বন্ধুরা, আজকে যে ছেং ইয়ু আমরা শিখাবো তা হল ‘废寝忘食’। শব্দটি চীনের বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও চিন্তাবিদ কনফুসিয়াসের সঙ্গে জড়িত। ৩০ বছর বয়সে তিনি চীনের প্রথম ব্যক্তিগত স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার মতে, যে পরিবারেই মানুষ জন্মগ্রহণ করুক না কেন, তার শিক্ষাগ্রহণের অধিকার আছে। জীবদ্দশায় খোং য্যি’র ৩ সহস্রাধিক ছাত্র ছিল। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছাত্ররা তার আচরণ ও কথা অনুসারে, 'লুন ইউয়ু'’ নামের একটি বই রচনা করেন। এতে কনফুসিয়াস মতবাদের বিস্তারিত উল্লেখ আছে। তার প্রতিষ্ঠিত কনফুসিয়াসিজম ও শিক্ষা মতবাদ চীন ও পূর্ব-এশিয়ার সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে।
এই ছেং ইয়ু 'লুন ইউয়ু’র একটি গল্প থেকে এসেছে। ছুনছিউ রাজবংশের শেষে খোং য্যি তার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে ভ্রমণ করে তার চিন্তাধারা ও রাজনৈতিক মতামত প্রচার করে এবং আশা করে যা অস্থির ও অশান্ত দেশ পরিবর্তন করতে পারে। একবার খোং য্যি ও তার শিক্ষার্থীরা ছু রাজ্যের ইয়েই শহরে আসেন। ইয়েই’র এক কর্মকর্তা ইয়ে কং তাদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি খোং য্যি’র নাম শুনেছেন। তিনি জানতে পেরেছেন যে, তার অনেক অসামান্য শিক্ষার্থী আছে। তবে খোং য্যি সম্পর্কে তিনি বেশি কিছু জানেন না, তাই ইয়ে কং খোং য্যি’র একজন শিক্ষার্থী য্যি লু’কে জিজ্ঞেস করেন। য্যি লু কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, তিনি জ্ঞান শেখানো ও নৈতিকতা প্রচার করার কাজ খুব উপভোগ করেন। এজন্য তিনি নিজে দরিদ্রতা ও কষ্টের কথা চিন্তা করেন না; তিনি জ্ঞান অর্জনে খুব আগ্রহী, এমনকি নিজের বয়সের কথা ভুলে গেছেন। শি, শু, লি, ইউয়ে এ ৪টি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন বইয়ের অনেক অংশ হারিয়ে গেছে, এসব বিষয়বস্তু সংগ্রহ ও সংগঠনের জন্য খোং য্যি এত কাজ করেছেন যে, কখনও বিরক্ত ও ক্লান্ত বোধ করেন নি। তিনি ঘুম ও খাওয়ার কথা ভুলে যান। এভাবেই এ ৪টি প্রায় পরিত্যক্ত বই এখন আবার প্রচলিত হতে পারে।
তার কথা শুনে ইয়ে কং খোং য্যিকে আরও সম্মান করেন এবং তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন।
এই গল্প থেকে এসেছে ছেংইয়ু ‘废寝忘食’, এর আক্ষরিক অর্থ ‘জ্ঞান শেখার জন্য ঘুম ও খেতে ভুলে যায়’। পরে মানুষরা এই শব্দটি দিয়ে কিছু কাজ করার জন্য খুব মনোযোগ ও পরিশ্রমের অবস্থা বর্ণনা করে।
(তুহিনা/তৌহিদ/স্বর্ণা)