আগস্ট ২০: ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দেশটির প্রেসিডেন্ট তো লাম, গতকাল (সোমবার) বেইজিংয়ের মহাগণভবনে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দেশের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, তিনি তো লামের সঙ্গে যৌথভাবে, চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তুলতে আগ্রহী।
ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করায় তো লামকে অভিনন্দন জানিয়ে সি চিন পিং বলেন, “সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, প্রথম বিদেশ সফরে আপনি চীনে আসলেন। এতে বোঝায় যায়, দুই পার্টি ও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ওপর আপনি গুরুত্ব দেন এবং চীন-ভিয়েতনাম দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত স্থানে রাখেন। আপনার সঙ্গে ভালো কাজের সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব গড়তে চাই। আমরা একসাথে চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তুলবো।”
চীনের ও ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির আদর্শ এক উল্লেখ করে সি চিন পিং বলেন, “বর্তমানে বিশ্বের দুটি শাসক কমিউনিস্ট পার্টি হিসেবে, চীন ও ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টিদ্বয়ের উচিত, বন্ধুত্বপূর্ণ মূল উদ্দেশ্যকে মনে রাখা, ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব অব্যাহত রাখা, কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে মেনে চলা, কৌশলগত চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ার কাজ এগিয়ে নেওয়া, বিশ্বে সমাজতন্ত্রের বিকাশে কাজ করা। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের পথ ভবিষ্যতে আরও প্রশস্ত হবে।”
পাশাপাশি, সিপিসি-র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনসংশ্লিষ্ট তথ্য তুলে ধরেন সি চিন পিং। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাথে রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে এবং রাষ্ট্র পরিচলনার ব্যবস্থা ও শক্তি আরও আধুনিক করার লক্ষ্যে কাজ করে যেতে ইচ্ছুক চীন।
বৈঠকে তো লাম বলেন, “ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পদ গ্রহণের পর, এটা আমার প্রথম সফর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার প্রথম চীন সফর। এতে প্রতিফলিত হয় যে, আমাদের পার্টি ও দেশ চীনের সাথে সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং চীনকে পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে রাখে। চীনের পার্টি ও সরকারের সিনিয়র নেতাদের সাথে আমি ও ভিয়েতনামের সিনিয়র নেতারা ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চাই এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে গভীরতর করতে চাই। কমরেড ও ভাই হিসেবে আমরা সবসময়, চীনের প্রতিটি ইতিবাচক পদক্ষেপের প্রশংসা করি। আমরা আবার জোর দিয়ে বলি, ভিয়েতনাম দৃঢ়ভাবে ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলবে; তাইওয়ান চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
আলোচনার পর উভয় পক্ষ যৌথভাবে পার্টি স্কুল, যোগাযোগ, শিল্প, বাণিজ্য, অর্থনীতি, শুল্ক, স্বাস্থ্য, সংবাদ সংস্থা ও মিডিয়া, স্থানীয় এলাকা, জনগণের জীবিকাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নথি স্বাক্ষর করে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর সি চিন পিং ও তো লাম একটি ছোট আকারের চায়ের আড্ডায় বসেন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গভীরভাবে মতবিনিময় করেন।
আলোচনার আগে তো লাম ও ভিয়েতনামি ফার্স্টলেডির জন্য মহাগণভবনের পূর্ব দরজায় সি চিন পিং ও চীনের ফার্স্টলেডি ফাং লি ইয়ুয়ান একটি স্বাগত অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।
চীনে তো লামের সফরকালে উভয় পক্ষ একটি যৌথ ঘোষণাও প্রকাশ করে। এতে দু’দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নয়ন ও চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। (অনুপমা/আলিম/ওয়াং)