“এখানকার মাধ্যমে আমরা সহজে বিশ্ব পণ্যদ্রব্য ক্রয় এবং বিক্রয় করতে পরি।” চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের মাধ্যমে ছোংছিং আন্তর্জাতিক লজিস্টিক সংযোগস্থল পার্কে পাঠানো এক একটি আমদানিকৃত গাড়ি দেখে, কার্লসন (ছোংছিং) আমদানি ও রপ্তানি ট্রেডিং লিমিটেড কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ফু শিগাং এমন কথা বললেন।
একটি রূপান্তরিত গাড়ি আমদানি ও রপ্তানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্লসন গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী, রূপান্তরিত গাড়িগুলো ইউরোপ থেকে চীনে পরিবহন করে। কিন্তু এ সব গাড়ি আমদানি করতে ইউরোপীয় ব্যবসায়িদের এককালীন অর্থপ্রদান করতে হয়। এতে মাঝারি ও ছোট আকারের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক চাপ খুব বেশি হয়।
সৌভাগ্যবশত, রেলওয়ে বিল অব লেডিং এখন অর্থায়নের নথি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সম্প্রতি চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের মাধ্যমে কার্লসন জার্মানী থেকে ১০টি গাড়ি আমদানি করেছে। আগে ১ মিলিয়ন ইউরো নগদ প্রদান করতে হতো, কিন্তু এখন কোম্পানিকে রেলওয়ে বিল অব লেডিং-এর ওপর নির্ভর করে, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট লেটার ইস্যু করে, ব্যাংকের তহবিল পায়। চূড়ান্তে শুধু ১.৫ লাখ ইউরো নগদ দিতে হয়।
ছোংছিং আন্তর্জাতিক লজিস্টিক সংযোগস্থল পার্ক নির্মাণ লিমিটেড লায়াবিলিটি কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হান ছাও জানান, “অনেক মাঝারি ও ছোট আকারের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রেল পরিবহনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মালামাল পরিবহন করে, সময় বাঁচাতে ও টার্নওভারের গতি বাড়াতে চায়। কিন্তু পুনঃঅর্থায়ন জামানতের অভাব। এ ছাড়া এর আগে ব্যাংকগুলো শুধু সামুদ্রিক বিল স্বীকার করতো, তাই প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের বন্দোবস্ত করাটা অনেক কঠিন ছিল, পরিষেবা সম্প্রসারণ করতে অসুবিধাজনক ছিল।”
চীনের রেল পরিবহন নথিপত্র আর্থিক পরিষেবা প্রথম দফা পরীক্ষামূলক জায়গাগুলোর অন্যতম হিসেবে ২০১৭ সালে ছোংছিং চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনে বিশ্বে প্রথম “রেল বিল অব লেডিং ইন্টারন্যাশনাল লেটার অফ ক্রেডিট” খুলেছে। বর্তমানে শিল্পপার্কে প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬ হাজারের বেশি “রেল বিল অব লেডিং ইন্টারন্যাশনাল লেটার অফ ক্রেডিট” খুলেছে, যার পরিমাণ ৪০ কোটি ইউয়ান।
সংস্কার ও সৃজনশীল ব্যবস্থা অব্যাহতভাবে প্রবর্তন করার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পপার্কটি দ্রুততার সাথে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এ গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক সংযোগস্থলে বড় হচ্ছে।
শিল্পপার্কের ওয়েস্টার্ন ল্যান্ড অ্যান্ড সি নিউ চ্যানেল অপারেশন ডিসপ্যাচিং সেন্টারে ডিজিটাল স্ক্রিনে সেদিন মালামাল পরিবহন পরিস্থিতি দেখাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বন্দরের আইকন ক্লিক করলে, সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল বন্দরের বাস্তব সময়ের ছবি দেখা যায়।
লজিস্টিক ডেটার গ্রুপ এখানে একত্রিত হয়ে একটি ‘ডিটিজাল স্থল-নৌ নতুন চ্যানেল’ গড়ে তোলা হয়। ছোংছিংয়ের মাল্টিমডেল পরিবহন ‘একক সিস্টেম’ অনুসন্ধান থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পুরো পরিবহন স্টোরেজ প্রক্রিয়া ‘এক অর্ডার শেষ পর্যন্ত’ বাস্তবায়ন করতে পারে। লজিস্টিক কার্যকারিতা উন্নত করার পাশাপাশি লজিস্টিক মূল্যও হ্রাস করা যায়।
এ ছাড়া ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা নতুন করে রেল-নৌ সংযুক্ত পরিবহন ‘ওয়ান কোড পাস’ তৈরি করি। আমদানি-রপ্তানি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে কার্গো স্থান বুকিং করার পর একটি কিউ আর কোড পাবে। তার মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়া সন্ধান করা যায়। কাগজ লেডিং বিল আর লাগবে না। ছোংছিং সরকার বন্দর লজিস্টিক অফিসের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন বিভাগের উপ-প্রধান সুন খ্য জানালেন এ সব তথ্য।
রেলওয়ে বিল অব লেডিং থেকে রেল-নৌ সংযুক্ত পরিবহনের ‘এক অর্ডার শেষ পর্যন্ত’, আবার ‘ওয়ান কোড পাস’ পর্যনত্, সংযোগস্থল পার্ক এলাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পরিষেবার জন্য ধারাবাহিক ব্যবস্থা হলো ছোংছিং ‘স্থল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নিয়ম’ অন্বেষণ করা, মূল-ভূখণ্ড উন্মুক্ত সমন্বিত সংযোগস্থল তৈরির একটি সূচি। বর্তমানে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ ও ইয়াংসি নদী অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংযোগ বিন্দুতে অবস্থিত ছোংছিং অব্যাহতভাবে বহু চ্যানেল সংযোগের প্রাধান্য সম্প্রসারণ করে, ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক চ্যানেল ব্যবস্থা সুসম্পূর্ণ করে, পশ্চিমাঞ্চলের অন্তর্দেশীয় অঞ্চল নিয়ে পাহাড় ও নদী পার হয়ে, বিশ্বের দিকে যাচ্ছে।
আগামী পদক্ষেপে সংযোগস্থল পার্ক এলাকা অধিকতরভাবে চ্যানেল সংযুক্ত মান উন্নীত করে, গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক পাশ করে, ইতিবাচকভাবে বিভিন্ন পক্ষের সৃজনশীল সংযোগ অন্বেষণ করে, লজিস্টিক ট্র্যাকশন হিসাবে সংশ্লিষ্ট দেশ ও অঞ্চলের শিল্প উন্নয়নে সহায়তা দেবে।
(প্রেমা/হাশিম)