অক্টোবর ১৪: সম্প্রতি, চীনের থাইপেইতে লাই ছিং ত্য তথাকথিত ‘১০ অক্টোবরের’ ভাষণ দিয়েছেন। এতে তিনি অব্যাহতভাবে ‘নতুন দুই রাষ্ট্রের’ ভুয়া তত্ত্ব প্রচার করেছেন, ইচ্ছা করে তাইওয়ান প্রণালীর উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছেন এবং তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছেন।
প্রাচীনকাল থেকে তাইওয়ান হচ্ছে চীনের ভূখণ্ডের একটি অংশ। শতাধিক বছর আগে চীন অনেক দুর্বল থাকার কারণে, বিদেশি শক্তি তাইওয়ান দখল করেছিল। ৭০ বছর আগে চীনের সশস্ত্রবাহিনী ও জনগণ আগ্রাসী শক্তিকে পরাজিত করেছিল। তাইওয়ান আবার মাতৃভূমির কোলে ফিরে এসেছে। ১৯৪৯ সালের পহেলা অক্টোবর, গণ-প্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তখন তার সরকার চীন প্রজাতন্ত্রের সরকারকে প্রতিস্থাপন করে গোটা চীনের একমাত্র বৈধ সরকারে পরিণত হয়। চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ড পরিবর্তন হয় নি। তবে চীনের গৃহযুদ্ধ অব্যাহতভাবে চলতে থাকে এবং বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপের করণে, তাইওয়ান প্রণালীর দুপার দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক বৈরিতার বিশেষ অবস্থায় প্রবেশ করেছিল। তবে, চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ড কখনওই বিচ্ছিন্ন হয় নি। তাইওয়ান চীনের একটি অংশ- এ অবস্থা কখনওই পরিবর্তন হয় নি।
লাই ছিং ত্য তার ভাষণে ‘চীন প্রজাতন্ত্র মানে তাইওয়ান’- এই ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা করেছিল। যা ‘তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদের’ চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ হয়। তিনি প্রকাশ্যে বলেন যে, ‘তাইওয়ানের প্রতিনিধিত্ব করার কোনো অধিকার গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের নাই।’ যা আন্তর্জাতিক সমাজের এক চীন নীতিতে অবিচল থাকার মৌলিক কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করেছে। পাশাপাশি তিনি ‘গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার’ অজুহাতে, ‘বাইরের শক্তির ওপর নির্ভর করে বিচ্ছিন্নতাবাদ বাস্তবায়ন’ ও ‘সামরিক পদ্ধতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদ বাস্তবায়নের’ অপচেষ্টা চালিয়েছেন। লাই ছিং ত্য’র এ তথাকথিত ‘১০ অক্টোবরের’ ভাষণ একেবারেই বিচ্ছিন্নতাবাদী বক্তব্য এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ’ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যের স্পষ্ট উস্কানি।
ভিন্ন রাজনৈতিক পদ্ধতি একীকরণের বাধা হতে পারে না। তা অবশ্যই বিচ্ছন্নতার অজুহাতও হতে পারে না। তাইওয়ান প্রণালীর দুপারের চীনারা উভয়ই চীনা জাতি। এ ছাড়া অভিন্ন কল্যাণও রয়েছে। এক চীন নীতির ভিত্তিতে উভয় সংলাপ ও যোগাযোগ জোরদার করা গেলে, অবশ্যই সমস্যা সমাধান করা যাবে, অবশ্যই সঠিক পথে মাতৃভূমির সম্পূর্ণ একীকরণ বাস্তবায়ন করতে পারবে।
এ ছাড়া লাই ছিং ত্য ‘১৯১১-এর বিপ্লবের’ উজ্জ্বল ইতিহাস ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং মানুষকে পথভ্রষ্ট করার অপচেষ্টা করেছেন। ‘১৯১১-এর বিপ্লবের’ পতাকা ছিল ‘চীনের পুনর্জাগরণ’। শহীদরা দেশের একীকরণ ও জাতীর সমৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। লাই ছি ত্য ও ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি বিচ্ছিন্নতাবাদী চিন্তায় অবিচল রয়েছে। তাদের এহেন আচরণ দেশকে বিচ্ছিন্ন করছে, যা ‘১৯১১-এর বিপ্লবের’ চেতনার একেবারে বিপরীত বিষয়।
জনাব সান ইয়াত সেন আগে বলেছিলেন, একীকরণ হচ্ছে চীনের সব মানুষের আশা। যা বাস্তবায়ন হলে, গোটা দেশের মানুষ লাভবান হবে; না হলে, সবার ক্ষতি হবে। তা ছিল ‘১৯১১-এর বিপ্লবের’ শহীদদের মনের ইচ্ছা। যা গোটা চীনা জনগণের অভিন্ন মিশন। তাইওয়ান প্রণালীর দু’পারের গোটা চীনা জনগণ অবশ্যই হাতে হাত রেখে ‘তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ও বাইরের হস্তক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করে এবং একযোগে মাতৃভূমির সম্পূর্ণ একীকরণ ও জাতিগত মহান পুনরুজ্জীবন বাস্তবায়ন করতে পারবে।
(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)