অগাস্ট ১৪: বর্তমান বিশ্ব শান্তিপূর্ণ নয়, দমনপীড়ন কর্মকাণ্ডে বিশ্ববাসীর অনেক ক্ষতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিও বহু সমস্যার মুখে পড়েছে। দায়িত্বশীল বড় দেশ হিসেবে চীন সবসময় ন্যায়বিচার রক্ষা করে আসছে।
‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতি’ প্রকাশের ৭০তম বার্ষিকীর স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, আমাদের সততা ও ন্যায়বিচারের ধারণা পালন করতে হবে। যদি সততা ও ন্যায়বিচার না থাকে, শক্তির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। তিনি জানান, নতুন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জের সামনে, জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় ভূমিকা জোরদার করতে হবে। জাতিসংঘ সনদ ও নীতি আগের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। প্রকৃত বহুপক্ষবাদ বাস্তবায়ন করতে হলে, বিভিন্ন দেশকে একযোগে আন্তর্জাতিক নিয়ম রচনা করতে হবে ও রক্ষা করতে হবে। বিশ্বের বিষয়গুলোকে বিভিন্ন দেশকে আলোচনা করতে হবে। যে পক্ষ বেশি শক্তিশালী, সে পক্ষের কথা অন্য সব পক্ষকে শুনতে হবে; যা অগ্রহণযোগ্য।
সততা ও ন্যায়বিচারে অবিচল থাকা ও রক্ষা করা হচ্ছে চীনের কূটনীতির ঐতিহ্য ও নীতি। ৭০ বছর আগে প্রথমবার ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতি’ উত্থাপন থেকে, নতুন যুগে নতুন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠা এগিয়ে নেওয়া পর্যন্ত, চীন সবসময় বাস্তব কার্যক্রমে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার রক্ষা ও বিশ্বশান্তি ও উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার জন্য অবদান রেখেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশ বড় হোক বা ছোট হোক, সব দেশ সমান বলে মনে করে চীন। চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করে নি।
বিশ্বে এখন আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতি গুরুতর হয়ে উঠছে। এর সামনে, চীন সবসময় ন্যায়বিচার রক্ষা করে আসছে। কিছু দেশ আন্তর্জাতিক বিষয়ে একাধিপত্য করতে চায়। এ দৃঢ় বিরোধিতা করে চীন। সব অবৈধ ও একতরফা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার তাগিদ দেয় চীন। এ ছাড়া, চীন উন্নয়নশীল দেশের অভিন্ন ও সঠিক স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করে এবং আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার ন্যায়ের দিকে উন্নয়ন এগিয়ে নেয়। শক্তির রাজনীতির বিরোধিতা করার পাশাপাশি, ন্যায়বিচার রক্ষা করে আসছে চীন। নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতিগত মর্যাদা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় তা প্রতিফলিত হয়। বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ ও উস্কানির বিরুদ্ধে চীন দৃঢ়ভাবে শক্তিশালী সংগ্রাম করে আসছে। নানা ধরনের অযৌক্তিক বাধার বিরুদ্ধে চীন যথাযথ ও যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিশ্বের বহুপক্ষবাদ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে ন্যায়বিচার রক্ষার একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। চীন সমতা ও বহুপক্ষবাদ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে আসছে।বিশ্বের নানা দেশকে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় নিজের অবস্থান খুঁজে নেওয়ার আহ্বান জানায় চীন। চীন মনে করে বিশ্বের বহুপক্ষবাদ সমতাসম্পন্ন হওয়া উচিত এবং বহুপক্ষবাদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নানা দেশের মধ্যে একতা, সংলাপ, সহযোগিতা, যৌথভাবে জয়ী হওয়া উচিত। বিভেদ, সংঘাত ও একযোগে হেরে যাওয়া উচিত নয়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিভিন্ন দেশের উচিত জাতিসংঘ সনদ ও নীতি মেনে চলা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ করা এবং একযোগে প্রকৃত বহুপক্ষবাদ বাস্তবায়ন করা।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যত পরিবর্তন হোক-না-কেন, চীন সবসময় ইতিহাসের সঠিক পক্ষে দাঁড়ায় এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকে। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী, বিশ্ব উন্নয়নে অবদানকারী ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষাকারী হিসেবে চীন দৃঢ়ভাবে ইতিবাচক কাজ করবে। ন্যায়বিচার রক্ষা করা এবং প্রকৃত বহুপক্ষবাদে অবিচল থাকবে চীন। জাতিসংঘের ভূমিকা রক্ষা করা, বিশ্ব শাসনের কাঠামো আরও কার্যকর দিকে এগিয়ে নেওয়া ও সমতা ও সুশৃঙ্খল বিশ্বের বহুপক্ষবাদ নির্মাণে চীন অবশ্যই অবদান রাখবে।
(আকাশ/তৌহিদ/জিনিয়া)