অক্টোবর ১: আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় দিবসের ছুটির প্রথম দিন সারাদেশে পরিবহনে যাত্রীবাহী প্রবাহ ছিল সর্বোচ্চ। চায়না রেলওয়ে গ্রুপের সূত্র থেকে জানা গেছে যে, পহেলা অক্টোবর জাতীয় রেলওয়ে ২১ মিলিয়ন যাত্রী বহন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মহাসড়কের ক্ষেত্রে ছোট যাত্রীবাহী গাড়িগুলোকে পহেলা অক্টোবর থেকে হাইওয়ে টোল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পহেলা অক্টোবর হাইওয়ে সড়কের মধ্য দিয়ে যানবাহনের পরিমাণ ৬৫ মিলিয়ন থেকে ৬৭ মিলিয়ন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন পহেলা অক্টোবরে সর্বোচ্চ ২.৩৮ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করবে।
চীনের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, এই বছরের জাতীয় দিবসের ছুটিতে মূলত ভ্রমণ এবং আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে জন্মস্থানে ফেরার জন্যই বিপুল এই যাত্রীপ্রবাহ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। সমগ্র সমাজে আন্তঃআঞ্চলিক চলাচলের পরিমাণ প্রায় ১.৯৪ বিলিয়ন হবে, দৈনিক গড় সংখ্যা প্রায় ২৭৭ মিলিয়ন, গড় দৈনিক বৃদ্ধির হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৭ শতাংশ বেশি এবং ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় গড় দৈনিক বৃদ্ধির হার ১৯.৪ শতাংশ বেশি। ‘ন্যাশনাল ডে হলিডে অবজারভেশন’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বটি পহেলা অক্টোবর প্রচারিত হয় এবং এর নাম হলো ‘প্রায় ২ বিলিয়ন আন্তঃআঞ্চলিক যাতায়াত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে’।
মহাসড়কের ক্ষেত্রে পহেলা অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত যানবাহন একসাথে যাতায়াত শুরু হয়। সকালের ১০টায় পুরো ছুটির সময় সর্বোচ্চ ভ্রমণ পিক দেখা গেছে। দেশজুড়ে হাইওয়ের যানবাহনের মোট সংখ্যা ৬৫ মিলিয়ন এবং যানজটের কারণে মহাসড়কে ধীরগতি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিবহণ মন্ত্রণালয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে, এই বছর জাতীয় দিবসের ছুটিতে ১.৫২৬ বিলিয়ন ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণ হবে, যা মোট ভ্রমণের প্রায় ৮০ শতাংশ। সারাদেশে মহাসড়কের গড় দৈনিক ট্রাফিক পরিমাণ ৬১ মিলিয়ন থেকে ৬২ মিলিয়ন যানবাহনে পৌঁছাবে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবং ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ছুটির দিনে জন্মস্থানে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে এবং বাস করা শহরের চাপাশে ঘুরে বেড়াতে স্বল্প এবং মাঝারি দূরত্বের ভ্রমণের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর বাস্তবতা এ থেকে প্রতিফলিত হয়েছে।
বেইজিং, থিয়েনচিন ও হ্যপেই, ইয়াংজি নদীর ডেল্টা অঞ্চল, কুয়াংতোং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তম উপসাগরীয় অঞ্চল, ছেংতু এবং ছোংছিংসহ নানা শহুরের হাইওয়ে সড়কে যাতায়াতের সংখ্যা বেশি ছিলো। প্রধান শহরগুলোর বাইরে, বিমানবন্দরের এক্সপ্রেসওয়ে এবং জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলোর দিকে যাওয়া মহাসড়কে স্বল্পমেয়াদী যানজট হতে পারে।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী লি ইয়াং বলেন, ‘বড় শহরসহ জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, ইন্টারনেট সেলিব্রিটি ব্যবসায়িক জেলা ইত্যাদিতে যাত্রী প্রবাহের বৃহৎ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জায়গা সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে পরিবহন ক্ষমতার সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
রেলগাড়ির ক্ষেত্রে ১০ দিনের মধ্যে মোট ১৭৫ মিলিয়ন যাত্রী পরিহন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করা এবং অতিরিক্ত ৩৫৪টি মাঝারি ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেনের মাধ্যমে গড় দৈনিক পরিবহন যাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ১৭ মিলিয়ন।
সিভিল এভিয়েশনের ক্ষেত্রে বিগডেটা দেখায় যে, পহেলা অক্টোবরে অভ্যন্তরীণ রুটে পরিকল্পিত ফ্লাইটের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে এবং দেশব্যাপী সিভিল এভিয়েশনের যাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২.২ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। জনপ্রিয় অভ্যন্তরীণ গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বেইজিং, ছেংতু, শাংহাই, কুয়াংচৌ, শেনচেন, সি’আন, খুনমিং, ছোংছিং, হাংচৌ ও ছাংশা ইত্যাদি। জনপ্রিয় আউটবাউন্ড গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংকক, সিউল, হংকং, টোকিও, ওসাকা, সিঙ্গাপুর, ম্যাকাও, তাইপেই, কুয়ালালামপুর, লন্ডন ইত্যাদি। ডেটা দেখায় যে, জাতীয় দিবসের ছুটিতে আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীদের মধ্যে তৃতীয়-স্তরের শহরগুলোর বাসিন্দা এবং নীচের বাসিন্দাদের অনুপাত ৪০ শতাংশেরও বেশি এবং সম্পর্কিত পর্যটন পণ্যগুলোর বুকিংয়ের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে৷
জাতীয় দিবসের ছুটিতে সারা দেশে নৌপথের মাধ্যমে ১০ মিলিয়ন যাত্রী পরিহন করা যাবে বলে অনুমারণ করা হচ্ছে। পর্যটকরা মূলত নৌকায় দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করতে, স্বজনদের সাথে দেখা করতে এবং জলপথে অবকাশ কাটাতে নৌপথ বেছে নিয়েছেন।
(লিলি/হাশিম/তুহিনা)