সেপ্টেম্বর ৫: গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষসম্মেলন বেইজিংয়ের মহা-গণভবনে শুরু হয়েছে। এতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মূল বক্তৃতা দিয়েছেন, নতুন যুগে চীন-আফ্রিকা সম্পর্কের নতুন অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, আফ্রিকার সঙ্গে বাস্তবসম্মত সহযোগিতার জন্য নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা করেছেন, চীন-আফ্রিকা ঐক্য ও অগ্রগতির নতুন সম্ভাবনা প্রদর্শন করেছেন এবং বৈশ্বিক দক্ষিণের আধুনিকীকরণের জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। যা ২.৮ বিলিয়নেরও বেশি চীনা এবং আফ্রিকান মানুষের সাধারণ আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করে। শীর্ষসম্মেলনে উপস্থিত আফ্রিকান নেতারা চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার ফোরামের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান এবং চীন ও আফ্রিকার জন্য যৌথভাবে আধুনিকায়নের জন্য দশটি বড় অংশীদারি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রস্তাবের উচ্চ প্রশংসা করেন।
চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের সহ-সভাপতি, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ফায়ে বলেছেন যে, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং উভয় পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং যৌথ নির্মাণের ভিত্তিতে একটি অংশীদারি সম্পর্কের মডেল তৈরি করেছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্র মৌরিতানিয়ার প্রেসিডেন্ট গাজওয়ানি যৌথভাবে আধুনিকায়ন উন্নীত করার জন্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কর্তৃক ঘোষিত দশটি অংশীদারিত্বমূলক পদক্ষেপের অত্যন্ত প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, তিনি চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটি বাস্তবায়নে কাজ করবেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন যে, চীন ও আফ্রিকার মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে এবং আফ্রিকার উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।
কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট সাসু বলেন, আফ্রিকা ও চীন একই ইতিহাস এবং মূল্যবোধের ভিত্তিতে কাছাকাছি আসছে। এ অবস্থায় আধুনিকায়ন কোনো সাধারণ স্লোগান নয়; বরং, উভয় পক্ষের অভিন্ন ইচ্ছা সম্মিলিতভাবে সমৃদ্ধি ও শান্তির জন্য এবং উভয় পক্ষ জনকল্যাণে বদ্ধপরিকর।
তাঞ্জানিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান যৌথভাবে আধুনিকায়ন প্রচারে চীন কর্তৃক ঘোষিত দশটি অংশীদারিত্বমূলক পদক্ষেপের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই পদক্ষেপগুলি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতায় দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে এবং আধুনিকায়ন অর্জনে উভয় পক্ষকে সহায়তা করবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসও সেদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। গুতেরেস বলেছেন যে, চীনের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা আফ্রিকান দেশগুলির জন্য উদাহরণ তৈরি করবে। তিনি বলেন,
“দারিদ্র্যবিমোচন-সহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে চীনের অসাধারণ সাফল্য অন্যান্য দেশকে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা শেখার সুযোগ করে দিয়েছে। চীন ও আফ্রিকা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে পারে এবং খাদ্য ব্যবস্থা এবং ডিজিটাল সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর প্রচার করতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল অর্থনীতির কয়েকটি আফ্রিকা মহাদেশে রয়েছে। আফ্রিকার উচিত বাণিজ্য, তথ্য, অর্থ, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য খাতে চীনের সমর্থন কাজে লাগানো।”
দেশ-বিদেশের সর্বস্তরের ৩ হাজার দুইশ জনেরও বেশি মানুষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, প্রতিনিধিদলের প্রধান, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার প্রধান এবং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের অন্যান্য আফ্রিকান সদস্য দেশগুলি রয়েছে।
এদিন বিকেলে রাষ্ট্র পরিচালনা, শিল্পায়ন ও কৃষি আধুনিকায়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা এবং ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর উচ্চমানের যৌথ নির্মাণের চারটি বিষয়ের উপর আলোচনা করেন তারা। এ ছাড়া, জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে চারটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(জিনিয়া/তৌহিদ/ফেই)