ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর, সিএমজি বাংলা: বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রয়েছে নিজেদের উন্নয়নের পথ বেছে নেয়ার, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেই থাকুক, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের কোন পরিবর্তন হবে না, চীন সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করবে। এমন কথাই বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে চীনা দূতাবাস আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর দুই দেশের সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপিত হবে। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। আগামী দিনে দুই দেশের মধ্যে আরও বাণিজ্য বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতা করছে। চীনা সহযোগিতা ছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধান সম্ভব হবে না বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ চীন সম্পর্ক প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, চীন বিগত ৭৫ বছর ধরে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। একই সঙ্গে চীন-বাংলাদেশ গভীর বন্ধুত্বও তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। এ সরকারের পাশে থাকবে চীন। সে কারণে ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় চীন থেকে একটি জরুরী মেডিকেল টিম বাংলাদেশে এসেছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ১০০ শতাংশ পণ্যকে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা অনুষ্ঠানে আবার উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দেড় মাসের মধ্যে চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ৮৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তার মতে এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রগতি এবং দুদেশের সম্পর্কের বিষয়ে চীনের আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ ঘটাচ্ছে।
চীনের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৭৫ বছরে বিশ্বের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে চীন অসামান্য অবদান রেখেছে। সব অংশীজনের সহযোগিতায় উন্নয়ন, অন্তর্ভূক্তিমূলক, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পৃথিবী গড়তে চায় চীন। যেখানে সবাই স্থায়ী শান্তি, সর্বজনীন নিরাপত্তা ও অভিন্ন সমৃদ্ধি উপভোগ করবে।
অনুষ্ঠানে চীনা মেডিকেল টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। টিমের সদস্যরা মঞ্চে এলে সবাই তাদের করতালি দিলে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে কার্যরত বিভিন্ন চীনা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা নিজস্ব বুথের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে।
চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের ঢাকা স্টেশন তাদের নিজস্ব বুথে অতিথিদের স্বাগত জানায়।
অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন চীনের ইয়ুননান প্রদেশ থেকে আগত শিল্পীদল।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাসসহ রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, গবেষক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
চীনের জাতীয় দিবস ১ অক্টোবর। দিবসটিকে সামনে রেখে এই জমকালো আয়োজন করে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস।
শান্তা/মিম
ছবি: সিএমজি বাংলা