সেপ্টেম্বর ১০: চলতি বছরের ‘বৈশ্বিক গণনিরাপত্তা সহযোগিতামূলক ফোরাম সম্মেলন’ গতকাল (সোমবার) চীনের চিয়াং সু প্রদেশের লিয়ান ইয়ুনকাং শহরে শুরু হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ও গণনিরাপত্তামন্ত্রী ওয়াং সিয়াও হুং এতে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে তিনি বলেন, বিগত এক বছরে, বিভিন্ন পক্ষের সাথে গভীরভাবে ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা প্রস্তাব’ বাস্তবায়নের কাজ করেছে চীন। এ প্রক্রিয়ায়, সহযোগিতা, উদ্ভাবন, আইনের শাসন, ও পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে, বৈশ্বিক গণ নিরাপত্তা সমাজ গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।
ওয়াং সিয়াও হুং বলেন, বিশ্ব, যুগ, ও ইতিহাসের পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, বিভিন্ন দেশের সাথে একটি সাধারণ, বিস্তৃত, সহযোগিতামূলক, ও টেকসই নিরাপত্তা-ধারণা অনুশীলন করতে চীন আগ্রহী। আর এর উদ্দেশ্য, অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার পাশাপাশি, যৌথভাবে বৈশ্বিক গণনিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ন্যায্য, সুসংহত ও কার্যকর করা।
আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট ইরাস সম্মেলনে ভাষণ দেন। মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জাহিদ, সার্বিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাইস, এবং সংশ্লিষ্ট অতিথিরাও বক্তব্য দেন। এই সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জয়-জয় সহযোগিতা: বৈশ্বিক জননিরাপত্তার অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলা’।
এদিন ওয়াং সিয়াও হুং পৃথক পৃথকভাবে ফোরামে অংশগ্রহণকারী মালয়েশীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী জাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন, মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াবি, জাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী মেভেম্বু, নিকারাগুয়ার জাতীয় পুলিশের মহাপরিচালক ডিয়াজ, এবং রুশ ফেডারেশন গ্রোডভের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেন।
জাহিদ ও সাইফ ডিংয়ের সাথে বৈঠককালে ওয়াং সিয়াও হুং বলেন, চীন ও মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পঞ্চাশতম বার্ষিকী এবং ‘চীন-মালয়েশিয়া মৈত্রী বছর’-এর সুযোগে, উচ্চ স্তরের মতবিনিময় ও কৌশলগত যোগাযোগ বজায় রাখতে এবং আইন ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা গভীরতর করতে চীন ইচ্ছুক, যাতে চীন-মালয়েশিয়া অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
জাহিদ ও সাইফুদ্দিন, এবারের ‘বৈশ্বিক গণ নিরাপত্তা সহযোগিতামূলক ফোরাম সম্মেলন’ সাফল্যের সাথে আয়োজনের জন্য, চীনকে অভিনন্দন জানান। তাঁরা বলেন, চীনের সাথে আইন প্রয়োগ ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করতে এবং অব্যাহতভাবে মালয়েশিয়া-চীন অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তুলতে আগ্রহী কুয়ালালামপুর।
ইয়াবির সাথে বৈঠককালে ওয়াং সিয়াও হুং বলেন, মিয়ানমারের সাথে আইন প্রয়োগ ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা আরও গভীর করতে, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক জালিয়াতি ও মাদক পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করতে, এবং যৌথভাবে দু’দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষা করতে চীন ইচ্ছুক।
জবাবে ইয়াবি বলেন, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক জালিয়াতিসহ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মিয়ানমার এবং মিয়ানমারে চীনা কর্মী, চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পসমূহের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হবে।
মেভিম্বুর সাথে বৈঠককালে ওয়াং সিয়াও হুং বলেন, জাম্বিয়ার সাথে উচ্চ-স্তরের বিনিময় ও কর্মী পর্যায়ের আদান-প্রদান জোরদার করতে এবং যৌথভাবে ‘বেল্ড অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর আওতায় নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগে দক্ষতা বাড়াতে সহযোগিতা জোরদার করতে চীন ইচ্ছুক। এর লক্ষ্য, চীন ও জাম্বিয়ার সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে নতুন চালিকাশক্তি যোগান দেওয়া। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)