‘স্বপ্ন জাগার সময়’
2024-08-23 10:00:45

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের চীনের তাইওয়ানের একজন বিখ্যাত গায়িকার সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম ছেন শু হুয়া। তাকে গত শতাব্দীর আশির দশকের চীনের সবচেয়ে সুন্দর কণ্ঠের শিল্পী বলা হয়। আর তিনি তখনকার চীনা সংগীত মহলের প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পী। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে ছেন শু হুয়ার কিছু সুন্দর গান শুনবো।

 

কিছু মানুষ অনেক চেষ্টার পর গায়ক হতে পারেন। তবে ছেন শু হুয়ার গায়িকা হওয়া ছিল ভাগ্যের লিখন। ছেন শু হুয়া ১৯৫৪ সালে চীনের তাইওয়ানে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে তখনকার তাইওয়ানের বৃহত্তম সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ছেন এবং সুষ্ঠুভাবে চ্যাম্পিয়ন হন। পরে তিনি তাইওয়ানের বিখ্যাত সংগীত কোম্পানিতে শিশুশিল্পী হিসেবে যোগ দেন। ১১ বছর বয়সে ছেন শু হুয়া তার প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করেন। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নিয়মিতভাবে টিভি সংগীত অনুষ্ঠানে পরিবেশন করতে থাকেন।  

 

মাধ্যমিক স্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৮ বছর বয়সে ছেন শু হুয়া হাই শান সংগীত কোম্পানি যোগ দিয়ে একজন পেশাদার শিল্পীর তালিকায় নাম লেখান। ১৯৭৩ সালে তিনি তার প্রথম অ্যালবাম ‘ভালোবাসার সূর্য’ প্রকাশ করেন। খুব তরুণ হওয়ায় সে সময় ছেন শু হুয়ার গানও ছিল প্রফুল্ল ও প্রাণশক্তিসম্পন্ন; আর লোকেরা তাকে ‘আনন্দিত মেয়ে’ বলে ডাকত। ১৯৭৯ সালে ছেন শু হুয়ার গান ‘সৌন্দর্য ও দুঃখ’ প্রকাশিত হয়। গানটি ব্যাপক প্রচলিত হয় এবং সে সময় তার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি গানে পরিণত হয়।বন্ধুরা, এখন ছেন শু হুয়ার গান ‘সৌন্দর্য ও দুঃখ’ শুনবো।

 

‘সৌন্দর্য ও দুঃখ’ জনপ্রিয় হওয়ার পর ছেন শু হুয়ার নাম সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে। হাই শান সংগীত কোম্পানিতে ৬ বছর কাজের সময়, ছেন শু হুয়া ১০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় ‘সূর্য আমার সাথে বাড়ি ফিরে’ অ্যালবামটি। এটি ১০টি অ্যালবামের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। অ্যালবামে দ্রুত লয়ের গানের পাশাপাশি ধীর লয়ের গানও রয়েছে। এটি প্রকাশের পরই দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং সে বছর তাইওয়ানে অ্যালবামটি বিক্রির পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি।বন্ধুরা, এখন শুনুন এই অ্যালবামের প্রধান গান ‘সূর্য আমার সাথে বাড়ি ফিরে’।

 

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ১৯৮৩ সালে ছেন শু হুয়া পাই তাই সংগীত কোম্পানিতে যোগ করেন। পরের তিন বছরে ছেন শু হুয়া রক, পপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বৈশিষ্ট্যময় গানসহ বিভিন্ন শৈলীর গান গেয়েছেন এবং তাতে সাফল্য পান। ১৯৮৫ সালে ছেন শু হুয়া তাইওয়ানের সবচেয়ে বিখ্যাত অ্যাওয়ার্ড----গোল্ডেন বেল অ্যাওয়ার্ডের বার্ষিক শ্রেষ্ঠ গায়িকার পুরস্কার পান। বন্ধুরা, এখন সে সময়ে ছেন শু হুয়ার খুব জনপ্রিয় একটি গান ‘সমুদ্রের গান’ শুনবো।

 

১৯৮৮ সালে ছেন শু হুয়া আরও একটি বিখ্যাত সংগীত কোম্পানি রক রেকর্ডে যোগ দেন এবং চীনের বিখ্যাত প্রযোজক ও গায়ক লি চোং শেংয়ের শিক্ষার্থী হন। তখন থেকে ছেন শু হুয়ার সংগীত আরও পরিপক্ব হয়ে ওঠে এবং তার গান প্রফুল্ল শৈলী থেকে গভীর, কোমল শৈলীর দিকে মোড় নেয়। ১৯৮৯ সালে লি চোং শেং ছেন শু হুয়ার জন্য অ্যালবাম ‘তোমাকে বলি, তোমার কথা শুনি’ তৈরি করেন। অ্যালবামটি বিশাল সাফল্য পায় এবং তাইওয়ান সংগীত ইতিহাসে এটি ১০ লাখেরও বেশি বিক্রি হয়। মূলত এটিই হলো ছেন শু হুয়ার সংগীত জীবনের শিখরে আরোহণ। আর সেই অ্যালবামের অনেক গান এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে আছে।

বন্ধুরা, এখন অ্যালবামের একটি সুন্দর গান ‘স্বপ্ন জাগার সময়’ শুনবো।

 

অ্যালবাম ‘তোমাকে বলি, তোমার কথা শুনি’ ব্যাপক সাফল্য অর্জনের পর ছেন শু হুয়া বিভিন্ন চলচ্চিত্রের জন্য অনেক গান গেয়েছেন। তার গানে শুধু সুন্দর কণ্ঠ ও আবেগের পাশাপাশি গানগুলো চলচ্চিত্রের গল্প ও ছবির সঙ্গে মিলে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বন্ধুরা, এখন শুনুন চীনের জনপ্রিয় একটি চলচ্চিত্রের জন্য গাওয়া তার একটি গান ‘জিজ্ঞাসা’।

 

১৯৯৮ সালে ছেন শু হুয়া ব্যক্তিগত কারণে সংগীত মহল থেকে প্রস্থান করে সবার দৃষ্টির আড়ালে চলে যান। তার পারফরমেন্স দেখা না গেলেও তার গান এখনও অনেকেই পছন্দ করে এবং বার বার শোনেন। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষে ছেন শু হুয়ার আরও একটি জনপ্রিয় গান ‘সিয়াও হোং ছেন’ শুনবো, আশা করি তার গান আপনাদের ভালো লাগছে।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবারও কথা হবে।

(তুহিনা/তৌহিদ/স্বর্ণা)