আইসক্রিমে চীনের ‘মিষ্টি ব্যবসার সুযোগ’ খুঁজে বের করে বিদেশী ব্যবসায়ীরা
2024-10-14 11:18:13

২৬তম চীন আইসক্রিম ও হিমায়িত খাদ্য শিল্প মেলা গত ২৬ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর চীনের থিয়ানচিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলাটিতে সার্বিকভাবে আইসক্রিম খাতে সর্বশেষ পণ্য এবং উদ্ভাবনী ফলাফল প্রদর্শিত হয়। বিশ্বের ৫৬টি দেশের প্রায় এক হাজার অতিথি ব্যবসায়ী এতে অংশ নেন।

স্পেনের একটি আইসক্রিম উপকরণ সরবরাহকারী আলবার্ট ভেগা ডুরান জানান, তারা ধারাবাহিক ১০ বছর ধরে মেলায় অংশ নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা চীনা বাজারের পরিবর্তন দেখেছেন, আরো বেশি অর্ডার অর্জন করতে তাদের পণ্য আপগ্রেড করছেন। চীনা সুপারমার্কেট ও রেস্তোঁরা জরিপ অনুযায়ী, তারা দেখতে পেয়েছেন, চীনা মানুষ নিম্ন ক্যালরী জীবনযাপনের প্রণালী অন্বেষণ করে, ছোট আকার এবং অল্প পরিমাণের আইসক্রিম চীনে একটি প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

চীন হলো বিশ্ব আইসক্রিম উত্পাদনের পরিমাণ ও ধরনে বড় দেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইসক্রিমের সম্পূর্ণ শিল্প চেইন অব্যাহতভাবে উন্নীত হচ্ছে। দেশটির জনগণের সুস্থ খাদ্যতালিকাগত ধারণা অনুসারে পণ্য উদ্ভাবিত হয়ে থাকে।

সুইডেনের টেট্রাপ্যাক হলো আইসক্রিমের মতো প্রস্তুতকৃত খাদ্য ও প্যাকেজিং সমাধান পরিকল্পনা প্রদানকারী। কোম্পানির আইসক্রিম উপকরণ মার্কেটিং ম্যানেজার জেং ওয়েনছি জানান, সাধারণত একটি আইসক্রিমের ওজন ৭০ গ্রাম। এখন চীনের অনেক উত্পাদনকারী ৪০ গ্রামের আইসক্রিম উত্পাদন করে। আরো ছোট সাইজ আছে, এক কামড়ে একটা শেষ করা যায়। এ কৌশলের লক্ষ্য হলো একসঙ্গে বেশি ক্যালরি গ্রহণ না করা।

চীনের আইসক্রিম ও হিমায়িত খাদ্য শিল্প মেলা সংগঠন কমিটির পরিচালক জাং শিয়াওহং বলেন, বর্তমানে সুস্থ ও পরিবেশ সংরক্ষণ ধারণা আইসক্রিম বাজারে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, চিনি ও ক্যালরী ছাড়া কোন কোন আইসক্রিম ব্র্যান্ড প্রোবায়োটিক ও খাদ্যতালিকাগত ফাইবার যোগ করে। এ রকম উপাদান আইসক্রিমের পুষ্টিগুণ বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যকে আরো বেশি সুস্থ বিক্রয় পয়েন্ট দেয়।

ব্রাইট ডেইরি কোং, লি চীনের নেতৃত্বধীন দুগ্ধজাত দ্রব্য উত্পাদন ব্যবসায়ীগুলির অন্যতম। সম্প্রতি তার অধীনে শাংহাই ইমিন খাদ্য কারখানা হালকা দুধ সিরিজ পণ্য উত্পাদন করছে।

কোম্পানির কর্মী জাং মিনই এমন কথা জানালেন, এসব পণ্যে স্যাকারোজ ৫০ শতাংশ কমেছে। এছাড়া খাদ্যতালিকাগত ফাইবার যোগ করা হয়েছে। ছোট কাপের নকশা পণ্যভোগীদের ক্যালরী নিয়ন্ত্রণ করতে অনুকূল হয়। চীনের দে শি গ্রুপের বেশ কয়েকটি পণ্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে রপ্তানি করা হয়। গ্রুপের বিপণন পরিচালক মেং চিয়ে বলেন, কাঁচামাল সংযোজন ও নকশার দিকে, কোম্পানি সবসময় প্রাকৃতিক ও সুস্থতাকে গুরুত্ব দেয়। বিদেশী বাজারে যাবার সময় কোম্পানি অব্যাহতভাবে বিদেশি সহযোগী ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ ও বিনিময় করে, এক সাথে আইসক্রিম পণ্যের উদ্ভাবন এবং সুস্থ আপগ্রেডের সম্ভাবনা অন্বেষণ করে।

চীনের আইসক্রিম খাত ধারাবাহিকভাবে উন্নত ও শক্তিশালী হচ্ছে। চায়না গ্রিন ফুড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালে আইসক্রিম বাজারের মাত্রা ২০.৬১ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এখানকার বিশাল আইসক্রিম বাজারও আরো বেশি বিদেশী ব্যবসায়ীকে ‘মিষ্টি’ ব্যবসা সুযোগ খুঁজে বের করতে আকর্ষণ করছে।

“আমাদের কোম্পানি প্রথমবারের মতো মেলায় অংশ নিচ্ছে। আশা করি, মেলায় সুপ্ত সহযোগী অংশীদার পাব। যদিও চীনা বাজারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা-ক্ষমতা তুমূল। তবুও আমরা বিশ্বাস করি, রাশিয়ার আইসক্রিম চীনে ভালো বিক্রি হবে।” রাশিয়ার একটি আইসক্রিম কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি নাতালিয়া স্টিলেভা এমন কথা বললেন। (প্রেমা/হাশিম)