‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।
৮৩ তম পর্বে যা যা থাকছে:
১. আন্দোলনের পর বাংলাদেশ নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা
২. আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক পেলোড প্রতিযোগিতায় তরুণদের সৃজনশীলতা প্রকাশ
১. আন্দোলনের পর বাংলাদেশ নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরকে সংস্কার করা ছাত্রদের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে কেউ যেনো ফ্যাসিজম কায়েম করতে না পারে এবং স্বৈরশাসক হয়ে উঠতে না পারে এমন একটি রাষ্ট্রগঠনে এই সরকার কাজ করবে বলে জানান এই সমন্বয়ক। এদিকে,গণঅভ্যত্থানের পর সহিংসতা প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কাজ করছে বলে জানান আরেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের ঢাকা ব্যুরোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তারা এসব কথা বলেন। এসময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ নিয়ে তাদের ভাবনার কথা জানান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে এইটা বলা খুবই কঠিন। কারণ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ১৫ বছরে এমন একটা সিস্টেম তৈরি করেছিলেন, যার কারণে পুরো ব্যবস্থাটা একটা স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। ফলে একটা নতুন সরকার ক্ষমতায় এলেও এই ব্যবস্থায় তার জন্যও স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা সহজ।’
‘তাই আমরা মনে করি, রাষ্ট্র সংস্কার করা খুব জরুরি। আর এর জন্য সবার আগে হাত দিতে হবে আমাদের সংবিধানে। কারণ সংবিধানের যে ৭০ তম অনুচ্ছেদ, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা জরুরি।’ আমরা মনে করি, ‘সংবিধানটাকে সংস্কারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক করতে হবে।’
এদিকে, বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরকে সংস্কার করা ছাত্রদের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে কেউ যেনো ফ্যাসিজম কায়েম করতে না পারে এবং স্বৈরশাসক হয়ে উঠতে না পারে এমন একটি রাষ্ট্রগঠনে এই সরকার কাজ করবে বলে জানান এই সমন্বয়ক।
শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হান্নান মাসুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ ভিত্তিক রাজনীতি থাকবে কিন্তু কোনো দলীয় রাজনীতি কিংবা লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি থাকবে না।‘
শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি আমূল পরিবর্তন আসবে জানিয়ে হান্নান মাসুদ বলেন, ‘যেখানে কোনো নকল থাকবে না, প্রশ্ন ফাঁস থাকবে না এবং শিক্ষক নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে।’ সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘একটি বিজ্ঞান ও নৈতিকতাভিত্তিক কারিকুলাম আমরা চাচ্ছি। সেটা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বসবেন এবং এর জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম গঠন করা হবে।’
আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিসের শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী মাহমুদা ইমদাদ বলেন,
''১৭ জন উপদেষ্টাও এতো পূজনীয় না, আমরা অবশ্যই আশা করি, তারা যে কাজগুলো করবেন সেটার জন্য জবাবদিহিতা যেনো তারা নিশ্চিত করেন এবং তারা যেনো অবশ্যই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন।
প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
২. আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক পেলোড প্রতিযোগিতায় তরুণদের সৃজনশীলতা প্রকাশ
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক পেলোড প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে তরুণ মেধাবীরা তাদের উদ্ভাবনী ধারণা এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনগুলো প্রদর্শন করেন।
গত কয়েক মাস ধরে, বিভিন্ন দেশের দুইশর বেশি দল কঠিন এক প্রাক-নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। ১০টি দেশের ৩০টি দলকে চূড়ান্ত তিন দিনের ইভেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বেছে নেওয়া হয়, যেখানে তারা একটি প্যানেলে তাদের কাজ উপস্থাপনের সুযোগ পান।
তাদের কাজগুলোর মধ্যে ছিল- সৃজনশীল নকশা, পোষা প্রাণীর মতো দেখতে এমন এক রোবট যা মহাকাশে নভোচারীদের বন্ধু হতে পারে এবং উচ্চপ্রযুক্তির ক্যামেরাযুক্ত মিনি-স্যাটেলাইট। সবকটি উদ্ভাবনই বিচারক ও দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
প্রেজেন্টেশন এবং আলোচনার বেশ কয়েকটি রাউন্ডে অনেক বিদেশি তরুণও পুরস্কার জেতেন। তবে শীর্ষ স্বর্ণপদক পুরস্কারটি পান বেইজিং ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, হংকং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং নর্থ চায়না ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির একটি যৌথ দল।
এই বছর প্রতিযোগিতাটি চীনা সোসাইটি অফ অ্যাস্ট্রোনটিক্স, বেইজিং ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাস্ট্রোনটিক্স এবং চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অফ হংকংয়ের যৌথ আয়োজনে শুরু হয়।
আয়োজকরা জানান, কিছু বিজয়ী প্রকল্পকে আরও পরিমার্জিত করা যেতে পারে এবং এমনকি ভবিষ্যতে কোনও দিন এসব প্রকল্পের মহাকাশে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
স্পেস বায়োলজি অ্যান্ড মেডিকেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ত্যং ইউলিন তার প্রত্যাশার কথা জানান।
"আমরা আশা করি সমস্ত প্রতিযোগী এবং অংশীদাররা এই ইভেন্টের মাধ্যমে সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলতে পারে। আমরা শিক্ষার্থীদের শেখার, যোগাযোগ এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার আশা করি।"
প্রতিযোগিতাটি ৫০টিরও বেশি দেশ এবং অঞ্চলের এক হাজারের বেশি তরুণ অংশগ্রহণকারীকে আকর্ষণ করেছে।
প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
সম্পাদক : ফয়সল আবদুল্লাহ
আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।
পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী
অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল/ রওজায়ে জাবিদা ঐশী
সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী