সেপ্টেম্বর ২: ৪ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ে ‘চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের শীর্ষ সম্মেলন ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৮ সালের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনের পর দ্বিতীয়বার চীনা ও আফ্রিকান নেতাদের চীনে সমাবেশ হতে যাচ্ছে। চীন বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ, এবং আফ্রিকা মহাদেশে উন্নয়নশীল দেশের সংখ্যা বেশি। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা সম্পর্ককে অনেক গুরুত্ব দেন। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা অভূতপূর্ব নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ব্যক্তিগতভাবে পরিকল্পনা করেছেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেছেন, নতুন যুগে অভিন্ন কল্যাণের চীন-আফ্রিকা সমাজ নির্মাণ গভীর ও দৃঢ় হতে চলেছে এবং চীন ও আফ্রিকার জনগণের উপকার হচ্ছে ও হবে।
২০১৩ সালে মার্চ মাসে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনা প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর প্রথম বিদেশ সফরে আফ্রিকায় এসেছিলেন। তিনি আন্তরিকতা, বাস্তব ফলাফল, প্রকৃত ফলাফল এবং আফ্রিকার প্রতি সদয় বিশ্বাস এবং ন্যায়বিচার ও স্বার্থের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করেছেন, "চীন ও আফ্রিকার সর্বদা একটি অভিন্ন কল্যাণের সমাজের" উপর জোর দিয়েছেন। এটি চীন-আফ্রিকা বন্ধুত্বের এক নতুন যুগ সূচনা করে।
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের জোহানেসবার্গ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং একটি বক্তৃতা দেন, চীন-আফ্রিকা ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের নতুন অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রস্তাব করেন যে, চীন ও আফ্রিকা যৌথভাবে "দশটি প্রধান সহযোগিতা পরিকল্পনা" বাস্তবায়ন করবে।
২০১৮ সালে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তৃতা দেন, নতুন যুগে অভিন্ন কল্যাণের চীন-আফ্রিকা সমাজ ঘনিষ্ঠভাবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত এবং "আটটি প্রধান কর্ম" বাস্তবায়নের প্রতি জোর দেন। ২০২১ সালে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার ফোরামের অষ্টম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং তাতে মূল বক্তৃতা দেন। তিনি চীন ও আফ্রিকার মধ্যে বাস্তব সহযোগিতার জন্য "নয়টি প্রকল্প" ঘোষণা করেন। ২০২৩ সালে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত চীন-আফ্রিকা নেতাদের সংলাপে অংশ নেন এবং অভিন্ন কল্যাণের চীন-আফ্রিকা সমাজ নির্মাণে নতুন অর্থ যুক্ত করেন।
২০১৩ সাল থেকে, চীন আফ্রিকায় ছয় হাজার কিলোমিটারের বেশি রেলপথ, ছয় হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়ক এবং ৮০টিরও বেশি বড় মাপের বিদ্যুত্ সুবিধা নির্মাণে অংশ নিয়েছে। যা আফ্রিকার উন্নয়নে শক্তিশালী শক্তি যুগিয়েছে; এ ছাড়া ২৪টি কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ করেছে, আফ্রিকার দেশগুলিতে ১ মিলিয়নেরও বেশি কৃষক উপকৃত হয়েছে। চীন আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের উন্নয়নশীল দেশ এবং টানা ১৫ বছর ধরে আফ্রিকার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার রয়েছে।
আফ্রিকান দেশগুলি ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ এর উচ্চ-মানের যৌথ নির্মাণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে, ৫২টি আফ্রিকান দেশ এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশন চীনের সাথে "বেল্ট অ্যান্ড রোড" এর যৌথ নির্মাণে সহযোগিতা নথিতে স্বাক্ষর করেছে।
গিনি-বিসাউ, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, অ্যাঙ্গোলা ইত্যাদির মতো বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের প্রেসিডেন্ট চায়না মিডিয়া গ্রুপের সাংবাদিকদের সাক্ষাত্কারে বলেছেন, আমরা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রস্তাবিত সিরিজের উদ্যোগগুলিকে স্বীকৃতি দেই, চীনের দ্রুত উন্নয়ন একটি বৈশ্বিক মডেল, চীন আফ্রিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, এবং আমরা চীনের সঙ্গে পাশাপাশি এগিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
অনুষ্ঠেয় চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের শীর্ষ সম্মেলন ২০২৪ একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়। তা হলো, চীন ও আফ্রিকা বিশ্বব্যাপী শাসন ব্যবস্থার সংস্কারে অংশ নেবে এবং বিশ্বের আধুনিকীকরণে শক্তিশালী প্রেরণা যোগাবে।
(জিনিয়া/তৌহিদ/ফেই)