একজন সাধারণ কৃষক থেকে মাশরুম কৃষক, আবার ফিজির মাশরুম চাষি সমিতির চেয়ারম্যান পর্যন্ত—সেরুওয়াইয়া কাবু কাবু এখন স্থানীয় কমিউনিটির নারীদের জন্য অবদান রাখতে পারার জন্য খুবই গর্ব করেন।
তিনি হলেন ফিজির নাইতাসিরি প্রদেশের নারী পরিচালিত দুগ্ধ শিল্পের একজন সদস্য। ২০১৯ সালে তিনি সংস্থার ১২ জন সদস্যকে নিয়ে চীনের সাহায্যে ফিজি মাশরুম প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন।
প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তিনি স্থানীয় নারীদের নিয়ে উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে মাশরুম চাষ করে, এসব নারীদের তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা দেন। চীনের সাহায্যে ফিজি মাশরুম প্রযুক্তি কেন্দ্র থেকে মাশরুম ব্যাগ পেয়ে চাষ শুরু করেন। চীনা বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে ৭ থেকে ১০ দিনে পিকিং ও বিক্রয় সম্পন্ন করা যায় এবং আয় সৃষ্টি শুরু করা যায়।
মাশরুম প্রযুক্তির ভবিষ্যত্ ভরসা রেখে কাবু কাবু একটি ছোট আকারের মাশরুম খামার খোলেন। প্রথম দফা মাশরুম দিয়ে তিনি প্রায় ১১৩৬ মার্কিন ডলার আয় করেন। এসব আয় দিয়ে তিনি পরিবারের জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্র, খাবার ও পোশাক ইত্যাদি কিনেন।
আয় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি পরপর পরিবারের জন্য টয়লেট ও বাথরুম নির্মাণ করেছেন এবং ওয়াশিং মেশিন কিনেছেন। এতে তার ও পরিবারের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বিরাট উন্নতি হয়েছে। এ ছাড়া তিনি আয়ের কিছু অংশ কমিউনিটির জয় দূষণমুক্ত পানি প্রকল্পে দান করেন, যাতে কমিউনিটির বহু বছরের দূষণমুক্ত পানির অভাব দূর করা যায়।
২০২০ সালে হঠাত্ আসা করোনা মহামারী অনেকের স্বাভাবিক জীবন বিশৃঙ্খল করেছে। কিন্তু মাশরুশ কেন্দ্র কৃষকদের মাশরুম ব্যাগ পাঠানো বন্ধ করেনি। কাবু কাবু মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক উত্স হারানো নারীদের মাশরুম চাষ প্রকল্পে অংশ নিতে উত্সাহ দেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি, মাশরুম কেন্দ্রের সমর্থনে নাইতাসিরি প্রদেশের নারী দুগ্ধ সংস্থায় মাশরুম প্রযুক্তির দৃষ্টান্তমূলক পয়েন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সদস্যরা শুধু মাশরুম চাষ করেন তা নয়, বরং গোখাদ্য হিসেবে মাশরুম ঘাস চাষ করেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে কাবু কাবু আরো ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
কাবু কাবু সবসময় সংস্থার সদস্যদের নিয়ে কমিউনিটির কাছে মাশুরুম প্রযুক্তি প্রচার করে, মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি মূল্য তুলে ধরেন এবং মানুষদের অনাক্রম্যতা উন্নত এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বর্তমানে তাদের অনেক অনুগত গ্রাহক আছে। তাদের মধ্যে রয়েছে বৃহত্ সুপারমার্কেট, বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশটিতে নিযুক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা ইত্যাদি।
মাশরুশ প্রযুক্তির কারণে কাবু কাবু অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে চলে আসছেন এবং অনেক কিছু পরিবর্তন করেছেন। তাঁর নিজের মূল্য বাস্তাবায়িত হয়েছে। গত বছরের শেষ নাগাদ তিনি ফিজি মাশরুম চাষী সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পুরোপুরিভাবে দেশটির মাশরুম বাজার সম্প্রসারণ করার চেষ্টা চালান। “মাশরুম প্রযুক্তি আমাদের শুধু অর্থনৈতিক স্বার্থ ডেকে আনে তা নয়, বরং এটি এক রকম অগ্রণী টেকসই উন্নয়ন ধারণা।”
মাশরুম কেন্দ্রের প্রকল্প গ্রুপের প্রধান লিন সিংশেং জানান, ২০১৪ সাল থেকে ফিজি-তে চীন ২ হাজার ৭শ’র বেশি মাশরুম প্রযুক্তিবিদ লালন করেছে। মাশরুম চাষ, মাশরুম ঘাস চাষ, মাশরুম স্টক বাড়ানো এবং মাশরুম প্রাকৃতিক প্রশাসন থেকে ৩ হাজারের বেশি পরিবার সরাসরি উপকৃত হয়েছে।
আমি এবং আমার সঙ্গী সবাই মাশরুম প্রযুক্তির স্বাক্ষী ও সুবিধাভোগী। কাবু কাবু এমন কথা বললেন। (প্রেমা/হাশিম)