চীনের জাতীয় দিবস ছুটিতে ৫২ বছর বয়সী জাং সিয়াং এবং তার পরিবারের সদস্যরা সরাসরি বিমানে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে এসে অর্ধ-মাসব্যাপী পশ্চিম বলকানের তিনটি দেশে ভ্রমণ শুরু করেন। এবারের সার্বিয়া ভ্রমণ তার জন্য খুবই সন্তোষজনক। তিনি বলেন, সার্বিয়ার প্রাকৃতিক দৃশ্য কমনীয়। শহরটি পরিষ্কার ও পরিপাটি, বিশেষ করে স্থানীয় অধিবাসীরা বন্ধুত্বপূর্ণ ও অতিথিবত্সল, সবসময় চীনা ভাষায় আমাদের অভিবাদন জানান। কোনো কোনো জায়গায় চীনা ভাষার গাইডপোস্ট দেখা যায়। খুব ভালো লাগে।
হাইনান এয়ারলাইন্, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স এবং এয়ার সার্বিয়া পরপর চীন থেকে সার্বিয়াগামী সরাসরি ফ্লাইট চালু করার ফলে প্রতিদিন চীন-সার্বিয়া সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। আরো বেশি চীনা পর্যটক সার্বিয়ার বৈশিষ্ট্যময় আকর্ষণশক্তির টানে দেশটিতে ভ্রমণে যাচ্ছেন।
সার্বিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি মিং এয়ার সার্বিয়ার বেলগ্রেড-কুয়াংচৌ সরাসরি ফ্লাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানান, চীন থেকে সার্বিয়াগামী বাজার দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে সার্বিয়ার আগত দর্শনার্থীদের সংখ্যা নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এতে চীনা পর্যটকের সংখ্যা পঞ্চম স্থানে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সার্বিয়াগামী চীনা পর্যটকের মোট সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৪ শতাংশ বেড়েছে।
সার্বিয়ার জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছর লাখের বেশি চীনা পর্যটক সার্বিয়ায় গেছেন। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৪ সালে চীনা পর্যটকের সংখ্যা ২০১৯ সালের রেকর্ড অতিক্রম করবে।
সার্বিয়ার জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর প্রধান মারিজা ল্যাবোভিচ জানান, দেশটির বৈশিষ্ট্যময় স্থাপত্য শৈলী, মনোহর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং অতিথিবত্সল স্থানীয় মানুষ চীনা পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়। দেশটির লক্ষ্য হলো আগামী কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মধ্যে অন্যতম হবে চীনা পর্যটক।
সার্বিয়ার যুব পর্যটন সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ছেন মেই বলেন, সার্বিয়া চীনের বেশ কয়েকটি শহরের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করে, শুধু দু’দেশের মধ্যে পর্যটন সহযোগিতার জন্য সুবিধা সৃষ্টি করেছে তা নয়, বরং দেশটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য নতুন সুযোগ ডেকে আনে।
তিনি আরো বলেন, সার্বিয়ায় চীনা পর্যটক বৃদ্ধির প্রবণতা চীন-সার্বিয়া পর্যটন সহযোগিতার শক্তিশালী চালিকাশক্তির প্রতিফলন, পাশাপাশি চীনা পর্যটকদের জন্য আরো উন্নতমানের পর্যটন বাছাই সরবরাহ করে। ভবিষ্যতে সার্বিয়ায় চীনা পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
অধিকতরভাবে চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য সার্বিয়া বহু ব্যবস্থা নিয়ে দেশটির পর্যটন অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তা উন্নীত করছে। ল্যাবোভিচ বলেন, সার্বিয়া ইতিবাকচভাবে অবকাঠামো উন্নীত করতে বিনিয়োগ করছে। চীনা ভাষা পরিষেবা বাড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানে আরো বেশি চীনা ভাষায় পরিচয় ও গাইডপোস্ট স্থাপন করেছে। এ ছাড়া দেশটির জাতীয় পর্যটন ব্যুরো চীনে টার্গেটেড মার্কেটিং কার্যক্রম চালিয়ে, জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পর্যটন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আরো বেশি চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। (প্রেমা/হাশিম)