আগস্ট ২৮, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: উত্তর চীনে কিছুদিনের মধ্যেই শরৎকালীন ফসল তোলা শুরু হবে। শরতের ফসলের বাম্পার ফলন নিশ্চিত করতে বেশ আগে থেকেই নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। কৃষিক্ষেত্রে ড্রোনসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে।
হেইলংচিয়াং প্রদেশ। সবুজ ফসলের মাঠ। ভুট্টা ও ধানের ক্ষেত। ড্রোন দিয়ে মাঠে ছিটানো হচ্ছে কীটনাশক। কৃষিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের। কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি।
শরতে যেন বাম্পার ফসল ঘরে তোলা যায় সেজন্য চীন জুড়ে চলছে প্রস্তুতি। শরৎকালীন শস্যের জন্য উত্তরপশ্চিম চীন হলো প্রধান উৎপাদন এলাকা। হেইলংচিয়াং প্রদেশে স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞরা মাঠে মাঠে ৮ হাজার ৮ বারের বেশি পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন। স্থানীয় শরৎকালীন ফসলের দুটি প্রধান ফসল হলো ভুট্টা ও ধান। এই ফসল যেন ঠিকভাবে বেড়ে ওঠে, কীট পতঙ্গ বা কোন রোগের সংক্রমণ না হয় সেজন্য নেয়া হচ্ছে বহুমুখী পদক্ষেপ।
হেইলংচিয়াংয়ের সুইহুয়া সিটি। এখানে ভুট্টার চাষ হচ্ছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
কাও চিয়ানচোং, জেনারেল ম্যানেজার, কৃষি উন্নয়ন বিভাগ, হোংকুয়াং খামার, পেইতাহুয়াং গ্রুপ। তিনি বলেন, ‘ এই বছর আমরা ২৪০ হেকটর জমিতে ফ্রেশ ভুট্টা বুনেছি এবং বর্তমানের বৃদ্ধি অনুযায়ী আশা করছি প্রতি হেকটর জমি থেকে ২২.৫ টন ভুট্টা পাওয়া যাবে।’
লিয়াওনিং প্রদেশ। এখানে কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন কিভাবে জমিতে সার দিতে হবে । বিভিন্ন রোগ ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। প্রযুক্তিগত নির্দেশনা দিচ্ছেন কৃষকদের। ড্রোনসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে কৃষিক্ষেত্রে।
মধ্যচীনের হ্যনান প্রদেশ। সিনসিয়াং সিটি। এখানকার বিস্তীর্ণ কৃষিক্ষেত্রে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। শরৎকালীন ফসল বেড়ে উঠছে। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও বাম্পার ফলন প্রত্যাশা করছেন কৃষক। এজন্য কৃষি বিশেষজ্ঞ দল মাঠে গিয়ে হাতে কলমে চাষীদের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের শিক্ষা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
হ্যনান প্রদেশে ৫.০৭ মিলিয়ন হেকটর জমিতে শরৎকালীন শস্যের চাষ করা হয়েছে। কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে ড্রোনের মাধ্যমে।
নেইহুয়াং কাউন্টির আনইয়াং সিটির কৃষিক্ষেত্রে ড্রোনের সাহায্যে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে।
সিনসিংয়াং সিটির ভুট্টাক্ষেত্রে গাছের বৃদ্ধি প্রত্যাশা জাগাচ্ছে কৃষকের মনে।
ছিয়াও চিয়াংফাং, পরিচালক, ভুট্টা চাষের গবেষণা অফিস, গ্রেইন ক্রপ ইন্সটিটিউট, হ্যনান একাডেমি অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্স। তিনি বলেন, ‘ভুট্টা খামারে ড্রোনের মাধ্যমে বড় এলাকায় কীটনাশক স্প্রে এবং তথ্য প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগের ফলে এই বছর প্রদেশে ভুট্টা ক্ষেতের পরিমাণ বেড়েছে এবং শরৎকালীন শস্যের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।’
পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের হুয়াই’আন সিটি। এখানে কৃষকরা মাঠে কাজ করছেন। ড্রোন দিয়ে ধানক্ষেতে কীটনাশক ও সার স্প্রে করা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটগুলো ড্রোনের সাহায্যে ৩ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমির ধানক্ষেতে স্মার্ট পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে সার প্রয়োগে দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বহুমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে শরৎকালীন বাম্পার ফলনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে চীন।
শান্তা /মিম