অগাস্ট ১৩: ১৯ দিনব্যাপী ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিক গেমস ১১ অগাস্ট শেষ হয়েছে। চীনা ক্রীড়া প্রতিনিধি দল এতে মোট ৪০টি স্বর্ণপদক, ২৭টি রৌপ্যপদক এবং ২৪টি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। যা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এটা হলো চীনা ক্রীড়া চেতনা ও অলিম্পিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী তার জনপ্রিয়তাও অনেক উঁচু।
চীনা ক্রীড়া প্রতিনিধি দলের এ ১৯ দিনের অলিম্পিক যাত্রাকে একটি মৌলিক কথা দিয়ে চিহ্নিত করা যায়। তা হলো ‘রেকর্ড সৃষ্টি’। চীনের ডাইভিং দল প্রথমবারের মতো এ ইভেন্টের সবগুলো অর্থাৎ, ৮টি স্বর্ণ জয় করেছে। চীনের টেবিল টেনিস দল প্রথমবার এই ইভেন্টের সবগুলো অর্থাৎ ৫টি স্বর্ণ অর্জন করেছে। চীনের ভারোত্তোলন দল ৫টি স্বর্ণপদক জয় করেছে। দেশের শুটিং দলও একটি নতুন ঐতিহাসিক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে…চীনের ঐতিহ্যবাহী ৬টি শক্তিশালী ইভেন্টে মোট ২৭টি স্বর্ণপদক অর্জিত হয়েছে দেশের খেলোয়াড়দের মাধ্যমে। যা মোট স্বর্ণপদকের ৬৭.৫ শতাংশ।
এ ছাড়া, চীনা ক্রীড়া প্রতিনিধি দল একাধিক ইভেন্টেও নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। প্রথমবার নারী টেনিসের স্বর্ণপদক জয় করেছে; পুরুষদের ৪০০ মিটার সাঁতার রিলে প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয় করেছে। এ ইভেন্টে ৪০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষস্থানে ছিল; সিংক্রোনাইজড সাঁতার, রিদমিক জিমন্যাস্টিকস, ফ্রি-স্টাইল বিএমএক্স-সহ একাধিক ইভেন্টে প্রথমবারের মতো স্বর্ণপদক পেয়েছে চীন। ‘আরো দ্রুত, আরো উঁচু, আরো শক্তিশালী,একসংগে’ অলিম্পিক চেতনার আলোকে, চীনা ক্রীড়া প্রতিনিধি দল অলিম্পিক আন্দোলনে নতুন প্রাণশক্তি যুগিয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকখোঁ সিএমজিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, একাধিক ইভেন্টে চীন যে সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে প্রমাণ হয় যে, চীনের উচ্চ মানের খেলোয়াড় উন্নয়নের সক্ষমতা আছে। পাশাপাশি, মানুষকে তা অনুপ্রাণিত করতে পারে। ‘অবিশ্বাস্য’, ‘বিস্ময়কর’…আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে, নেটিজেনরাও চীনা ক্রীড়াবিদের পারফরমেন্সের দারুণ প্রশংসা করেছেন।
চীনা খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেক তরুণ-তরুণীর চেহারা বিশ্ববাসীদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তরুণ খেলোয়াড়রা ইতোমধ্যে চীনা খেলোয়াড়দের ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে। তাদের থেকে বিশ্ববাসী চীনা তরুণদের আত্ববিশ্বাস, উন্মুক্ত মন, ইতিবাচক ও আশাবাদী চেতনা ও মনোভাব দেখতে পারেন।
ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার এক সংবাদে বলা হয়, একটি দেশের ক্রীড়ার সাফল্যের পিছনে, সে দেশের ব্যাপক সুবিধা দেখা যায়।’ চীনের ক্রীড়ার উচ্চ মানের কারণ কি? অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এর পেছনে চীনের সার্বিক জাতীয় শক্তির অব্যাহত উন্নতি-সহ একাধিক কারণ আছে। আসলে সব সাফল্য অর্জন সহজ নয়। এসব উপাদানের কারণে, এবারের প্যারিস অলিম্পিক গেমসে চীনা খেলোয়াড়রা ভালো খেলা দেখাতে পেরেছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চ মানের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মঞ্চ হিসেবে, প্রতিযোগিতা ছাড়া ,অলিম্পিক গেমসের আরও বেশি চেতনা রয়েছে। তা হলো ‘একতা ও বন্ধুত্বের প্রতীক, সভ্যাতাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শিক্ষার একটি মডেল’। যা মানবজাতির শান্তি, একতা, উন্নতি বাস্তবায়নের সুন্দর ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ।
বিশ্বের জন্য, অলিম্পিক গেমস হচ্ছে চীনের উন্নয়ন ও পরিবর্তন প্রকাশ করার একটি জানালা। ১৯৮৪সালে চীনের ক্রীড়া প্রতিনিধি দল প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয় করেন। এরপর থেকে ২০২৪ সালে চীনা খেলোয়াড় দল অলিম্পিক গেমসের স্বর্ণপদক জয়ে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে। এই ৪০ বছরে, অলিম্পিক গেমস প্রত্যক্ষ করেছে চীনের ক্রীড়ার অগ্রগতি, দেশের সার্বিক জাতীয় শক্তির অব্যাহত উন্নতি এবং অলিম্পিক আন্দোলন উন্নয়নে চীনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ভবিষ্যতের ক্রীড়া মাঠে, অলিম্পিক চেতনা প্রচার, বিশ্বের শান্তি ও একতা এগিয়ে নেওয়ার জন্য চীন আরও চেষ্টা করবে এবং মানবসভ্যতার অগ্রগতির জন্য চীন আরও মেধা ও শক্তি দিয়ে অবদান রাখবে।
(আকাশ/তৌহিদ/জিনিয়া)