কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যের যত্ন: নয়াচীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীতে স্বাস্থ্য পরিসেবা উন্নয়নের সারসংক্ষেপ
2024-09-20 17:30:06

সেপ্টেম্বর ২০: গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শক্তিশালী নেতৃত্বে, চীন একটি মৌলিক চিকিত্সা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করেছে, যা সমগ্র জনসংখ্যাকে কভার করে এবং অপেক্ষাকৃত কম বিনিয়োগসহ বিশ্বের জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশের প্রাথমিক চিকিত্সাসেবার সমস্যার সমাধান করেছে। নতুন যুগে এবং নতুন যাত্রায়, চীন জনগণের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে, স্বাস্থ্য-প্রথম উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে এবং ১.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর চীন গঠনের চেষ্টা করে আসছে।

এই বছরের আগস্টের শেষে প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান দেখায় যে চীনের গড় আয়ু ৭৮.৬ বছরে পৌঁছেছে। যা ১৯৪৯ সালের ৩৫ বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।

নয়াচীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে, চীনের স্বাস্থ্য শিল্পে পৃথিবী কাঁপানো পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান মানব ইতিহাসে স্বাস্থ্য খাতে একটি বিরল অগ্রগতিকে চিহ্নিত করে।

নয়াচীন প্রতিষ্ঠার আগে, চীনে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৫০০/১00000, এবং শিশুমৃত্যুর হার ছিল ২০০‰ এর মতো সারা দেশে মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিল এবং জনগণের স্বাস্থ্য সাধারণত দুর্বল ছিল।

২০২৩ সাল নাগাদ, জাতীয় মাতৃমৃত্যুর হার ১৫.১/১00000 নেমে এসেছে এবং শিশুমৃত্যুর হার ৪.৫‰-এ নেমে এসেছে। বিগত কয়েক দশকে, গুটিবসন্ত নির্মূল থেকে শুরু করে পোলিও এবং ম্যালেরিয়া নির্মূল পর্যন্ত, চীন  ধারাবাহিকভাবে অনেক বড় সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের জীবনমান প্রভাবিত করেছিল। এ পর্যন্ত চীনে মানুষের প্রধান স্বাস্থ্য সূচকগুলো মধ্যম ও উচ্চ-আয়ের দেশগুলোর অগ্রভাগে রয়েছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম মৌলিক চিকিত্সা সুরক্ষা নেটওয়ার্কে ১.৩ বিলিয়নেরও বেশি মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৭৫ বছর আগে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে, বিভিন্ন সময়কালে প্রধান প্রভাবশালী কারণ এবং জনগণের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে স্বাস্থ্য সংস্কার ও উন্নয়নকে অব্যাহতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

নয়া চীন প্রতিষ্ঠার আগে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের সংখ্যা ৩০ মিলিয়ন ছিল, তা এখন শূন্যে নেমে এসেছে। অনেক সংক্রামক রোগের নিয়ন্ত্রণ উন্নত দেশগুলোর স্তরের সমান অবস্থায় রয়েছে। গত ৭৫ বছরে, চীন সফলভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ অনেকগুলো প্রধান রোগ নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করেছে।

সংক্রামক রোগের জন্য চীনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন সরাসরি রিপোর্টিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে এবং ক্যান্সার বা কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো প্রধান রোগগুলোর জন্য প্রাথমিক স্ক্রীনিং ও প্রাথমিক চিকিত্সার প্রকল্পগুলোকে জোরদার করা হয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ থেকে সম্পূর্ণ জনসংখ্যার সুস্থ রূপান্তরকে ব্যাপকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রচারের দিকে নিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, সংক্রামক রোগ, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, পেশাগত রোগ এবং স্থানীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আরো কার্যকর ও শক্তিশালী হয়েছে।

চীনে শূন্য থেকেই একটি মৌলিক চিকিত্সা নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যা প্রায় ১.৩৩৪ বিলিয়ন লোককে মৌলিক চিকিত্সা বীমা, গুরুতর অসুস্থতা বীমা এবং চিকিত্সা সহায়তার মাধ্যমে উপকৃত করে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৮তম জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে, শহর ও গ্রামীণ বাসিন্দাদের মৌলিক চিকিত্সা বীমার জন্য মাথাপিছু আর্থিক ভর্তুকি মান ২০১২ সালে ২৪০ ইউয়ান থেকে ২০২৪ সালে ৬৭০ ইউয়ানে বেড়েছে এবং বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ব্যয়ের অনুপাত ২০১২ সালে ৩৪.৩৪% থেকে ২০২৩ সালে ২৭.৩%-এ নেমে এসেছে। ৩৭৪ রকমের ওষুধের দাম কেন্দ্রীভূত বাল্ক-ক্রয়কৃত হওয়ার কারণে দাম ৫০% কমেছে।

১৯৬৩ সাল থেকে চীন আনুমানিক ৩০ হাজারটি মেডিকেল দল ৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে এবং প্রায় ৩০০ মিলিয়ন রোগীকে গত ২০ বছরে ম্যালেরিয়ার চিকিত্সার জন্য আর্টেমিসিনিন-ভিত্তিক সংমিশ্রণ থেরাপি নির্ণয় ও চিকিত্সা করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো হয়েছে। চীন বিশ্বকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য ‘জনসাধারণের পণ্য’ প্রদানের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে, চীন ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য এজেন্ডা নির্ধারণে ও নিয়ম প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। চীন বিশ্বে ‘ঐতিহ্যগত ওষুধ’ এবং ‘প্রয়োজনীয় ওষুধে অ্যাক্সেস’ বিষয়ে অনেক প্রস্তাবও পাস করেছে। মানবজাতির স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অভিন্ন কল্যাণের কমিউনিটি গঠনে ‘চীনা জ্ঞান’ এবং ‘চীনা শক্তি’ অবদান রেখেছে চীন।

একটি নতুন সূচনা বিন্দুতে দাঁড়িয়ে, ২০৩৫ সালে একটি সুস্থ চীন গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারিত করা হয়েছে। চীন ১.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের স্বাস্থ্য এবং মঙ্গল রক্ষা করবে এবং চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণের জন্য আরও শক্তিশালী স্বাস্থ্য ভিত্তি স্থাপন করবে।

(স্বর্ণা/হাশিম/লিলি)