চীনের অন্যতম সেরা শিক্ষক অধ্যাপক ফাং হুয়া ছানের গল্প
2024-09-09 15:30:22

১০ সেপ্টেম্বর চীনের শিক্ষক দিবস। প্রতিবছরের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের সকল স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সেমিস্টার শুরু হয়। এবারও এর ব্যক্তিক্রম হয়নি। এদিকে, শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিবছর চীনে সেরা শিক্ষক নির্বাচন ও তাদের পুরস্কার দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনের একজন প্রবীণ ও অন্যতম সেরা শিক্ষকের গল্প তুলে ধরবো। তিনি প্রায় ৭০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করে এসেছেন। তাঁর প্রচেষ্টায় চীনের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পেট্রোলিয়াম বিভাগ থেকে অনেক সেরা প্রতিভা বের হয়েছেন। চলুন, অধ্যাপক ফাংয়ের গল্প জেনে নেওয়া যাক।

 

জনাব ফাং হুয়া ছান ১৯৩০ সালের মার্চ মাসে চীনের আনহুই প্রদেশের তিংইউয়ান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি তত্কালীন ‘বেইইয়াং’ (থিয়ানচিন) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। পরের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন।

১৯৫২ সালে বেইইয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর, তিনি বেইজিংয়ে আসেন এবং ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর নতুন একটি বিভাগ চালুর দায়িত্ব বর্তায় তাঁর কাঁধে। অথচ ওই বিষয়ের ওপর কোনো পাঠ্যপুস্তক ছিল না। তাই, তিনি নিজে প্রথমে রুশ ভাষা শেখেন এবং পরে রুশ ভাষা থেকে বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। পুরো বই অনুবাদের সময় তিনি পাননি। রাতে যতটুকু অনুবাদ করতেন, পরের দিন ক্লাসে সেটুক শিক্ষার্থীদের শেখাতেন। তিনি পাঠ্যপুস্তকের অনুবাদের অংশটুকু কাগজে লিখে শিক্ষার্থীদের দিতেন।

চলতি বছর জনাব ফাংয়ের বয়স হয়েছে ৯৪। তবে, তিনি আগের মতোই ক্লাস নেন এবং ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেন। তিনি এখনও ঘরের দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে ক্লাসের লেকচার প্রাকটিস করেন। যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার পরই কেবল তিনি ক্লাসে যান।

নিজের শিক্ষকতার কাজ সম্পর্কে অধ্যাপক ফাং বলেন, “একজন শিক্ষক হিসেবে আমি নিজে প্রচুর পড়ি। আমি আমার নিজের ও শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর মানদণ্ড স্থাপন করেছি।” অধ্যাপক ফাংয়ের ক্লাসে দেরি করে যাওয়ার উপায় নেই। যদি দেরি হয়েই যায়, তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে হয়; দুঃখ প্রকাশ করতে হয়। মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের থিসিস দেখার সময় তিনি কঠোরতা অবলম্বন করেন। একটা বানান ভুলও তিনি সহ্য করেন না। তিনি সবসময় শিক্ষার্থীদের বলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ অনেক স্পর্শকাতর; এখানে সামান্য ভুলেরও কোনো সুযোগ নেই।

চাহিদা থাকায়, অধ্যাপক ফাং ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং সেখানে নতুন বিভাগ চালু করেন। তাঁর কয়েকজন শিক্ষার্থী স্নাতক হওয়ার পর পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন চীনের বিজ্ঞান একাডেমি ও চীনের প্রকৌশল একাডেমির একাডেমিসিয়ান হয়েছেন।

১৯৬৪ সালে চীনে তাকাং তেলক্ষেত্র সনাক্ত করা হয়। ওই তেলক্ষেত্র বোহাই সমুদ্রের প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেলক্ষেত্রের সাথে সংযুক্ত। এর মাধ্যমে উপকূলীয় তেল খুঁজে পাওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। অধ্যাপক ফাং এ খবর জেনে বেশ খুশি হন। তিনি নিজের গবেষণার বিষয় স্থল তেলক্ষেত্র ও খনিজসম্পদ মেকানিক্যাল প্রকৌশল থেকে উপকূলীয় তেল সরঞ্জাম গবেষণায় রূপান্তর করেন এবং চীনের উপকূলীয় তেলক্ষেত্র শিল্পের দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করেন।

সেই সময় আবার পাঠ্যপুস্তকের অভাব অনুভূত হয়। তখন অধ্যাপক ফাং নিজেই ‘সমুদ্র থেকে তেল আবিষ্কার ও অনুসন্ধান সরঞ্জাম ও কাঠামো’ শীর্ষক বইটি রচনা করেন। তিনি চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম উপকূলীয় তেল অনুসন্ধান সরঞ্জাম গবেষণাগার স্থাপন করেন এবং উপকূলীয় তেল সরঞ্জামবিষয়ক মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের প্রথম দলটিকে ভর্তি করান। অধ্যাপক ফাং এবং তাঁর গবেষকদল ‘উপকূলীয় তেল ইস্পাত কাঠামোর প্রয়োগ মেয়াদ’ নিয়ে গবেষণা করেন। এর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের গবেষণায় ‘বরফ এলাকায় উপকূলীয় তেল প্ল্যাটফর্মের প্রয়োগ মেয়াদ ও নির্ভরশীল পর্যালোচনা’ সফ্টওয়ার তৈরি করা হয়। এভাবে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মেয়াদ ও বাকি সময় অনুমান করা সম্ভব। এর মাধ্যমে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনের পরিমাণও অনেক বেড়েছে।

যখন শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন, তখন অধ্যাপক ফাং সবসময় মূল লক্ষ্যে অবিচল থাকেন। যখন বিভাগে শিক্ষকের অভাব দেখা দেয়, তখন তিনি নিজের ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্লাসও নিতেন। ১৯৯৬ সালে ৬৬ বছর বয়সের অধ্যাপক ফাং অবসর নেন। তবে তিনি আবার নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অবসর নেওয়ার পর, মেকানিক্যাল বিভাগের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর রচনা যুব শিক্ষকদের ভালো করে শিক্ষকতার কাজ করার জন্য সহায়তা দিয়েছে। ২০১১ সালে তিনি আবার বিশেষজ্ঞ দলের নেতার দায়িত্ব ছেড়ে দেন এবং উপকূলীয় তেল খাতের গবেষণায় আরও মনোযোগ দিতে শুরু করেন। যখন ৮০ বছর বয়সে তিনি ‘উপকূলীয় তেল প্রকৌশল’-এর ওপর দুটি বই প্রকাশ করেন এবং ৯০ বছর বয়সে ‘ফাং ওয়েন ছানের লেখা-উপকূলীয় তেল সরঞ্জামের অগ্রগতি’ শীর্ষক বইটি প্রকাশিত হয়।

যদিও তাঁর বয়স ৯৪ বছর হয়েছে, তবে তিনি যুব শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আগের মতোই আন্তরিক আছেন। ২০২২ সালে যখন বেইজিং পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়, তখন অধ্যাপক ফাং তাদেরকে আন্তরিকতাপূর্ণ চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি বলেন, “১৯৫২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেই আমি এবং ১৯৫৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নবগঠিত বেইজিং পেট্রোলিয়াম একাডেমিতে শিক্ষকতার কাজ শুরু করি। তখন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবেই কাজ করে এসেছি। নতুন শিক্ষার্থীদের সবাইকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানাই।”

নিজের পড়াশোনার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে অধ্যাপক ফান লিখেন, “১৯৪৮ সালের শরত্কালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার আগে, আমি থিয়ানচিনে বেইইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। তখন কুওমিনতাং পার্টি বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কোনো ক্লাস করতে পারছিলেন না। গৃহযুদ্ধের কারণে শুরুর দিকে ভালো করে পড়াশোনা করতে পারিনি আমরা। ১৯৪৯ সালে যখন থিয়ানচিন শহর মুক্ত হয়, তখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের সহায়তায়, আবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শুরু করি। তাই আজকের শিক্ষার্থীরা একটি সুন্দর সময় উপভোগ করতে পারছে। এখন চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। চীনের সচ্ছল সমাজ গঠনে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং দেশকে শক্তিশালী করার পথে অগ্রগিত সাধিত হয়েছে।”

তিনি আরও লেখেন, “যুব শিক্ষার্থীরা যেন সকাল ৮টা, ৯টার সূর্যের মতো প্রাণবন্ত। তোমরা দেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি। নতুন যুগে তোমাদেরকে জাতীয় উন্নয়ন ও পুনরুত্থানে নিজেদের আরও বেশি অবদান রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালের পড়াশোনার মাধ্যমে আরও পরিশ্রম ও সাহসের সাথে নিজেদের দক্ষতা চর্চা করবে, যাতে স্নাতক হওয়ার পর একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী ও দেশের জন্য কল্যাণকর ব্যক্তিতে পরিণত হতে পারো।”

তিনি আরও লিখেছেন, “যারা নিজেদের কাজের ব্যাপারে আশাবাদী, তাঁরা পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করতে পারে। তাই, প্রত্যেক যুবশিক্ষার্থীর উচিত আশাবাদী হওয়া ও আদর্শ ধারণ করা। আদর্শ ছাড়া কোনো দিকনির্দেশনা থাকবে না, জীবনযাপনে কোনো লক্ষ্যমাত্রাও থাকবে না। যুবশিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তখন তাদের জীবন নতুন সময়পর্বে প্রবেশ করে। বড় হওয়ার পর কী ধরনের মানুষ হতে চায়, এ বিষয় নিয়ে ভেবে দেখতে হবে।”

১৯৬০ সালে বেইজিং পেট্রোলিয়াম একাডেমির একটি জরিপ দল নিয়ে তাছিং তেলক্ষেত্রে গিয়ে স্নাতক শিক্ষার্থীদের কাজের মান তদন্ত করেন অধ্যাপক ফাং। তখন বেইজিং পেট্রোলিয়াম একাডেমির স্নাতক শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা পায়। তাঁরা পরিশ্রম ও মনোযোগ দিয়ে এবং দেশপ্রেম ও নিঃস্বার্থ মনোভাব নিয়ে নিজেদের গবেষণাকাজ করছিল। তাই, যুবশিক্ষার্থীদের শুরুর দিকে স্পষ্ট আদর্শের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে উত্সাহ দেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা কী ধরনের মানুষ হতে চায়? কিভাবে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ ব্যক্তিতে পরিণত হওয়া সম্ভব? এ সম্পর্কে অধ্যাপক ফাং চিঠিতে একজন সেরা ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন। তাঁর নাম ওয়াং ছি মিন, যিনি ১৯৬১ সালে বেইজিং পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন এবং চীনের তাছিং তেলক্ষেত্রে তেল অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে তাছিং তেলক্ষেত্রে টানা ২০ বছর ধরে বার্ষিক তেল উত্পাদনের পরিমাণ ৫ কোটি টনে দাঁড়ায় এবং বিশ্বের তেলক্ষেত্র অনুসন্ধান খাতে বিস্ময়কর রেকর্ড সৃষ্টি হয়। তিনি চীনের নতুন যুগে তেল অনুসন্ধানকারীদের জন্য দৃষ্টান্তে পরিণত হন।

বস্তুত, যে কোনো কাজ সম্পন্ন করতে চাইলে, তার জন্য কোনো সহজ পথ নেই। কেবল পরিশ্রম ও সংগ্রামের মাধ্যমে তা করা যায়। পরিশ্রমের সাথে সংগ্রাম করা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা অগ্রগতি অর্জনের পূর্বশর্ত।

তবে সবাই জানেন, প্রতিটি সাফল্যের পিছনে অনেকের প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের কাহিনী রয়েছে। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর চীনের গভীর জলে মানববাহী সাবমার্সিবল সাফল্যের সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে গভীর মারিয়ানা ট্রেঞ্চ ১০৯০৯ মিটার নিচে নেমে নতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করে। বস্তুত, মারিয়ানা ট্রেঞ্চের ১০ হাজার মিটার গভীরে পানির চাপ ১১০ এমপিএ ছাড়িয়ে যায়।  এ চাপ যেন ২০০০টি হাতির একসাথে মানুষের পিঠে পদদলনের সমান। তখন সাবমার্সিবলে মোট ৩ জন গবেষক ছিলেন, যারা নিজেদের জীবন উত্সর্গের প্রস্তুতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামের পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। কারণ, নতুন তৈরি টাইটানিয়াম খাদ শেল চাপ সহ্য করার দক্ষতা বিশ্বের অন্যান্য দেশের শ্রেষ্ঠ সাবমার্সিবলের দৃঢ়তার চেয়ে ৮ গুণ বেশি। এ নতুন কাঁচামালের গবেষণা ব্যাপক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্মীদের প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের সাথে জড়িত। তারাও অধ্যাপক ফাংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী।

‘সত্যতা, কঠোর পরিশ্রম, দেশপ্রেম ও উত্সর্গ, অগ্রগামী ও উদ্ভাবনী থেকে সত্য সন্ধান করা’ চীনের পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্লোগান। সিনচিয়াং ক্যলামা’ই মরুভূমি এলাকায় পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজে অধ্যাপক ফাংও যোগ দিয়েছেন।

তিনি স্মরণ করে বলেন, ১৯৫৩ সালে পেট্রোলিয়াম একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত শতাব্দীর ৬০-এর দশকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী তাছিং তেলক্ষেত্রে গিয়ে তেল অনুসন্ধানকাজে অংশ নেন। ১৯৬৫ সালে বেইজিং পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি ছিল। ১৯৬৫ সালে জাতীয় জরিপ থেকে জানা গেছে, চীনের বিভিন্ন তেলক্ষেত্রের প্রায় ৭০ শতাংশ প্রযুক্তিকর্মী ও ৫০ শতাংশ প্রকৌশলী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী ছিলেন।

চিঠির শেষ দিকে অধ্যাপক ফাং লিখেনছেন, “প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর তোমাদের পড়াশোনা ও জীবনযাপনের পরিবেশ বদলে গেছে। অতীতের পড়াশোনার পদ্ধতি এখন আর কার্যকর হবে না; নিজে নিজে পড়াশোনা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো এবং যত দ্রুত সম্ভব ভালো পড়াশোনার অভ্যাস গঠনে তোমরা সক্ষম হবে বলে আশা করি।”

অধ্যাপক ফাংয়ের চিঠিতে তার আন্তরিকতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, ও শিক্ষকতার প্রতি আবেগ ফুটে উঠেছে। আশা করি, তিনি দীর্ঘকাল সুস্থ থাকবেন এবং চীনের পেট্রোলিয়াম গবেষণার কাজে আরও অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। তাঁর হাত ধরে উঠে আসবে আরও বেশি দক্ষ মানুষ, যারা দেশগঠনে রাখবে ভূমিকা।

(সুবর্ণা/আলিম/রুবি)