‘চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ কর্তৃক আরোপিত একতরফা নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে, চীনা জনগণের মানবাধিকারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চীনকে প্রশাসনিক, আইনি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপায়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে স্বাগত জানায় চীন।" আজ (বুধবার) পর্যন্ত জাতিসংঘ মানবাধিকার নির্বাহী পরিষদের ৫৭তম অধিবেশনের বৈঠকটি এক মাস ধরে চলছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার নির্বাহী পরিষদের বিশেষ প্রতিবেদক আলেনা দুহান রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছেন। একই সঙ্গে, শত শত দেশ যৌথ বক্তৃতা ও পৃথক বক্তৃতা-সহ বিভিন্ন উপায়ে চীনের অবস্থানকে সমর্থন জানায়। তারা জোর দেয় যে, সিনচিয়াং, হংকং ও তিব্বত বিষয়টি চীনের অভ্যন্তরীণ ইস্যু এবং তারা মার্কিন হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে। এটি সম্পূর্ণরূপে দেখায় যে, যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি পশ্চিমা দেশের মানবাধিকার ইস্যুতে রাজনীতিকরণকে সবাই সমর্থন করে না। সিএমজি সম্পাদকীয় এসব কথা বলেছে।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য, যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে ‘মানবাধিকারের অভিযোগ’ তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত ‘মানবাধিকার সমস্যার’ অজুহাতে ভেনিজুয়েলার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রসারিত করেছে, যার ফলে দেশে অর্থনৈতিক, মানবিক ও উন্নয়ন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপের মাধ্যমে মাদুরো সরকারকে উৎখাতের প্রচেষ্টায় সে দেশের বিরোধী নেতাদের প্রকাশ্যে সমর্থন করেছে।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অপবাদ ও দমন করার জন্য প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদন তৈরি করে। এর একটি উদাহরণ হল, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা জাতীয় মানবাধিকার রিপোর্ট। সিনচিয়াং ইস্যুকে উদাহরণ হিসাবে ধরা যায়। যুক্তরাষ্ট্র বারবার প্রতিবেদনে মিথ্যা কথা বলেছে এবং একে চীনের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে। যার উদ্দেশ্য হল, চীনের আন্তর্জাতিক ভাবমর্যাদাকে অসম্মান করা এবং চীনের উন্নয়ন প্রতিরোধ করা।
ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারকে সমুন্নত রাখার সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল দেখেছে এবং বুঝতে পেরেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের আড়ালে চীন ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। অনেক ইসলামিক দেশ-সহ শতাধিক উন্নয়নশীল দেশ মানবাধিকার নির্বাহী পরিষদে চীনকে স্পষ্টভাবে সমর্থন করেছে। শুধুমাত্র চীনের বৈধ অধিকার রক্ষার জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষা, উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাধারণ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্যও। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না-করা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নিয়ম। শতাধিক দেশ থেকে স্পষ্ট কণ্ঠস্বর সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা দেশের রাজনৈতিক কারসাজি ক্রমশ অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)