এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিনচিয়াং নিয়ে কথা বলব।
গত ১৩ আগস্ট ৫৫টি কনটেইনার বহনকারী একটি ট্রেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, ও অন্যান্য পণ্য নিয়ে, সিনচিয়াংয়ের খোরগোস রেলবন্দর দিয়ে, জর্জিয়ার তিবিলিসি পৌঁছায়। খোরগোস রেলবন্দর দিয়ে, চলতি বছর চীন থেকে মধ্য-ইউরোপগামী ট্রেনের সংখ্যা, গত বছরের তুলনায় ১১ দিন আগেই ৫০০০টিতে পৌঁছায়।
চলতি বছরের শুরু থেকে, খোরগোস রেলবন্দর দিয়ে চীন-ইউরোপ রেলপথে ট্রেন চলাচল বাড়তে থাকে। এ সময়কালে এই পথে গড়ে ট্রেন চলেছে ২১টি। এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ট্রেন চলেছে ৩২টি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিন পণ্য, কৃষি ও আনুষঙ্গিক পণ্য, এবং ‘চীনে তৈরি’ অন্যান্য পণ্য, খোরগোস বন্দর দিয়ে মধ্য-এশিয়া ও ইউরোপীয় বাজারে যাচ্ছে। বিশেষত, নতুন শক্তিচালিত যানবাহনের একটি বড় সংখ্যা চীন-ইউরোপ রেলপথে চলতি বছর রফতানি হয়েছে ও হচ্ছে। বর্তমানে, ৪ ব্র্যান্ডের গাড়ি খোরগোস রেলবন্দর দিয়ে রাশিয়া, কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানসহ ‘বেল্ড অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বরাবর দেশগুলোতে রফতানি হচ্ছে।
একটি আন্তর্জাতিক ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং সংস্থার প্রধান বি শিলিং বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোতে উত্পাদিত বিয়ার ও দৈনন্দিন পণ্যসহ, বিভিন্ন আমদানিকৃত ভোগপণ্য চীন-ইউরোপ রেলপথে চীনা বাজারে প্রবেশ করছে। চীনারা এখন বাড়ি থেকে বের না-হয়েও ‘গ্লোবাল শপিং’-এর আমেজ অনুভব করছেন।
খোরগোস রেলবন্দর দিনরাত ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত থাকছে। বন্দরের সক্ষমতাও দিন দিন বাড়ছে। ট্রেনগুলো এখন স্টেশানে আগের চেয়ে কম সময় থামছে।
খোরগোস স্টেশন সেফটি প্রোডাকশন কমান্ড সেন্টারের কর্মকর্তা ইয়াং লিইয়ে বলেন, বন্দর দিয়ে ট্রেন চলাচল বাড়ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টানা ১১ মাস ধরে গড়ে প্রতি মাসে ট্রেন চলাচল করছে ৬০০টি। আর চলতি বছরের জুলাইয়ে, মাসিক ট্র্যাফিকের সংখ্যা ৭৮০টিতে পৌঁছায়, যা একটি রেকর্ড।
আবদুল হালিলি আবদুল হালেক হলেন খোরগোস শুল্ক তদারকির তৃতীয় শাখার চতুর্থ স্তরের হোস্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা সপ্তাহে সাত দিন ও দিনরাত ২৪ ঘন্টা শুল্ক ছাড়পত্র দিয়ে আসছি। শুল্ক ছাড়পত্র দেওয়ার পদ্ধতি সহজ করা হয়েছে। শুল্ক ছাড়পত্র দেওয়াসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বন্দর ত্যাগ করতে একটি ট্রেনের গড়ে মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।”
এ পর্যন্ত, খোরগোস রেলবন্দর দিয়ে অতিক্রমকারী চীন-ইউরোপ (মধ্য-এশিয়া) ট্রেনের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ট্রেনলাইনের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫টিতে।
২০১১ সালে প্রথম চীন-ইউরোপ (মধ্য-এশিয়া) ট্রেন আলাশঙ্কু বন্দর দিয়ে যাত্রা করার পর থেকে, চীন-ইউরোপ (মধ্য-এশিয়া) ট্রেন ধীরে ধীরে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বরাবর দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ধমনীতে পরিণত হয়েছে।
চীন-ইউরোপ (মধ্য-এশিয়া) ট্রেনগুলোর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে এবং অপারেশনের সুযোগও প্রসারিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত, ১২০টি চীন-ইউরোপ (মধ্য-এশিয়া) ট্রেনলাইন আলাশঙ্কু রেলবন্দর দিয়ে বয়ে গেছে। এসব ট্রেনলাই ব্রিটেন, কাজাখস্তান, ও উজবেকিস্তানসহ ২১টি দেশে পৌঁছেছে। এই রেলপথে বহনকৃত ২ শতাধিক ধরণের পণ্যের মধ্যে রয়েছে অটোমোবাইল ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি, পোশাক, সাধারণ পণ্যদ্রব্য, এবং বৈদ্যুতিন পণ্য, ইত্যাদি। আলাশঙ্কু বন্দর দিয়ে চীন-ইউরোপ রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনের সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। এর মধ্য দিয়ে, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়নের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও শক্তি ফুটে উঠেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ রেলপথটি কেবল যে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়েছে, তা নয়; বরং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশের জন্যও সত্যিকারের কল্যাণ বয়ে এনেছে।
প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে সিচাং’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও সিচাংয়ের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://bengali.cri.cn/ সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)