ঢাকা, অক্টোবর ৪, সিএমজি বাংলা: চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছর পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্কে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন অংশীদার চীন।
সম্প্রতি ঢাকায় চীনা দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বিশিষ্টজনেরা সিএমজি বাংলাকে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন।
চীন বাংলাদেশের অকৃত্রিম ও পরীক্ষিত বন্ধু উল্লেখ করে তারা বলেন, শুধু অবকাঠামো নির্মাণ নয়। শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও দুই দেশের বিনিময় বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দেশের সম্পর্ক আগামীতে একটি নতুন উচ্চতায় এগিয়ে যাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী চীনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনাভাষা শেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
বাংলাদেশে, চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. আবদুল মতিন তালুকদার বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক অতীতের চেয়ে এখন আরও ভালো অবস্থানে আছে। ব্যবসা বাণিজ্যি , সংস্কৃতি সবদিক থেকেই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধীরে ধীরে এই সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। ‘
এ সময় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চীনের বর্তমান উন্নয়নের কথা বলেন। চীনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা মাও সেতুংয়ের অবদানের কথা বলেন তিনি। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট দেং জিয়াওপিংয়ের অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। চীনের বর্তমান নেতৃত্বের প্রশংসা করেন তিনি। তিনি মনে করেন চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে যোগ দেয় বাংলাদেশ। এরপর থেকে বাংলাদেশ ও চীনের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধির প্রত্যাশার কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা মির্জা আব্বাস।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অটুট আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীনের ৭৫তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একটি বড় ইভেন্ট। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৯ বছর চলছে। এটি চায়না বাংলাদেশ বন্ধুত্বের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময় বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে। এটা একটা বড় পরিবর্তন। তবে পরিবর্তন যাই হোক চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতার সম্পর্কের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ এই পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হচ্ছে। সুতরাং আমার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে গভীরতর সহযোগিতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে দুইদেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। ’
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরে দাঁড়িয়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
সম্পাদনা: ফয়সল আবদুল্লাহ