।

 

নোভাক জোকোভিচ জানালেন, ‘আমি সবসময় চীনে এসে খেলা উপভোগ করি। ২০০৮ সালে এখানে প্রথম মাস্টার্স কাপ জিতেছি। শাংহাইয়ে রোলেক্স মাস্টার্স ১০০০ ইভেন্টের আরও চারটি শিরোপা জিতেছি। এই বছরও ট্রফির জন্য লড়াই করবো।’

 

ছেং ছিনওয়েন বা চাং চিচেনের মতো চীনা টেনিস খেলোয়াড়দের অগ্রগতির প্রসঙ্গে  জোকোভিচ উল্লেখ করেছেন, চীনা খেলোয়াড়দের মধ্যে চেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই।

 

নোভাক জোকোভিচ আরও জানালেন, ‘চীনা টেনিস খেলোয়াড়রা খুব মনোযোগী। তারা প্রশিক্ষণ নিতে চায়, তারা অনেক চেষ্টা করে। আমি নিশ্চিতভাবে আরও চাইনিজ খেলোয়াড় দেখতে চাই। তাদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।’

 

আইমিডিয়া রিসার্চের জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বিশ্বে টেনিস কোর্টের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন। ধারণা করা হচ্ছে চীনে টেনিস খেলোয়াড়ের সংখ্যা বছরের শেষ নাগাদ ২ কোটি ৩৮ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। যা বিশ্বের মোট খেলোয়াড়ের চার ভাগের এক ভাগ।

 

জোকোভিচ বলেছেন, বিশ্বের অন্যতম সুন্দর টেনিস স্টেডিয়ামগুলো চীনেই আছে। টানা কয়েক মাস ধরে উচ্চপর্যায়ের অনেক টুর্নামেন্ট হয়েছে চীনজুড়ে। এ  ব্যাপারটিও চীনা খেলোয়াড়দের জন্য বড় অনুপ্রেরণার উৎস হবে বলে মনে করেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা।

 

 

ফয়সল/শান্তা

 

তথ্য ও ছবি: সিসিটিভি