‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৮৪
2024-08-28 13:13:45

 ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।  

৮৪ তম পর্বে যা যা থাকছে:

১. দেয়ালচিত্রে তারুণ্যের বাংলাদেশ 

২. বিদেশি তরুণ তরুণীরা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতিতে কতটা দক্ষতা অর্জন করেছেন

১.  দেয়ালচিত্রে তারুণ্যের বাংলাদেশ 

দেয়ালচিত্র বা গ্রাফিতি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি শিল্পমাধ্যম। দেয়ালচিত্রে শিল্পীর স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ-অনুভূতি স্থান পায়। আবার জনগণের প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবেও ভাস্বর হয় এক একটি দেয়ালচিত্র। দেশের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে দেয়াল লিখনের সংস্কৃতি রয়েছে। বাংলাদেশে এর ইতিহাস খুব পুরানো না হলেও এবারের ইতিহাসের চিত্রপট একেবারেই ভিন্ন। কারণ অনেক আত্মত্যাগের পর তারুণ্যের হাত ধরে এসেছে পরিবর্তনের বিপ্লব।

দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙ্গে মুক্ত বিহঙ্গ হয়ে কখনো প্রতিবাদের দৃপ্ত স্লোগান, কখনো সাম্যের গান গাই আবার কখনো রাষ্ট্র সংস্কার চাই।

 

গুলির সামনে বুক পেতে দেয়া আবু সাঈদ কিংবা মুগ্ধর পানি লাগবে পানি। দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে এমন অসংখ্য গল্পবলা চিত্রকর্ম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজপথে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা সোচ্চার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে দেয়ালে আঁকছেন প্রতিবাদ ও পরিবর্তনের ছবি। তাদের সঙ্গে যোগ দেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাও।

দেয়াল কিংবা পিলারের জঞ্জাল সাফ করে ছাত্রজনতার আন্দোলন ঘিরে গৌরবময় চিত্র আঁকছেন তারা। সেই সঙ্গে চলছে বিমূর্ত প্রতিবাদের চিত্রকর্ম গ্রাফিতি চর্চা।

এসব চিত্রে একদিকে যেমন উঠে এসেছে নির্বিচারে হত্যা, সন্ত্রাস, সহিংসতা, অরাজকতা এবং সাম্প্রদায়িকতাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের অসংখ্য অনিয়মের কথা, অন্যদিকে, সমস্যার সমাধান ও নতুন সম্ভাবনার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

রংতুলি হাতে সাম্প্রতিক আন্দোলনের নানা স্লোগান, নৈতিকতা এবং সচেতনতামূলক লেখনি ফুটিয়ে তুলেছেন তারা। ইতিহাসের সাক্ষী এই প্রজন্মের প্রত্যাশা এসব ছবি দেখেও পরবর্তী প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবে দেশপ্রেমে।

সমাজে বৈষম্য, দুর্নীতি, অবিচারসহ বিভিন্ন সমস্যা ও অসংগতি দূর করে সুন্দর সমাজ ও দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান এই শিক্ষার্থীরা।

প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক : ফয়সল আবদুল্লাহ

২. বিদেশি তরুণ তরুণীরা চীনা ভাষা ও সংস্কৃতিতে কতটা দক্ষতা অর্জন করেছেন

পূর্ব চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের নানফিং সিটি। এখানে বিভিন্ন দেশের তরুণ তরুণীরা কথা বলছেন চীনা ভাষায়। চীনা ভাষায় দক্ষতা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসেছেন এখানে। ২৩তম চাইনিজ ব্রিজ প্রতিযোগিতার গ্লোবাল ফাইনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে এখানে।

১৩০টি দেশের ১৪৭জন প্রতিযোগী এই ফাইনালে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিযোগিতায় রয়েছে ৪০টি মাল্টিপল চয়েজ প্রশ্ন। চীনের জাতীয় অবস্থা, ভূগোল, ইতিহাস, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সব বিষয়েই প্রশ্ন রয়েছে।

থাইল্যান্ডের প্রতিযোগী ইয়াং বিংসুয়ান বলেন, ‘চীনাভাষা শিক্ষার ফলে আমি দেশের সব প্রান্ত থেকে আসা বন্ধুদের দেখা পেয়েছি। আমরা ফুচিয়ানে মিলিত হয়েছি। লোকে বলে ফুচিয়ান একটি আশীর্বাদপুষ্ট স্থান। আমরা এখানে এসে সত্যিই আনন্দিত। আমরা শুধু মজাদার খাবারের স্বাদই নিচ্ছি না, এখানকার ছবির মতো সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যও উপভোগ করছি।’

তরুণ প্রতিযোগীরা ফুচিয়ানের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরছেন। তারা জাদুঘরে চীনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ে জানতে পারছেন। তারা বিখ্যাত চীনা চায়ের স্বাদ নিচ্ছেন।

 

২১ দিন ধরে প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা অর্জন চলছে। বেইজিংসহ চীনের সাতটি শহরে সফর করবেন তারা।

কিউবার প্রতিযোগী রড বলেন, ‘ফুচিয়ান আমার উপরে গভীর প্রভাব রেখেছে যা আমি চিরদিন মনে রাখবো। কিউবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে উচ্চতর ইন্সটিটিউটের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে আগ্রহী এবং এ বিষয়ে আমার দেশের মানুষকেও জানাতে চাই। আমি চীন ও কিউবার মধ্যে একজন সেতু হতে চাই এবং কিউবায় চীনের সংস্কৃতিকে পরিচিত করতে চাই।’

প্রতিযোগীরা চীনের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। তারা চা বাগানে চা পাতা তোলার অভিজ্ঞতাও অর্জন করছেন।

সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে ফিংথান কাউন্টি, ফুচৌ সিটিতে প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন, কন্টিনেন্টাল চ্যাম্পিয়ন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ী পাওয়া যাবে। সম্মাননাও দেয়া হবে।

ফুচিয়ান মিডিয়া গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াং কুয়োহ্য বললেন, ‘প্রতিযোগীরা বেইজিং সিটি  ও ফুচিয়ান প্রদেশের শহরসহ সাতটি শহরে ভ্রমণ করবেন। সেখানে তারা সমৃদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে জানবেন। এই সফরে তাদের চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান হবে। তারা চীনের ঐতিহ্য এবং দ্রুত উন্নয়নের মাধুর্য বুঝতে পারবেন।’ 

তরুণ শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চীন ও নিজ নিজ দেশের মধ্যে গড়ে তুলছেন বন্ধুত্বের সেতু।

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ   

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী