চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।
বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:
Ø পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে চীন-বাংলাদেশ সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু
Ø এটা নিঃসন্দেহে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ-বললেন বাংলাদেশ চীন চেম্বারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর
Ø পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে চীন-বাংলাদেশ সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু
এই প্রথম চীন থেকে পণ্য নিয়ে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ‘এমভি কোটা আংগুন’ নামের জাহাজটি চীন থেকে পণ্য নিয়ে মাত্র ৯ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে।এটি বাংলাদেশ ও চীনের বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সোমবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে বন্দরের ১৩ নম্বর জেটিতে নোঙর করে জাহাজটি। এটি বিশ্বের ব্যস্ততম সমুদ্র বন্দরের শীর্ষস্থানে থাকা পোর্ট অব নিংপো-চৌশান থেকে ৫৫২টি কনটেইনার নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার (কন্ট্রোল) রাজিব চৌধুরী বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘চায়না-চিটাগাং এক্সপ্রেস (সিসিই) নামের এই সার্ভিসে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জাহাজের একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়েছে। এই সার্ভিসের আওতায় চীনের পোর্ট অব নিংপো-চৌশান থেকে প্রথমবারের মতো আমদানীকৃত পণ্য নিয়ে মাত্র ৯ দিনের মাথায় চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে এমভি কোটা আংগুন নামের একটি ভ্যাসেল।’
পতাকাবাহী জাহাজটি চীন থেকে ৫৫২টি আমদানি করা কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে।
আগে চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগত। এখন চীন-চট্টগ্রাম সরাসরি রুট চালু হওয়ায় কম সময়ে জাহাজ আসা-যাওয়া করবে। এতে চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক উন্নতি ঘটবে।
চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে মোট ২৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ চীন থেকে ২২.৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং ৬৭৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করা হয়। আবার বাংলাদেশের চামড়াসহ বেশ কিছু পণ্য চীনে রপ্তানি হয়। এসব পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা কলম্বো হয়েই চীন-চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনায়ন করা হয়। এতে মাদার ভ্যাসেলে থেকে ফিডার ভ্যাসেল ব্যবহার ও অন্য বন্দরে হয়ে আসার কারণে এ ট্রান্সশিপমেন্টে সময় ও ব্যয় দুটিই বেশি হয়।
এ নিয়ে শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘চীন থেকে বাংলাদেশে প্রচুর পণ্য আমদানি করা হয়।
তাই চীন-চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি জাহাজ পরিচালনা করাটা বেশ সম্ভাবনাময় একটি বিষয়। তবে নিয়মিত জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখা না গেলে এ রুটটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা যদি ভাবেন এবং রুটটি টিকিয়ে রাখেন তাহলে তা দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বাড়তে থাকায়, এই সরাসরি রুটটি উভয় দেশের আমদানি ও রপ্তানি ক্ষেত্রে দ্রুত ও সাশ্রয়ী শিপিং সমাধান প্রদান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
।। প্রতিবেদন: আফরিন মিম
।। সম্পাদনা: ফয়সল আব্দুল্লাহ
Ø এটা নিঃসন্দেহে একটা যুগান্তকারী উদ্যোগ-বললেন বাংলাদেশ চীন চেম্বারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর: সাক্ষাৎকার
এটা নিঃসন্দেহে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চীন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আল মামুন মৃধা। সরাসরি দুদেশের পণ্য পরিবহনের ফলে ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব বিষয়ে কথা বলেছেন এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশের আমদানিকৃত পণ্যের সিংহভাগ আসে চীন থেকে। আগে যেখানে চীন পণ্য আসতে সময় লাগতো বিশ থেকে পঁচিশ দিন, এখন সেখানে দুদেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলে পণ্য আসছে আট নয় দিনে। এতে উৎপাদন খরচ কমবে, উৎপাদনশীলতা বাড়বে। সময় কমবে, সময়মতো অর্ডার সরবরাহে ভালো ফল আসবে। মোটা দাগে এর প্রভাবে সার্বিকভাবে দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে গতিশীলে হবে।
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল
অডিও সম্পাদনা: নাসরুল্লাহ রাসু
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী