সিজিটিএন জরিপ: মার্কিন সেনাবাহিনীতে যৌন নিপীড়ন ও পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনে গভীর উদ্বেগ
2024-08-19 17:05:31

আগস্ট ১৯: মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়নের কেলেঙ্কারি আবারও উন্মোচিত হয়েছে এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমানের চেয়ে তা দ্বিগুণের বেশি! সারা বিশ্বের নেটিজেনদের উপর চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজির সংবাদমাধ্যম সিজিটিএনের চালানো একটি সমীক্ষা দেখায় যে, উত্তরদাতাদের ৮৮.৯৫ শতাংশ মার্কিন সেনাবাহিনীতে যৌন নিপীড়নসহ পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা দেখায় যে, ২০২৩ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়নের মামলার সংখ্যা ৭৩ হাজার ৬৯৫-এ পৌঁছেছে, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমান করা ২৯ হাজারের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। খবরটি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক জনমত উত্তাল হয়ে ওঠে। দুই-স্তরের পার্থক্য দেখানো পরিসংখ্যানের মুখোমুখি হয়ে উত্তরদাতাদের ৯৪.২১ শতাংশ বিশ্বাস করে যে, মার্কিন সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সেনাবাহিনীতে পদ্ধতিগত যৌন নির্যাতনের ঘটনা গোপন করেছে। ঘনঘন যৌন নিপীড়নের কেলেঙ্কারির সম্মুখীন হয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বাহ্যিক তদন্তকে প্রতিরোধ করেছে, তারা দাবি করেছে যে, তথাকথিত সামরিক শৃঙ্খলা ব্যবস্থার মধ্যে তা সমাধান করা যেতে পারে। এই বিষয়ে ৯৩.৯ শতাংশের উত্তরদাতারা বিশ্বাস করে যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে এবং এর বিবৃতিটি অবিশ্বাস্য ছিল। ৯৪.২১ শতাংশের উত্তরদাতা উন্মুক্ততা এবং ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোর একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম জানায় যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী দ্বারা সংগঠিত ইয়ুথ রিজার্ভ অফিসার ট্রেনিং কর্পস তথাকথিত ‘আদেশ মান্য করুন এবং শৃঙ্খলা পালন করুন’ পরিবেশ স্থাপন করে এবং এটি শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক লঙ্ঘন করার অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করে। এই বিষয়ে ৮২.৮ শতাংশের উত্তরদাতারা বিশ্বাস করেন যে, বারবার যৌন নিপীড়নের কেলেঙ্কারিগুলো মার্কিন সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ তত্ত্বাবধান এবং অকার্যকর শাস্তির ত্রুটিগুলো প্রকাশ করেছ।

মার্কিন সামরিক বাহিনী ছাড়াও, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ মার্কিন সেনাবাহিনীর বিদেশী সামরিক ঘাঁটিতে যৌন নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে এবং তারা বারবার আইনি শাস্তি এড়িয়ে গেছে, যার ফলে তারা সেখানকার অবস্থানরত জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। জনমত জরিপে দেখা যায়, ৯৩.৭৪ শতাংশের উত্তরদাতারা বিশ্বাস করেন যে, এটি মার্কিন আধিপত্যের আরেকটি বহিঃপ্রকাশ ছিল; ৯৩.৩৫ শতাংশের উত্তরদাতারা দৃঢ়ভাবে দাবি করেছে যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী নিপীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইবে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনবে। ৯২.৩১ শতাংশ উত্তরদাতারা বলেন, মার্কিন সেনাবাহিনীর দ্বারা বারবার প্রকাশিত যৌন নিপীড়ন কেলেঙ্কারিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক খ্যাতির ক্ষয়কে দ্রুততর করছে।

সিজিটিএনের এই জনমত জরিপ ইংরেজি, স্প্যানিশ, আরবি, ফরাসি এবং রাশিয়ান প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করা হয়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে মোট ২১ হাজার ৭৬৭ জন বিদেশী নেটিজেন জরিপে অংশ নেন এবং তাদের মতামত প্রকাশ করেন।

(লিলি/হাশিম/তুহিনা)