টেকসই পরিবহন উন্নয়নের সুন্দর ভবিষ্যত
2024-09-27 15:16:07

উত্পাদন শক্তির উন্নয়নে পরিবহন একটি মূল উপাদান, দক্ষ, পরিবেশবান্ধব এবং কম-কার্বন পরিবহনের উপলব্ধি উচ্চমানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক।

 

বুধবার ও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেকসই পরিবহন উচ্চ-পর্যায়ের ফোরাম ২০২৪-এ ‘টেকসই পরিবহন: লজিস্টিকস বিশ্বকে সংযুক্ত করা’, থিমের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে সবুজ এবং কম-কার্বন উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার বৈশ্বিক অর্থনীতির সাধারণ প্রবণতার মুখে ফোরামে অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের অতিথিরা পরিবহন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী টেকসই পরিবহন উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে কৌশল ও পথ খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব লি জুনহুয়া বিশ্বাস করেন যে, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে উৎপাদিত কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের এক চতুর্থাংশের জন্য পরিবহন খাত দায়ী, এবং বিশ্বব্যাপী পরিবহন ব্যবস্থা অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে। এগুলো ছাড়াও, সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতা এবং পণ্য পরিবহনের ব্যয়ের ক্ষেত্রে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে। তিনি বলেন, “দেশ ও অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উন্নয়নের জন্য প্রবৃদ্ধি, বিনিময় এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস করার জন্য আমাদের একটি টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা প্রয়োজন।”

বৈশ্বিক পরিবহনের সবুজ এবং কম-কার্বন রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার জন্য নতুন জ্বালানির বিকাশকে প্রচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নেপালের উপ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু প্রসাদ পাউডেল বলেন,  তারা যে অটোমোবাইল আমদানি করেন, তার প্রায় ৭৫ শতাংশ ইলেকট্রিক, যা পাঁচ বছর আগের ১০ শতাংশের থেকে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এই পরিবর্তনটি তাদের পরিবহন খাতের উদ্ভাবনের সম্ভাবনার বহিঃপ্রকাশ। টেকসই উন্নয়নকে অবকাঠামো উন্নয়নের শীর্ষে রাখতে হবে এবং সবুজ পরিবহন মোড নির্গমন কমাতে সাহায্য করতে পারে, যার ফলে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পরিবেশ রক্ষা করা যায়।

টেকসই পরিবহন উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র দক্ষ, সবুজ এবং অর্থনৈতিক হলেই চলবে না, একে নিরাপদ এবং স্থিতিস্থাপকও হতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চীনে নিযুক্ত প্রতিনিধি মার্টিন টেলর মনে করেন, অনেক দেশের গ্রামীণ এলাকায়, সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যায়। তাই স্থানীয় অবকাঠামো এবং পরিষেবাগুলোকে আরও উন্নত করতে হবে। একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা তৈরি করতে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। সমাজ, ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা এবং অবকাঠামো নির্মাণের উন্নতিতে সরকারকে সহায়তা করতে হবে এবং সরকারের উচিত সংশ্লিষ্ট নীতি প্রবর্তন করা। আমাদের লক্ষ্য টেকসই উন্নয়নের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা হল ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা।

চীন জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়।

“গত বছর, চীনের পরিবহণ ঘনিষ্ঠভাবে 'মানুষের যাতায়াত এবং পণ্যের সুষ্ঠু পরিবহন' এমন সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির উপর নিবিড়ভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, উচ্চ-মানের উন্নয়নের প্রচার অব্যাহত রেখেছে এবং একটি পরিবহন খাতের শক্তিশালী দেশ  হওয়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এবং এ ক্ষেত্রে নতুন অগ্রগতি হয়েছে। চীনের পরিবহন মন্ত্রী লি সিয়াও ফেং বলেছেন যে, চীনের পরিবহন অবকাঠামো নেটওয়ার্ক আরও সম্পূর্ণ হয়েছে, পরিবহন উদ্ভাবনের ক্ষমতা ক্রমাগত উন্নত হয়েছে, ট্রাফিক শাসনের স্তরের উন্নতি অব্যাহত রয়েছে এবং ব্যাপক পরিবহণ পরিষেবা সমর্থন ক্ষমতা রয়েছে। নিজস্ব উন্নয়ন উপলব্ধি করার সময়, চীন ‘বিশ্বের জন্য পরিবহন’ মেনে চলবে, উন্মুক্ত ও সহযোগিতাকে আরও গভীর করবে এবং টেকসই পরিবহন উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী দেশগুলোর সাথে কাজ করবে।

(শুয়েই/হাশিম/জিনিয়া)