আজকের ডিজিটাল যুগে, যখন আপনার আঙুলের ডগা স্ক্রীনে স্পর্শ করে, তখন তাত্ক্ষণিকভাবে আপনার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন। আপনার হাতে লেখা চিঠিগুলোর উষ্ণতা কি এখনও মনে আছে? সময় এবং স্থানের মধ্য দিয়ে আমরা লজিস্টিক নেটওয়ার্কের পরিবর্তিত সময়গুলো অন্বেষণ করি...
এক সময় একটি পেশা ছিল যেটি যেখানেই যেত সেখানেই মানুষের প্রত্যাশার দৃষ্টি আকর্ষণ করত। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর মানুষের সেবা করার ক্ষেত্রে ডাক সংস্থাকে একটি নতুন মিশন দেওয়া হয়েছে। গাঢ় সবুজ মেইলবক্সটি ‘পিপলস পোস্টাল সার্ভিসে’র প্রতিশ্রুতি দিয়ে খোদাই করা হয়েছে এবং তথ্য সঞ্চালনের সূচনা বিন্দু হয়ে উঠেছে।
সেই সময়ে দেশের ৭ লাখ ৬ হাজার কিলোমিটার ডাক রুটের মধ্যে মাত্র এক দশমাংশ মোটরচালিত পরিবহন ব্যবহার করতে পারত। বাকি দূরত্বের জন্য পোস্টম্যানরা কেবল ঘোড়ায় চড়া, বাইসাইকেল বা এমনকি হাঁটার মাধ্যমে পাহাড় এবং নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিটি চিঠি দূরবর্তী স্থানে পৌঁছাতেন।
কয়েক দশকে, ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত পোস্টাল আউটলেটের সংখ্যা গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়। তথ্য প্রচার নেটওয়ার্কও ক্রমবর্ধমানভাবে ঘন হয়ে উঠছিল এবং আরও বেশি মানুষকে সংযুক্ত করছে।
সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের হাওয়ায়, জনগণের চিঠিগুলো কেবল পাহাড় এবং নদী অতিক্রমই করেনি, বরং ডাক সংস্থাটি উদ্ভাবনীভাবে একটি আন্তর্জাতিক এক্সপ্রেস ডেলিভারি পরিষেবা চালু করেছে।
আজ নতুন যুগে, পোস্টাল পরিষেবা এবং লজিস্টিকস সম্পর্কিত ৬০ লাখেরও বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেলা থেকে গ্রাম পর্যন্ত নিখিল চীনে ৪.৩ লাখ গ্রাম-স্তরের বিস্তৃত সুবিধাজনক পরিষেবা স্টেশন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এক্সপ্রেস ডেলিভারি পরিষেবার সুবিধা ভোগ করতে পারছেন।
যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বিকাশের সাথে, মানুষের মধ্যে চিঠিপত্রের আদান-প্রদান অনেক কমে গেছে। একটি দ্রুতগতির জীবনধারা হয়ে উঠেছে। ‘অনলাইনে অর্ডার করুন এবং এটি আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে’—এমন নতুন পদ্ধতি গঠিত হয়। বিশেষ করে নতুন যুগের পর থেকে চীনে এক্সপ্রেস ডেলিভারি পরিমাণ ২০১৩ সালের ৯২০ কোটি আইটেম থেকে ২০২৩ সালে বেড়ে, ১৩ হাজার ২০০ কোটি আইটেমে দাঁড়িয়েছে, যা ১৩ গুণ বেড়ে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে।
৮ লাখ ৭০ হাজার ডাক কর্মী এবং ৪৫ লাখ এক্সপ্রেস ডেলিভারি কর্মচারী প্রতিটি প্যাকেজ সময়মতো পৌঁছানো নিশ্চিত করতে দিনরাত রাস্তায় রয়েছেন। কোল্ড চেইন পরিবহন, বুদ্ধিমান বাছাই এবং ড্রোন ডেলিভারির মতো উচ্চ-প্রযুক্তির পরিবহন সরঞ্জামগুলোর ব্যবহারে কৃষি পণ্যগুলো শহুরে বাজারে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। যে প্যাকেজগুলো একবার বিতরণ করতে দশ দিনের বেশি সময় লাগতো, সেগুলো এখন মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারে। ‘ধীরগতির গাড়ি এবং ঘোড়া’র যুগটি এখন অতীতের জিনিস হয়ে উঠেছে। পরিবর্তে দক্ষতা, সুবিধা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়ার একটি নতুন যুগ প্রতিস্থাপিত হয়েছে, যা সকল মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আদর্শ হয়ে উঠেছে।
আজ যখন আমরা সেই সবুজ মেলবক্স’র কথা ভাবি, যেগুলো একসময় অদৃশ্য হয়ে যাবে বলে ভাবা হয়েছিল, তারা এখনও তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে এবং এখনও সারা দেশে প্রায় ১ লাখের বেশি মেইলবক্স রয়েছে, যা অতীত এবং বর্তমানকে সংযুক্ত করে এবং স্মৃতি এবং আবেগ বহন করে, সে সব দীর্ঘ সময়ের জন্য তরতাজা থাকবে।