সেপ্টেম্বর ৩০: বর্তমানে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের সব পরিকল্পনা, টেকসই নীতি এবং সবুজ প্রযুক্তি ও ব্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে সামনে এগুচ্ছে। সম্প্রতি আয়োজিত ২০২৪ সালের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ফোরামে, ব্রিটেন-চীন বাণিজ্য সমিতির সিইও পিটার বার্নেট এ কথা বলেন। অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা বলেন, চীন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ উন্মোচন করেছে, কিন্তু এর সাফল্য ও সুযোগ সারা বিশ্বের জন্য। ১৫০টিরও বেশি দেশ ও ৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবারের ফোরামে অংশগ্রহণ করে।
চলতি বছর হলো গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী। ৭৫ বছরে চীনা অর্থনীতি দ্রুত উন্নত হয়েছে। চীন বিশ্বের সাথে পারস্পরিক সুবিধা ও জয়-জয় নীতির ভিত্তিতে সহযোগিতা করে ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করেছে। বিশেষ করে, বিগত দশ বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চীনের গড় অবদান ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। চীন ঐতিহাসিকভাবে পরম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি লাভ করেছে এবং সার্বিকভাবে মধ্যমমানের স্বচ্ছল সমাজ গড়ে তুলেছে।
৭৫ বছরে চীন নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি, মানবজাতির অভিন্ন উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে। চীন বিশ্বের সাথে সহযোগিতা করেছে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে ও করছে। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও শক্তির প্রধান উত্সে পরিণত হয়েছে চীন। বাজার, শিল্প-চেইন, সরবরাহ-চেইন, উদ্ভাবন, ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীন তার প্রাধান্য কাজে লাগিয়েছে ও লাগাচ্ছে।
বাজার হলো সবচেয়ে দুর্লভ সম্পদ। চীনের এ সুপার আকারের বাজার, অধিক থেকে অধিকরত বিদেশী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে ও করছে। ২০২৩ সালে চীনে নতুন বিদেশী বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত সংস্থার সংখ্যা ছিল ৫৩৭৬৬টি, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৯.৭ শতাংশ বেশি। এ সময় বিদেশী অর্থের আসল ব্যবহার হয়েছে ১.১৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান আরএমবি। এক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বিশ্বের দ্বিতীয়।
শিল্প-চেইন ও সরবরাহ-চেইন হলো বিশ্বের অর্থনীতি উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। বিশ্বের সরবরাহ-চেইনে চীনের অবস্থান দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানিসম্পদ বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর বিশ্বব্যাপী বিক্রি হওয়া বৈদ্যুতিক গাড়ির অর্ধেকের বেশি চীনে উত্পাদিত হয়েছে।
বর্তমানে চীন ব্যাপকভাবে নতুন মানের উত্পাদিত শক্তি খাতে উন্নতি করছে। বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বের উদ্ভাবন-তালিকায় গত বছর চীন এগারো নম্বরে ছিল।
বিদেশে চীনা বিনিয়োগ স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে চলেছে। ২০২৩ সালে বিদেশে চীনের সরাসরি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১৭৭.২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মোট বিনিয়োগের ১১.৪ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে টানা ১২ বছর ধরে বিশ্বের প্রথম তিনটি স্থানে ছিল চীন।
চীন গভীরভাবে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলার যৌথ উদ্যোগে অংশগ্রহণ করে আসছে এবং উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতি গড়ে তোলায় অবদান রেখে আসছে। চীন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ এবং তিনটি বিশ্ব প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিভিন্ন ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করে আসছে এবং যৌথ বাণিজ্য, নির্মাণ ও সাফল্য শেয়ার করার প্রস্তাব করে আসছে।
চীন বিশ্বকে ছাড়া বিকশিত হতে পারে না এবং বিশ্বও চীনকে ছাড়া বিকশিত হতে পারে না। একটি উন্মুক্ত চীন বিশ্বের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ একবার বলেছেন, গত ৭৫ বছরে চীন অতুলনীয় উন্নয়ন-সাফল্য অর্জন করেছে এবং বিশ্বকে নিয়ে অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)